নিরপেক্ষ ইন্টারনেট পরিষেবা বা নেট নিউট্রালিটি নিয়ে দেশ জোড়া বিতর্কের মধ্যেই এয়ারটেলের বিশেষ প্রকল্প ‘এয়ারটেল জিরো’-তে যোগ দেবে না বলে জানিয়ে দিল ই-কমার্স সংস্থা ফ্লিপকার্ট। যদিও প্রকল্পটি কোনও ভাবেই নিরপেক্ষ নেট-এর ধারণার পরিপন্থী নয় বলে মঙ্গলবারও এক বিবৃতিতে ফের দাবি করেছে এয়ারটেল। বরং প্রকল্পটিকে ভুল বোঝা হচ্ছে বলেই তাদের দাবি।
গোড়ায় এয়ারটেলের ওই প্রকল্পকে পুরোদস্তুর সমর্থন করলেও, দিন একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে ফ্লিপকার্টের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সচিন বনসল জানান, খুঁটিয়ে দেখার পর বোঝা গিয়েছে এর ফলে নিরপেক্ষ ইন্টারনেটের ধারণা ধাক্কা খাবে। যে কারণে প্রকল্প থেকে সরে আসছে তাঁর সংস্থা। ফ্লিপকার্টও এক বিবৃতিতে জানিয়েছে নিরপেক্ষ ইন্টারনেট পরিষেবা বা নেট নিউট্রালিটি-র সঙ্গে তাদের কোনও বিরোধ নেই। বরং নেট নিউট্রালিটি-কে সংস্থা সমর্থন করে এবং আগামী দিনেও তা করবে।
প্রসঙ্গত, এর আগে এয়ারটেলের প্রকল্পটিকে সমর্থন জানিয়ে টুইটারে করা বনসলের বিবৃতি বিতর্ক তৈরি করেছিল। যার ফলে গত কয়েক দিন ধরেই ক্রমাগত তাঁকে এবং ফ্লিপকার্টকে সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে। এমনকী বহু গ্রাহকই নিজেদের মোবাইল থেকে ফ্লিপকার্টের অ্যাপ্লিকেশনটিও মুছে দিয়েছিলেন। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, অবশেষে নিজেদের সম্মান বাঁচাতে এবং গ্রাহকদের মতামতকে গুরুত্ব দিয়েই ‘এয়ারটেল জিরো’ প্রকল্প থেকে বেরিয়ে এল ই-কমার্স সংস্থাটি।
এ দিকে, নেট নিউট্রালিটি নিয়ে সব মহলের বক্তব্য জানতে চেয়ে ট্রাইয়ের আবেদনের জবাবে তিন লক্ষেরও বেশি ই-মেল জমা পড়েছে টেলিকম নিয়ন্ত্রকের কাছে। টুইটার-সহ বিভিন্ন সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে নিজেদের মনের কথা জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনীতিবিদ, ফিল্ম তারকা, ব্যবসায়ী এবং অন্যরা। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন শাহরুখ খান, ওমর আবদুল্লা, দিগ্বিজয় সিংহ, অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রমুখ। এমনকী বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রের মোদী-সরকারের উপর চাপ বাড়াতে বাকি রাখেনি কংগ্রেসও।
উল্লেখ্য, নেট নিউট্রালিটির মূল কথাই হল ইন্টারনেটে সব ধরনের পরিষেবার জন্য একই মাসুল হার ধার্য করা। অর্থাৎ এর আওতায় কোনও টেলি পরিষেবা সংস্থা আলাদা আলাদা ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ্লিকেশনের (অ্যাপ) জন্য আলাদা আলাদা মাসুল ধার্য করতে পারবে না। কোনও সংস্থা বা ব্যক্তি বিশেষ সুবিধা পাবে না। বরং নেট পরিষেবা পেতে এক বার টাকা দিলেই সব ধরনের সাইট ও অ্যাপ ব্যবহারের সুবিধা পাবেন গ্রাহক। কিন্তু এয়ারটেলের ক্ষেত্রে তা হবে না বলেই অভিযোগ বিশেষজ্ঞদের।
ডিসেম্বরে অ্যাপ ব্যবহার করে ইন্টারনেটে ফোন করতে নতুন মাসুল চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এয়ারটেল। ফেসবুকের সঙ্গে জোট বেঁধে কয়েকটি নির্দিষ্ট ওয়েবসাইট নিখরচায় ব্যবহারের সুবিধা দেওয়ার প্রকল্প ঘোষণা করে রিলায়্যান্স কমিউনিকেশন্সও। এ সব নিয়ে বিতর্কের মাঝে কিছু অ্যাপ জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত করতে পারে বলে জানিয়েছে ট্রাই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy