Advertisement
E-Paper

শিল্পোৎপাদন কমলো ৩.২%, আরও বাড়ল খুচরো দর

শেয়ার সূচক নিম্নমুখী। টাকার দাম তলানিতে। এরই মধ্যে অর্থনীতি ঘিরে দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে কমে গেল শিল্পে উৎপাদন, বাড়ল খুচরো বাজার দর। যাকে অর্থনীতিতে জোড়া ধাক্কা হিসেবেই দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ জানুয়ারি ২০১৬ ০২:২৮

শেয়ার সূচক নিম্নমুখী। টাকার দাম তলানিতে। এরই মধ্যে অর্থনীতি ঘিরে দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে কমে গেল শিল্পে উৎপাদন, বাড়ল খুচরো বাজার দর। যাকে অর্থনীতিতে জোড়া ধাক্কা হিসেবেই দেখছেন অর্থনীতিবিদরা।

আজ কেন্দ্র প্রকাশিত পরিসংখ্যান জানিয়েছে, গত নভেম্বরে শিল্পোৎপাদন বাড়া তো দূরের কথা, তা সঙ্কুচিত হয়েছে ৩.২%। প্রধান কারণ, কারখানার ও মূলধনী পণ্যের উৎপাদন কমা। অথচ অক্টোবরে তা বেড়েছিল ৯.৯%। অন্য দিকে ডিসেম্বরে খুচরো বাজারে দাম বেড়েছে ৫.৬১%। এই নিয়ে টানা ৫ মাস খুচরো পণ্যের দাম বাড়ল। গত কয়েক মাসে ডালের দাম আমজনতার দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ডিসেম্বরের হিসেব বলছে, ডাল ৪৫.৯২% বেড়েছে। সাধারণ ভাবে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ৬.৪০%।

এমনিতেই মঙ্গলবার ডলারের সাপেক্ষে টাকার দর পড়েছে। এক ডলার হয়েছে ৬৬.৮৭ টাকা। ফলে চলতি অর্থবর্ষে এ পর্যন্ত ভারতীয় মুদ্রার মোট পতন দাঁড়াল ৬.৫৪%। পাশাপাশি, চিনের অর্থনীতি নিয়ে দুশ্চিন্তা ও অশোধিত তেলের দাম কমায় শেয়ার সূচকও ছিল নিম্নমুখী। তার উপর শিল্পে উৎপাদন ও খুচরো বাজার দরের ছবিটা নেতিবাচক হতে পারে, সেই আশঙ্কায় শেয়ার সূচক এ দিন আরও নামে। আজ সেনসেক্স ১৪৩ পয়েন্ট কমে ২৪,৬৮২.০৩ অঙ্কে থিতু হয়েছে। নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পরে ‘অচ্ছে দিন’-এর আশায় বাজার যেখানে উঠে গিয়েছিল, আজকের পতনের পরে সূচক তার সবটাই মুছে ফেলল। তবে এ দিন অর্থনীতির ওই জোড়া হিসাব প্রকাশিত হয় শেয়ার বাজারের ঝাঁপ বন্ধ হওয়ার পরে। ফলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, বাজারে পুরো প্রভাব পড়বে আগামী কাল।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি ইতিমধ্যেই আগামী বছরের বাজেট প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন। শিল্পমহল বা অন্যান্য ক্ষেত্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনায় তিনি রোজই বোঝানোর চেষ্টা করছেন, বৃদ্ধির হিসেবে ভারত বিশ্বে প্রথম সারিতে। অর্থনীতির হাল শোধরাচ্ছে। গত অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হার ৭.৩% ছিল। বিশ্ব বাজারে ডামাডোল ও অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও চলতি অর্থবর্ষের প্রথমার্ধে বৃদ্ধির হার খুবই ভাল ছিল। কিন্তু আজকের পরিসংখ্যানে ধরা পড়া শিল্পের এই অধোগতি চিন্তায় রাখছে অর্থ মন্ত্রককে। কারণ সামগ্রিক ভাবে শিল্পে উৎপাদন কমেছে, যার মধ্যে কারখানার উৎপাদন কমেছে ৪.৪%। মূলধনী পণ্য ২৫%। অর্থনীতিবিদদের মত, শিল্পোৎপাদনের এই ওঠানামা থেকে বোঝা যাচ্ছে অর্থনীতির হাল শোধরানোর স্পষ্ট ইঙ্গিত এখনও অধরা।

সব থেকে বড় চিন্তা, কারখানার উৎপাদনের মধ্যে রোজকার ব্যবহারের পণ্যের (কনজিউমার নন-ডিউরেবল) উৎপাদন ৪.৭% কমা। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এর অর্থ, গ্রামের অর্থনীতিতে মন্দা চলছে, চাহিদা তলানিতে। তাঁদের বক্তব্য, শিল্পোৎপাদন অক্টোবরে ৯.৯% বাড়লেও এ বার যে চেন্নাইয়ে বন্যার কারণে উৎপাদন বৃদ্ধির হার কমবে, তা জানাই ছিল। কিন্তু উৎপাদন সরাসরি কমে যাবে ভাবা যায়নি। এর আগে অর্থ মন্ত্রক নিজেই চলতি অর্থবর্ষে বৃদ্ধির হারের পূর্বাভাস ৮.১-৮.৫% থেকে কমিয়ে ৭-৭.৫% করেছে। এ বার তা আরও কমবে কি না, সেই প্রশ্ন উঠেছে। মন্ত্রকের পাল্টা যুক্তি, আগের বছর নভেম্বরে শিল্পের ছবিটা ভাল ছিল বলেই সেই তুলনায় এই নভেম্বরের চিত্রটা খারাপ দেখাচ্ছে।

খুচরো পণ্যের মূল্যবৃদ্ধির ক্ষেত্রে অবশ্য সরকারের দুশ্চিন্তা থেকেই যাচ্ছে। কারণ খাদ্যপণ্যের দাম বাড়ার ফলে গত অগস্ট থেকেই খুচরো মূল্যবৃদ্ধি উপরের দিকে। ২ ফেব্রুয়ারি সুদ নীতির পর্যালোচনায় বৈঠকে বসবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। এই পরিপ্রেক্ষিতে তারা সুদ কমানোর পথে হাঁটবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে শিল্পমহল।

business news industrial production
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy