Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

দেশের পরিকাঠামো শিল্পে উৎপাদন বাড়ল ৫ শতাংশ

সরকার ও শিল্পমহলকে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে সেপ্টেম্বরে দেশে আটটি পরিকাঠামো শিল্পে উৎপাদন বাড়ল ৫ শতাংশ হারে, গত তিন মাসে যা সবচেয়ে বেশি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:২৩
Share: Save:

সরকার ও শিল্পমহলকে কিছুটা স্বস্তি দিয়ে সেপ্টেম্বরে দেশে আটটি পরিকাঠামো শিল্পে উৎপাদন বাড়ল ৫ শতাংশ হারে, গত তিন মাসে যা সবচেয়ে বেশি। মূলত সিমেন্ট, ইস্পাত ও শোধনাগারের পণ্য উৎপাদন উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ার হাত ধরেই পরিকাঠামো শিল্প এতটা চাঙ্গা হয়েছে বলে সোমবার প্রকাশিত সরকারি পরিসংখ্যানে জানানো হয়েছে।

এই আটটি পরিকাঠামো শিল্পের তালিকায় রয়েছে: কয়লা, অশোধিত তেল, প্রাকৃতিক গ্যাস, শোধনাগারে তৈরি পণ্য, সার, ইস্পাত, সিমেন্ট, বিদ্যুৎ। অর্থনীতির চাকা এগিয়ে নিয়ে যেতে অপরিহার্য এই সব মূল শিল্পে অগস্টে বৃদ্ধির হার ছিল ৩.২ শতাংশ। সরকারি তথ্য অনুযায়ী গত বছরের সেপ্টেম্বরে তা ছিল ৩.৭ শতাংশ। আর, চলতি ২০১৬-’১৭ অর্থবর্ষের এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরের হিসেবে তা ছুঁয়েছে ৪.৬ শতাংশ। গত অর্থবর্ষের একই সময়ে তা ছিল অনেকটাই কম ২.৬ শতাংশ।

এ বছর সেপ্টেম্বরে পরিকাঠামো শিল্পের হাল ফিরিয়েছে সিমেন্ট শিল্পে ৫.৫ শতাংশ, ইস্পাতে ১৬.৩ শতাংশ এবং তেল শোধনে ৯.৩ শতাংশ হারে উৎপাদন বৃদ্ধি। সার এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনে বৃদ্ধির হার কমে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ২ শতাংশ এবং ২.২ শতাংশ। ২০১৫-র সেপ্টেম্বরের হার ছিল ১৮.৩ শতাংশ ও ১১.৪ শতাংশ। তবে কয়লা, অশোধিত তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদন এ বার সরাসরি কমেছে যথাক্রমে ৫.৮ শতাংশ, ৪.১ শতাংশ ও ৫.৫ শতাংশ।

কল-কারখানায় উৎপাদন কতটা বেড়েছে, তা হিসেব করার জন্য এই আটটি শিল্পের গুরুত্ব ৩৮ শতাংশ। ফলে পরিকাঠামো শিল্প চাঙ্গা হওয়ার প্রভাব সার্বিক শিল্প বৃদ্ধির হারে পড়বে বলেই আশাবাদী অর্থনীতিবিদরা। আর্থিক বৃদ্ধিকে টেনে তুলতে যা সাহায্য করবে বলে মনে করছে কেন্দ্রের নরেন্দ্র মোদী সরকারও।

বেসরকারি লগ্নি টানতে নতুন পিপিপি মডেলের প্রস্তাব। ভারতে আর্থিক বৃদ্ধির সঙ্গে তাল মিলিয়ে পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বেসরকারি লগ্নি বাড়ছে না। অথচ সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগ (পিপিপি) বাড়লে লাভ দেশের পরিকাঠামো শিল্পেরই। যে-কারণে এই ক্ষেত্রে বেসরকারি বিনিয়োগ টানতে এ বার পিপিপি-র কাঠামো ঢেলে সাজা জরুরি বলে মন্তব্য করল মূল্যায়ন সংস্থা মুডিজ। আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থাটির মতে, গত কয়েক বছরে জমি অধিগ্রহণ ও প্রকল্পের ছাড়পত্র পাওয়ার ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এর জেরে অনেক ক্ষেত্রেই প্রকল্প চালু হতে দেরি হচ্ছে। ফলে পিপিপি-র মাধ্যমে পরিকাঠামো প্রকল্প তৈরিতে সংস্থাগুলির মধ্যে তেমন আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না।

এই অবস্থায় মুডিজের ভাইস প্রেসিডেন্ট অভিষেক ত্যাগীর প্রস্তাব হল—

১) প্রথম থেকেই সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলির ঝুঁকি ভাগাভাগির পদ্ধতি স্থির করা।

২) সময় ও পরিস্থিতি বুঝে প্রকল্পের দরপত্র পরিবর্তন করার
শর্ত রাখা।

৩) রাজস্ব ভাগাভাগির মতো শুধুমাত্র কোনও একটি মাপকাঠির ভিত্তিতে প্রকল্পের বরাত না-দেওয়া।

মুডিজের দাবি, প্রকল্পের কাজ শেষ হতে দেরি হওয়া শুধুমাত্র সংস্থাগুলির মুনাফাতেই ভাগ বসাচ্ছে না, বরং এর জেরে সমস্যায় পড়ছে ঋণদাতা ব্যাঙ্কগুলিও। সম্প্রতি রিজার্ভ ব্যাঙ্ক এক রিপোর্টে জানিয়েছে, দেশের বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির মোট ঋণের ১৪.২% দেওয়া হয়েছে পরিকাঠামো শিল্পকে। সেই সঙ্গেই তাদের অনুৎপাদক সম্পদের ১৩.৯ শতাংশও বকেয়া রয়েছে তাদের কাছে। এই প্রসঙ্গে মূল্যায়ন সংস্থাটির দাবি, ভারতের উচিত ব্রিটেন, কানাডা, অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশগুলির পিপিপি নীতি অনুসরণ করা। যার হাত ধরে বেসরকারি লগ্নি টানা সহজ হবে দেশের পক্ষে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

country's infrastructure Industrial production
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE