পাকিস্তানের সঙ্গে ‘যুদ্ধ’ থামতেই প্রতিরক্ষা স্টকের মেগা পতন। হু-হু করে কমছে অস্ত্র নির্মাণকারী সংস্থাগুলির শেয়ারের দাম। তালিকায় রয়েছে কোচিন শিপইয়ার্ড, গার্ডেনরিচ শিপইয়ার্ড, হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (হ্যাল) বা পারস ডিফেন্সের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত এবং বেসরকারি সংস্থা। মঙ্গলবার, ২০ মে সেই ছবি অব্যাহত থাকায় মাথায় হাত পড়েছে লগ্নিকারীদের। এই নিয়ে টানা দু’দিন নিম্নমুখী থাকল প্রতিরক্ষা সংস্থাগুলির স্টকের সূচক।
ব্রোকারেজ ফার্মগুলির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এ দিন কোচিন শিপইয়ার্ডের শেয়ারের দাম ৮.২৬ শতাংশ কমে ১,৮১৮.৫০ টাকায় নেমে এসেছে। অন্যদিকে আইডিয়াফোর্জের স্টকে ৫.৪৩ শতাংশের পতন দেখা গিয়েছে। প্রায় ৩২ টাকা কমে বর্তমানে এই সংস্থার শেয়ারের দাম ৫৪০.২০ টাকায় ঘোরাফেরা করছে। পাশাপাশি, গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্স এবং মাজ়গাঁও ডকরে স্টকের দাম কমেছে যথাক্রমে ৩.৫৩ এবং ২.৪০ শতাংশ। এই দুই সংস্থার শেয়ার কিনতে খরচ হবে ২,৩৯৫.২০ টাকা ও ৩,৩২৮ টাকা।
একই ছবি দেখা গিয়েছে হ্যালের ক্ষেত্রেও। যুদ্ধবিমান নির্মাণকারী রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাটির শেয়ারের দাম কমেছে ৩.২৪ শতাংশ। ফলে হ্যালের প্রতিটি শেয়ারের দাম ৩,৮৫৪ টাকায় নেমে গিয়েছে। সোমবার অর্থাৎ ১৯ মে থেকে সংশ্লিষ্ট সংস্থাটির স্টকের দাম নিম্নমুখী হওয়ায়, সব মিলিয়ে দু’দিনে প্রতিরক্ষায় শেয়ারে প্রায় চার শতাংশ পর্যন্ত পতন দেখা গিয়েছে।
‘অপারেশন সিঁদুর’ এবং তাকে কেন্দ্র করে চলা ‘যুদ্ধে’ দেশীয় সংস্থাগুলির তৈরি একাধিক ভারতীয় হাতিয়ার দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির স্টকের সূচক রকেট গতিতে বাড়তে শুরু করে। ৯ থেকে ১৭ মে পর্যন্ত কোচিন শিপইয়ার্ড এবং গার্ডেনরিচ শিপবিল্ডার্সের যথাক্রমে ৪১ এবং ৪০ শতাংশের বৃদ্ধি দেখা যায়। এই সময়সীমার মধ্যে আইডিয়াফোর্ড এবং হ্যালের শেয়ারের দাম বেড়েছে ৫৬ এবং ১৬ শতাংশ।
কিন্তু, ১০ মে যুদ্ধবিরতির হওয়ার পর থেকে দুই প্রতিবেশী দেশের মধ্যে সংঘাতের তীব্রতা ধীরে ধীরে কমেছে। সংঘর্ষবিরতি ভেঙে নতুন করে লড়াইতে জড়িয়ে পড়েনি দু’পক্ষ। বিশ্লেষকদের দাবি, এর জেরে প্রতিরক্ষা স্টকের দর কিছুটা নেমেছে। লগ্নিকারীদের একাংশ এই শেয়ারগুলি বিক্রি করে মুনাফা তুলে নিচ্ছেন। সূচক নিম্নমুখী হওয়ার নেপথ্যে একেও অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন:
পারস ডিফেন্স অ্যান্ড স্পেস টেকনোলজিসের আবার শেয়ারের দর কমার নেপথ্যে অন্য কারণ রয়েছে। এই সংস্থার প্রোমোটারেরা বাল্ক ডিলের মাধ্যমে কোম্পানির ৩.৩ শতাংশ স্টক বিক্রি করে দিয়েছেন। এর ফলে স্টকের সূচক ৬.৫৮ শতাংশ নেমে গিয়েছে। গত মাসে শেয়ারটির দাম প্রায় ৫৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। বর্তমানে পারসের স্টক কিনতে হলে লগ্নিকারীদের ১,৫৯৫.৫০ টাকা খরচ করতে হবে।
(বিশেষ দ্রষ্টব্য: শেয়ার বাজারে লগ্নি বাজারগত ঝুঁকি সাপেক্ষ। আর তাই বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনেই স্টকে বিনিয়োগ করুন। এতে আর্থিক ভাবে লোকসান হলে আনন্দবাজার ডট কম কর্তৃপক্ষ কোনও ভাবেই দায়ী নয়।)