কোনও বিমান পরিষেবা সংস্থা ডানা গুটিয়েছে। কেউ চেষ্টা করছে খাদের কিনারা থেকে ফিরে আসার। লাগাতার মুনাফার মুখ দেখতে প্রাণপণ কসরত করতে হচ্ছে অধিকাংশ বাকি সংস্থাকেও। অথচ এই সময়ে দাঁড়িয়েও ৪৩০টি নতুন বিমান নিয়ে আসছে ইন্ডিগো। যার মধ্যে ৩৬টি এসে যাবে আগামী ১৪ মাসের মধ্যেই। সব মিলিয়ে এর জন্য আড়াই লক্ষ কোটি টাকা উপুড় করতে তৈরি হচ্ছে সস্তার বিমান পরিষেবা সংস্থাটি।
প্রেসিডেন্ট আদিত্য ঘোষের দাবি, টানা ৭ বছর মুনাফা করে যাচ্ছে ৪০ হাজার কোটি টাকার সংস্থা ইন্ডিগো। যার মধ্যে গত চার বছরে লাভ ৩,৬০০ কোটি। ফলে আড়াই লক্ষ কোটি গুনে প্রায় সাড়ে চারশো বিমান হাতে নিতে পিছপা হচ্ছেন না তাঁরা।
গ্রাহক টানতে সস্তার টিকিট দিতে গিয়ে সমস্যায় পড়ছে অনেক সংস্থাই। কঠিন হচ্ছে লাভের মুখ দেখা। সেখানে ইন্ডিগোর মুনাফার রহস্য ‘ফাঁস করে’ আদিত্যবাবু বলেন, ‘‘পরিকল্পনাই এর মূল কারণ। আমরা দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনায় বিশ্বাসী। সংস্থার করা প্রতিটি খরচ থেকে কী ভাবে মুনাফা করা যায়, সে হিসেব অনেক আগে থেকে করে রাখি।’’
এর উদাহরণ হিসেবেই নতুন বিমানের প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যবসার প্রথম দিন থেকেই নতুন বিমান নিয়ে এসেছি। ছ’বছর চালিয়ে তা ফেরত পাঠিয়েছি।’’ উল্লেখ্য, চুক্তি অনুযায়ী, আর্থিক সংস্থা বিমান কেনে। তাদের কাছে সেই বিমান লিজ বা ভাড়া নেয় ইন্ডিগো। মেয়াদ ৬ বছর। তারপর ফিরিয়ে দেওয়া হয় সেই বিমান। তার জায়গায় আসে নতুন বিমান।
আদিত্যবাবুর কথায়, ‘‘নতুন বিমান রক্ষণাবেক্ষণ করার খরচ কম। যাত্রীরাও তাতে চড়তে পছন্দ করেন সেই কারণেই এই সিদ্ধান্ত।’’ সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এই পদ্ধতিতে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সও ৬-৭ বছর পরে বিমান ফেরত পাঠিয়ে নতুন আনে। অথচ এয়ার ইন্ডিয়া এমন বিমানও চালায়, যা ২৫ বছরের পুরনো।
এ বার যে নতুন এয়ারবাস-৩২০ ইন্ডিগো নিচ্ছে, তা ‘নিও’ সিরিজের। আদিত্যবাবুর দাবি, এই বিমান কেনায় ইন্ডিগোই বিশ্বে প্রথম। এতে সুবিধা হল, ১৫% কম পড়বে জ্বালানি খরচ। ফলে ওড়ার সময় কম জ্বালানি নিতে হবে। বিমানে অতিরিক্ত পণ্য তোলা যাবে। সেখানেও মুনাফা। ৩০ ডিসেম্বর এই নতুন বিমান হাতে পাবে ইন্ডিগো। ভারতের আকাশে তা ডানা মেলবে আগামী ১০ জানুয়ারি।
পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ভারতে বিমানে চড়ার চাহিদা বাড়ছে বছরে প্রায় ২০%। অঙ্কের হিসেব বলছে, চাহিদা মেটাতে প্রতি বছর ৮০টি নতুন বিমান প্রয়োজন এ দেশে। সে কথা মাথায় রেখেই বিমানের এই বিপুল বরাত দিয়েছে ইন্ডিগো। ১০ নভেম্বর ৭৬৫ টাকা দরে বাজারে প্রথম শেয়ার ছেড়েছিল ইন্ডিগো। সেই দরও চড়েছে বেশ কিছুটা। শুক্রবার কিছুটা পড়েও দাঁড়িয়েছে ১০৭৭.২৫ টাকায়।
আদিত্যবাবুর দাবি, ‘‘এই সব কিছুর সুফল পাবেন যাত্রীরা। কারণ, এতে টিকিটের দাম কমবে। সেই সঙ্গে মুনাফা বাড়বে সংস্থারও।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy