—ফাইল চিত্র।
আগামী ৮ জুন থেকে শপিং মল-সহ বিভিন্ন বিপণন কেন্দ্র, রেস্তরাঁ খোলার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র। স্বাভাবিক ভাবেই এই সিদ্ধান্তে খুশি সংশ্লিষ্ট মহলের প্রায় সকলেই। বিশেষত রাজ্যেও শুধু কনটেনমেন্ট এ জ়োন ছাড়া সর্বত্র দরজা খোলার সবুজ সঙ্কেত মেলায়। সেই মার্চে দেশে লকডাউন জারির পরে তালা ঝুলেছে যাদের ব্যবসায়। রাজ্যের বিভিন্ন শপিং মলের কর্তারা জানাচ্ছেন, টিকে থাকাই চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিল। করোনা ভীতিতে কত জন মল বা রেস্তরাঁমুখো হবেন, প্রশ্ন থাকছেই। তবে অন্তত ব্যবসার পথটুকু তো পাওয়া গেল।
বণিকসভাগুলির মতে, সংক্রমণ রুখতে অত্যন্ত সতর্ক ভাবে স্বাস্থ্যবিধি মানা জরুরি ঠিকই। কিন্তু সেই সঙ্গে সমস্ত সাবধানতা অবলম্বন করে ধাপে ধাপে আর্থিক কর্মকাণ্ড শুরু করাও প্রয়োজন। না-হলে ধাক্কা খাওয়া রুজি-রোজগারের ছবিটা আরও ভয়ঙ্কর হবে। তবে কেন্দ্র বার বন্ধ রেখে শুধু রেস্তরাঁ খুলতে বলায় অখুশি হোটেল অ্যান্ড রেস্টর্যান্ট অ্যাসোসিয়েশন অব ইস্টার্ন ইন্ডিয়া (এইচআরএইআই)। তাদের দাবি, এই সিদ্ধান্ত ব্যবসায়িক ভাবে লাভজনক হবে না। এতদিন থমকে থাকা কারবারের তালা খুলতে যে লাভের নিশ্চয়তা ছাড়া গতি নেই।
লকডাউনের মধ্যে ধাপে ধাপে কিছু ব্যবসা চালু হলেও, প্রচুর মানুষের আসার আশঙ্কা থাকায় নিষেধাজ্ঞা ছিল মল খোলায়। যদিও সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিয়ে সেখানে অত্যাবশ্যক পণ্যের বিপণিগুলি খোলা রয়েছে। শপিং সেন্টার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া ও রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়া মল খোলার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। তাদের বক্তব্য, এতে সংস্থাগুলির ঘাড়ে চেপে বসা বিপুল আর্থিক বোঝা কিছুটা হালকা হবে। অ্যাক্রোপলিস, কোয়েস্ট, সাউথ সিটি, লেক মলের মতো কলকাতার বিভিন্ন মলের কর্তাদের অনেকেই বলছেন, তাঁরাও মল খুলতে আগ্রহী। দাবি, যথেষ্ট সতর্কতা বিধি মেনেই খোলা হবে সমস্ত বিপণি।
বস্তুত, করোনা মোকাবিলায় লকডাউনের প্রয়োজনীয়তা মানলেও, আর্থিক ক্ষতির বিষয়টি তুলেছেন শিল্পকর্তারা। ২০১৯-২০ সালে দেশে বৃদ্ধির হার নেমেছে ১১ বছরে তলানিতে। জানুয়ারি-মার্চ ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি ৪০টি ত্রৈমাসিকে সব থেকে কম। যে কারণে স্টেট ব্যাঙ্কের গবেষণা শাখা ইকোর্যাপ মনে করছে, বৃদ্ধির হারের আরও তলিয়ে যাওয়া রুখতে ভারতে লকডাউন থেকে বেরোনোর সঠিক কৌশল ছকতে হবে খুব বুদ্ধি করে।
বণিকসভা সিআইআইয়ের পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান অভিজিৎ রায় ও ফিকির পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান রুদ্র চট্টোপাধ্যায়ও প্রয়োজনীয় সতর্কতা নিয়ে ধাপে ধাপে আর্থিক কর্মকাণ্ড চালুর পক্ষে। রুদ্র বলেন, ‘‘ভারসাম্যের নীতি জরুরি। স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়টি যেমন চালিয়ে যেতে হবে, তেমনই কাজকর্মও পুরোপুরি বন্ধ রাখা যাবে না।’’ অভিজিতবাবুর মতে, প্রাথমিক লক্ষ্য ছিল করোনা সংক্রমণ ঠেকানো। তাতে সাড়া মিলেছে। এ বার আর্থিক বিষয়টিতে মনোযোগ দেওয়া দরকার।
তবে এইচআরএইআইয়ের সেক্রেটারি সুদেশ পোদ্দারের প্রশ্ন, ‘‘সতর্কতা বিধি মেনে বার-ই বা খোলা যাবে না কেন? ব্যবসা তলানিতে। প্রায় ২৫% কর্মী ছাঁটাই করতে হয়েছে। বার চালু না-হলে এই ধরনের বহু রেস্তরাঁই খুলবে না। সঙ্কট আরও বাড়বে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy