ভারতীয় পণ্যে আমেরিকার ২৫% শুল্ক চাপানোর পদক্ষেপে এখনই হতাশ হওয়ার কিছু নেই বলে মনে করছেন রফতানি বিশেষজ্ঞদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, শুল্কের পাশাপাশি জরিমানাও চাপবে। কিন্তু সব মিলিয়ে কত, খোলসা হয়নি। তাই ঘোষিত শুল্কের হারই যে শেষ পর্যন্ত বজায় থাকবে, তা বলা যাচ্ছে না। বিশেষত বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে যেহেতু আলোচনা চলছে। অনেকেরই দাবি, আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবরের মধ্যে তা চূড়ান্ত হলে আখেরে ভারতের রফতানি বাণিজ্য উপকৃতও হতে পারে।
রফতানিকারীদের সংগঠন ফিও-র ডিজি অজয় সহায় বৃহস্পতিবার বলেন, ‘‘শুল্ক-জরিমানা মিলে মোট হার ঘোষণা হলে বোঝা যাবে ভারতীয় পণ্য আমেরিকায় পাঠানোর উপর ঠিক কতটা প্রভাব পড়বে।’’ তবে একই সঙ্গে তিনি বলছেন, ‘‘সব রফতানি পণ্য মার না-ও খেতে পারে। প্রতিদ্বন্দ্বী দেশগুলির শুল্কের হার দেখতে হবে। যেমন, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং চিনে তা ৩০-৪০ শতাংশ। ফলে ভারত তাদের থেকে এগিয়ে।’’
সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের অবশ্য আশঙ্কা, আজ থেকে শুল্ক বসলেই রফতানিকারীদের উপর বিরূপ প্রভাব পড়বে। ভারতের বৃহত্তম বাণিজ্য সহযোগী আমেরিকা। বিপুল সোনার গয়না, কাটা এবং পালিশ করা হিরে, ওষুধ, ওষুধ তৈরির সামগ্রী, বৈদ্যুতিন পণ্য ইত্যাদি যায়। সেগুলি দামি হয়ে যাবে। ফলে সংস্থাকে বাজার হারাতে হতে পারে। যেমন, জেম অ্যান্ড জুয়েলারি এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিলের পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান পঙ্কজ পারেখের দাবি, ‘‘সোনার গয়নার উপর শুল্ক ছিল ৬.৫%। হিরের উপর কোনও শুল্কই ছিল না। এখন সব ক্ষেত্রে ২৫%। ফলে সেগুলির রফতানি মার খেতে পারে।’’
চিন্তিত ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্পও। তাদের সংগঠন ফসমির সভাপতি বিশ্বনাথ ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ‘‘রফতানি কমবে বস্ত্র, হস্তশিল্প, ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্য, রাসায়নিক সামগ্রী ইত্যাদির। যেগুলির বড় অংশ তৈরি করে ছোট সংস্থাগুলি। অনেককে ঝাঁপ বন্ধ করতে হতে পারে। কাজ হারাতে পারেন বহু মানুষ।ইঞ্জিনিয়ারিং এক্সপোর্ট প্রোমোশন কাউন্সিল ইন্ডিয়ার প্রাক্তন চেয়ারম্যান অরুণ গারোদিয়া বলেন, ইঞ্জিনিয়ারিং পণ্যে কী সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তার দিকেই তাকিয়ে সংশ্লিষ্ট শিল্পগুলি। এ দিকে শুল্কের হার বাড়ায় আমেরিকার আমদানিকারীরা ভারতীয় রফতানিকারীদের বরাত দেওয়া বন্ধ রাখতে বলেছে। অনেকে তা ইতিমধ্যেই বাতিল করেছে। চিন্তায় প্লাস্টিকজাত পণ্য সংস্থাগুলি। ভিয়েতনাম, তাইল্যান্ডের কাছে বাজার হারানোর আশঙ্কা।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)