চাকরির বাজার ইতিমধ্যেই দখল করতে শুরু করেছে এআই। তীব্র হয়েছে ছাঁটাইয়ের আশঙ্কা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে কাজ করিয়ে নেওয়া সম্ভব বলে বহু সংস্থাই কর্মী সঙ্কোচনের পথে হাঁটছে। সেই পথে হেঁটে দু’বছর আগে কর্মীর বদলে এআইকে দিয়ে কাজ করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সুইডেনের সংস্থা। দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কর্মীর সংখ্যা কমিয়ে এআই-এর শরণাপন্ন হয়েছিল ‘ক্লারনা’ নামের ফিনটেক সংস্থাটি। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে সংস্থার সিইও সেবাস্টিয়ান সিমিয়াটকোস্কি স্বীকার করেছেন যে, এআইয়ের অতিরিক্ত সাহায্য নেওয়া তাঁদের ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার কাজে অসন্তুষ্ট সংস্থা। এ আইয়ের দক্ষতাকে ‘নিম্নমানের’ বলে আখ্যা দিয়েছে ‘ক্লারনা’। এই অবস্থায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নয়, মানুষের বুদ্ধিতেই আস্থা ফিরিয়েছে ‘ক্লারনা’। নতুন করে বৃহৎ পরিসরে কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। সংস্থার উপলব্ধি, চ্যাটবট মানুষের স্থান দখল করতে পারবে না।
২০২৩ সালে সংস্থাটি কর্মী নিয়োগ সম্পূর্ণ ভাবে বন্ধ করে দেয়। ওপেন এআইয়ের সঙ্গে গাঁটছড়া বাঁধার পর ‘ক্লারনা’ প্রায় ৭০০ কর্মচারীকে ছাঁটাই করে। এই সিদ্ধান্তের কারণ ছিল পরিষেবা উন্নত করা এবং সংস্থার খরচ কমানো। অনুবাদ, তথ্য বিশ্লেষণের মতো কাজগুলি পরিচালনা করার জন্য ‘ক্লারনা’ ‘জেনারেটিভ এআই’-এর উপর ব্যাপক ভাবে নির্ভর করতে শুরু করে। ২০২৪ সালে সিইও সর্বসমক্ষে ঘোষণা করেছিলেন, ‘‘মানুষ হিসাবে আমরা যা করি, এআই ইতিমধ্যেই সেই সমস্ত কাজ করতে পারে।’’ ‘ক্লারনা’ সেই সময়ে দাবি করেছিল যে, তাদের এআই গ্রাহক পরিষেবা ৭০০ জন কর্মীর সমতুল্য কাজ করছে।
মাত্র এক বছরে সেই ঘোষণা থেকে ১৮০ ডিগ্রি ঘুরে গিয়েছে এই সুইডিশ সংস্থাটি। সম্প্রতি সংস্থাটি স্বীকার করেছে, পরিষেবার মানের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা। খরচ কমানোর বিষয়টিকে তারা অত্যধিক গুরুত্ব দিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন সেবাস্টিয়ান। সেই সিদ্ধান্ত গ্রাহকের কাছে সংস্থার ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ব্র্যান্ড বাঁচাতে গ্রাহক পরিষেবায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে সরিয়ে কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা করছে বলে জানা গিয়েছে। ‘ক্লারনা’ গ্রামীণ এলাকার শিক্ষার্থী এবং চাকরিপ্রার্থীদের কথা মাথায় রেখে প্রত্যন্ত অঞ্চলে কর্মী নিয়োগের পরিকল্পনা করছে।