E-Paper

আলাস্কা বৈঠকের পর জিএসটি ছাঁটাইয়ের দিকে নজর, অপেক্ষায় বাজার

পরের বৈঠক রাশিয়ায় করতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আজ ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনেস্কির বৈঠক হওয়ার কথা।

অমিতাভ গুহ সরকার

শেষ আপডেট: ১৮ অগস্ট ২০২৫ ০৮:০৩
স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী জিএসটি কমানোর বার্তা দিয়েছেন।

স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী জিএসটি কমানোর বার্তা দিয়েছেন। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ট্রাম্প-পুতিনের বৈঠক সফল হয়নি। তবে একেবারে বিফল হয়েছে, এমন কথাও শক্তিধর দুই দেশের শীর্ষ নেতারা বলছেন না। বরং দাবি করছেন, আলোচনা এগিয়েছে। যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত না হলেও, কিছু বিষয়ে সহমত হয়েছেন। আরও কথা হতে পারে। পরের বৈঠক রাশিয়ায় করতে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। আজ ট্রাম্প এবং ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনেস্কির বৈঠক হওয়ার কথা। অর্থাৎ আশার আলো নিভে যায়নি।

আলাস্কা বৈঠকের ফল জানতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছিল ভারতের অর্থ মন্ত্রক এবং শেয়ার বাজার। ট্রাম্প আগেই হুমকি দিয়েছেন, রাশিয়ার সঙ্গে আলোচনা ব্যর্থ হলে ভারতের উপর শুল্ক ৫০% ছাপিয়ে আরও বাড়তে পারে। বৈঠকের পরে অবশ্য তাঁর সুর কিছুটা নরম। তবে বিভিন্ন সময়ে ট্রাম্পের বলা কথায় তেমন সঙ্গতি থাকে না। ফলে তিনি ঠিক কি বলতে চাইছেন, বোঝা শক্ত। রাশিয়া থেকে তেল কেনার জন্যে চাপানো অতিরিক্ত ২৫% শুল্ক ফেরত নেন কি না, সেটাই দেখার। আগামী ২৭ অগস্ট থেকে যা লাগু হওয়ার কথা। ভারতীয় মহল এই ব্যাপারে আশাবাদী। মনে করা হচ্ছে, আলাস্কা বৈঠকের পরিণামে শেয়ার বাজারও খুশি হতে পারে। তবে শুল্কের ব্যাপারে খারাপটা ধরেই ভারত সরকার এবং শিল্প মহল তৈরি হচ্ছে। বিকল্প বাজার তৈরির চেষ্টা হচ্ছে বেশ কিছু দেশে।

স্বাধীনতা দিবসে প্রধানমন্ত্রী জিএসটি কমানোর বার্তা দিয়েছেন। অনিশ্চয়তার মধ্যে তাই রুপোলি রেখা দেখছে বাজার। দিওয়ালির সময় আসবে সংস্কার। অর্থ মন্ত্রক সূত্রে খবর, বর্তমানে চালু চারটি হারকে (৫%, ১২%, ১৮%, ২৮%) কমিয়ে দু’টি (৫% এবং ১৮%) করা হবে। ক্ষতিকারক কিছু পণ্যে চাপতে পারে ৪০%। প্রস্তাব কার্যকর হলে ২৮% করের আওতা থেকে অনেক পণ্য ১৮ শতাংশে আসবে। সিমেন্ট, বড় মাপের টিভি, এসি, গাড়ি ইত্যাদির কর কমলে দাম নামবে। ফলে চাহিদা মাথা তুলবে। জিএসটি কমতে পারে বিমার প্রিমিয়ামেও। যদিও এতে দুর্গা পুজো, নবরাত্রির কেনাকাটা কমার আশঙ্কা। কারণ, অনেকেই দাম কমার জন্য অপেক্ষা করবেন। বস্তুত, গত বছরের পুজো থেকেই ভারতীয় অর্থনীতিতে ঝিমুনি ভাব। চাহিদা কমেছে অনেক পণ্যের। তাতে মাথা নামিয়েছে মূল্যবৃদ্ধি। আয়কর এবং সুদ কমানো সত্ত্বেও দেশের বাজারে চাহিদা তেমন বাড়েনি। হালে চেপেছে ট্রাম্প-শুল্ক।যা বেশ কিছু পণ্যের রফতানি কমানোয় দেশে বিক্রির চাপ বাড়বে। এর জন্য জরুরি মানুষের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধির। জিএসটি কমলে ক্রেতার হাতে কিছুটা বেশি নগদ থাকবে। যে কারণে বাড়তে পারে চাহিদা।

বাজারের জন্যে আর একটি বড় খবর, ভারতের মূল্যায়ন (ক্রেডিট রেটিং) বৃদ্ধি। এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল তা ‘BBB-’ থেকে এক ধাপ বাড়িয়ে ‘BBB’ করেছে। ফলে অপেক্ষাকৃত কম সুদে ভারত বিদেশ থেকে ঋণ পাবে। মূল্যায়ন বেড়েছে দেশের প্রথম সারির বেশ কয়েকটি ব্যাঙ্কেরও।

গত এপ্রিল-জুনে বিভিন্ন সংস্থার আর্থিক ফল মিশ্র। তবে বাজারে তেমন উত্তেজনা না থাকলেও, একের পর এক সংস্থা প্রথম বার শেয়ার ছেড়ে টাকা তুলছে (আইপিও)। জুনে একুইটি ফান্ডে (শেয়ার ভিত্তিক) লগ্নি হয়েছিল ২৩,৫৮৭ কোটি টাকা, জুলাইয়ে ছুঁয়েছে ৪২,৭০২ কোটি। নজির গড়ে এসআইপিতে লগ্নি ১০০০ কোটিরও বেশি বেড়ে পৌছঁছে ২৮,৪৬৪ কোটি টাকায়। এই সব তথ্য ইঙ্গিত দেয় নানা অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও শেয়ার বাজারের উপরে মানুষের আস্থা অটুট।

(মতামত ব্যক্তিগত)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

GST Russia Ukraine War USA

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy