E-Paper

আদানিদের নাম জড়াল কয়লা কেলেঙ্কারিতে! শেষ দু’দফা ভোটের আগে নতুন অভিযোগ অস্ত্র বিরোধীদের

আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নতুন করে অনিয়মের অভিযোগ উঠল। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে নতুন অস্ত্র পেয়ে গেল কংগ্রেস তথা বিরোধীদের ইন্ডিয়া মঞ্চ।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০২৪ ০৪:৫২
গৌতম আদানি।

গৌতম আদানি। —ফাইল চিত্র।

লোকসভা নির্বাচনে আরও দু’দফায় ১১৪টি আসনের ভোটগ্রহণ বাকি। তার আগে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নতুন করে অনিয়মের অভিযোগ উঠল। সেই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে নতুন অস্ত্র পেয়ে গেল কংগ্রেস তথা বিরোধীদের ইন্ডিয়া মঞ্চ। ঘটনাচক্রে আজই দিল্লিতে নির্বাচনী জনসভায় মোদী বলেছেন, ‘‘ক্ষমতায় ফেরার পরে দুর্নীতিগ্রস্তদের সম্পত্তির এক্স-রে করব। সাধারণ মানুষের উপরে যাঁরা লুটপাট চালাচ্ছেন, তাঁদের জেলে পাঠানো হবে।’’ আদানিদের সম্পর্কে সরাসরি কিছু না বললেও মোদীর এই বক্তব্যকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।

মোদীর ঘনিষ্ঠ শিল্পপতি বলে পরিচিত গৌতম আদানির সংস্থার বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ, তারা ইন্দোনেশিয়া থেকে নিম্নমানের ও কম দামের কয়লা আমদানি করে তা উন্নত মানের ও দূষণমুক্ত বলে দাবি করে, অনেক বেশি দামে তামিলনাড়ু সরকারের বিদ্যুৎ উৎপাদন সংস্থাকে বেচেছে। এতে আদানি গোষ্ঠীর কোটি কোটি টাকা মুনাফা হলেও সেই বিদ্যুতের জন্য আমজনতাকে গুনতে হয়েছে চড়া মাসুল। পরিবেশ দূষণের খেসারতও দিতে হয়েছে সাধারণ মানুষকেই। কংগ্রেসের অভিযোগ, এই প্রতারণার মাধ্যমে ৩০০০ কোটি টাকা পকেটে পুরেছে আদানি গোষ্ঠী।

অনুসন্ধানমুখী সাংবাদিকদের আন্তর্জাতিক মঞ্চ ‘অর্গানাইজ়ড ক্রাইম অ্যান্ড কোরাপশন রিপোর্টিং প্রোজেক্ট’ বা ওসিসিআরপি এই তদন্ত রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। লন্ডনের ফিনান্সিয়াল টাইমস সংবাদপত্রে প্রকাশের পরেই আজ রাহুল গান্ধী তা নিয়ে সরব হয়েছেন। একে মোদী জমানার ‘বড় কয়লা কেলেঙ্কারি’ দাবি করে কংগ্রেস নেতা অভিযোগ তুলেছেন, মোদীর সব থেকে ‘প্রিয় বন্ধু’ আদানি তিন গুণ বেশি দামে কয়লা বিক্রি করে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করেছেন। আর সাধারণ মানুষকে মোটা বিদ্যুতের বিল জমা করতে হয়েছে। রাহুলের দাবি, ৪ জুন লোকসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পরে ইন্ডিয়া মঞ্চের সরকার তৈরি হলে এই ‘মহা-কেলেঙ্কারির’ তদন্ত হবে। এর জন্য গঠন করা হবে যৌথ সংসদীয় কমিটি বা জেপিসি।

আদানিদের বিরুদ্ধে এর আগেও একই রকম অনিয়মের অভিযোগ উঠেছিল। কম দামে কয়লা আমদানি করে তা বেশি দামে দেশে বিক্রি করা নিয়ে তদন্ত করেছে কেন্দ্রীয় সরকারের রাজস্ব গোয়েন্দা দফতর। আদালতের নির্দেশে অবশ্য সেই তদন্ত বন্ধ রয়েছে। ভুঁইফোঁড় বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থার মাধ্যমে ঘুরপথে নিজেদের সংস্থাতেই লগ্নি করে শেয়ারের দর ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে তোলার অভিযোগও ওঠে। আদানি গোষ্ঠী অবশ্য বরাবর এই ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে। এ বারের অভিযোগ নিয়ে তারা মুখ খোলেনি। মুখ খুলতে চাননি বিজেপি নেতৃত্বও।

কংগ্রেস মনে করছে, লোকসভা ভোটে মোদী সরকারের বিরুদ্ধে যে ‘অসন্তোষ’ দেখা যাচ্ছে, তারই মধ্যে আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে নতুন অভিযোগ ওঠায় ইন্ডিয়া মঞ্চ আরও রাজনৈতিক সুবিধা পাবে। মোদীর সঙ্গে আদানি গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠতা, তাঁদের সুবিধা পাইয়ে দেওয়া ও অনিয়মের অভিযোগ সত্ত্বেও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির হাত গুটিয়ে বসে থাকা নিয়ে রাহুল দীর্ঘদিন ধরেই সরব। লোকসভা ভোটের প্রচারে কিছুদিন আগে মোদী পাল্টা প্রশ্ন তুলেছিলেন, রাহুল ভোটের মরসুমে আদানি-অম্বানী নিয়ে চুপ কেন? কংগ্রেস কি এদের থেকে টেম্পো ভরে, ঝোলা-ভর্তি করে কালো টাকা পেয়েছে?

আজ রাহুল প্রশ্ন তুলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী কি এ বার বলবেন, এই প্রকাশ্য দুর্নীতি সত্ত্বেও ইডি, সিবিআই, আয়কর দফতরকে বসিয়ে রাখার জন্য কত টেম্পো ব্যবহার হয়েছিল?”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Adani Group Gautam Adani PM Narendra Modi BJP

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy