E-Paper

আরও কমছে ডাকঘর, বাড়ছে ক্ষোভ, আন্দোলনে কর্মী ইউনিয়ন

শাখা ডাকঘর বন্ধ করার বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় কর্তৃপক্ষকে এ মাসের ২১ তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে হবে।

অঙ্কুর সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ১৯ নভেম্বর ২০২৫ ০৬:৫৯

—প্রতীকী চিত্র।

বেশ কিছু উপ-ডাকঘর বন্ধ করেছে কেন্দ্রীয় ডাক বিভাগ। ওই ধরনের একাধিক ডাকঘরকে মিশিয়ে তার সংখ্যা কমিয়েছে। সূত্রের খবর, সেই প্রক্রিয়া এখনও চলছে। তার মধ্যেই এ বার শাখা ডাকঘরগুলির একাংশকে বন্ধ করতে উদ্যোগী হল তারা। লক্ষ্য, একাধিক শাখাকে মেশানো বা সরানো। উল্লেখ্য, প্রতিটি রাজ্যে প্রধান ডাকঘরের আওতায় থাকে একগুচ্ছ উপ-ডাকঘর। আবার প্রতিটি উপ-ডাকঘরের অধীনে শাখা ডাকঘর। দেশের শাখার সংখ্যাই সব থেকে বেশি। সূত্রের খবর, নানা প্রান্তের অসংখ্য মানুষকে পরিষেবা দেয় প্রায় ১.৪০ লক্ষ শাখা ডাকঘর। ডাক বিভাগ সেগুলির একাংশকেই বন্ধ করার তোড়জোড় করছে। তবে এ নিয়ে ইতিমধ্যেই তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ডাকঘর কর্মীদের ইউনিয়নগুলি। তাদের দাবি, এ ভাবে সমাজের বড় অংশের আর্থিক পরিষেবা পাওয়ার সব থেকে কার্যকরী একটি সরকারি ব্যবস্থাকে কার্যত বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এতে শুধু কর্মীরা নন, গ্রাহকরাও ভুগবেন।

শাখা ডাকঘর বন্ধ করার বিষয়টি নিয়ে বিভাগীয় কর্তৃপক্ষকে এ মাসের ২১ তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষের কাছে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে হবে। তারপর পর্যায়ক্রমে উপ-ডাকঘরের মতো পরিস্থিতি বুঝে তা বন্ধ করা হবে। যদিও ডাক বিভাগ সরাসরি বন্ধের কথা বলেনি। গত ১৩ তারিখ যে বিজ্ঞপ্তি বেরিয়েছে, তাতে লেখা ‘র‌্যাশনালাইজ়েশন’। যার আওতায় থাকবে শাখা স্থানান্তর, সংযুক্তি এবং নতুন খোলার মতো বিষয়। বিজ্ঞপ্তি সামনে আসতেই ক্ষোভ বেড়েছে ডাকঘর কর্মীদের। আন্দোলনে নেমেছে তাঁদের ইউনিয়নগুলি। তাদের আশঙ্কা, অর্ধেক শাখা ডাকঘরই হয়তো তুলে দেওয়া হবে। প্রসঙ্গত, ডাক ব্যবস্থায় সবচেয়ে নীচে শাখা ডাকঘর। মানুষের যোগাযোগ সবচেয়ে বেশি তাদের সঙ্গেই। আকারে ছোট হলেও সব রকম পরিষেবা দেয়। দেশের বেশির ভাগ প্রত্যন্ত এলাকায় এর মাধ‍্যমেই মানুষ ডাক পরিষেবা পান। কিছু ক্ষেত্রে আর্থিক পরিষেবার মাধ্যম শুধু এটি।

কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গ অঞ্চলের পোস্টমাস্টার জেনারেল ঋজু গঙ্গোপাধ্যায়ের কথায়, “আমাদের একটিও শাখা ডাকঘর বন্ধ করার পরিকল্পনা নেই। অন্তত দক্ষিণবঙ্গ আর উত্তরবঙ্গে তো এই গ্রামীণ নেটওয়ার্কই সব। সেটা সঙ্কুচিত করা আত্মহত্যার সমতুল।” তবে বাকি অংশে, শহরে বা কলকাতা অঞ্চলে চূড়ান্ত কী সিদ্ধান্ত হবে, তা স্পষ্ট নয় বলেই জানান তিনি। সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গ সার্কলে শাখা ডাকঘর ৭৩৩১। এর মধ্যে কলকাতা অঞ্চলে ২৪০৮টি। সুত্রের দাবি, তার অনেকগুলি যে বন্ধ হচ্ছে, সেটা স্পষ্ট।

ডাক কর্মীদের সংগঠন পোস্টাল কো-অর্ডিনেশন কমিটির পশ্চিমবঙ্গ শাখার সম্পাদক সুভাষ চক্রবর্তীর মতে, ডাক ব্যবস্থাকে ছোট করা হচ্ছে। কিন্তু গোটা ব‍্যবস্থা দাঁড়িয়ে শাখা ডাকঘরগুলির উপর। শহরতলি, গ্রামীণ পরিষেবা সেগুলির উপর নির্ভরশীল। মঙ্গলবার এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ডাক কর্মীদের একাধিক সংগঠন যোগাযোগ ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখায়। ন্যাশনাল ফেডারেশন অব পোস্টাল এমপ্লয়িজ়, পশ্চিমবঙ্গ সার্কলের আহ্বানে কয়েক’শো কর্মী বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন। সংগঠন এই সার্কলের চিফ পোস্টমাস্টার জেনারেল অশোক কুমারের কাছে একটি প্রতিবাদপত্র দিয়েছে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Post Offices Protest

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy