পহেলগামে পর্যটকদের উপরে জঙ্গি হামলার পরে জম্মু-কাশ্মীরে ভ্রমণ নিয়ে প্রচারে পশ্চিমবঙ্গকেই প্রথমে রাখলেন সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। বৃহস্পতিবার কলকাতায় দাঁড়িয়ে তিনি স্বীকার করেছেন, তাঁদের রাজ্যের পর্যটন ব্যবসায় জঙ্গি হানার প্রভাব উদ্বেগজনক। তবে একই সঙ্গে দাবি, সেই স্মৃতিকে পিছনে ফেলে ফের ভিড় বাড়ছে ‘ভারতের সুইৎজ়ারল্যান্ডে’। নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়ে এ রাজ্যের পর্যটকদেরও আমন্ত্রণ জানান তিনি।
এ দিন শহরে এক পর্যটন মেলার উদ্বোধন করেন ওমর। সেখানে হাজির ভ্রমণপ্রেমীদের উদ্দেশে বলেন, ‘‘এখানে জম্মু-কাশ্মীরের অন্ধকার দিন নয়, আশা ও স্বপ্নের কথা শোনাতে এসেছি। ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছি আমরা। ভিড় বাড়ছে পর্যটকদের। তাঁদের নিরাপত্তার যাবতীয় দায় আমাদের। সুরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসন সর্বোচ্চ স্তরে নজরদারি করছে।’’ তবে পহেলগামের ঘটনা পর্যটনে কতটা প্রভাব ফেলেছে তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে ওমর জানান, আগে সারা দেশ থেকে দৈনিক ৫০-এর বেশি উড়ান নামত জম্মু-কাশ্মীরে। সেটাই নেমেছিল ১৫-এ। এখন সামান্য বেড়ে হয়েছে ২০-২৫।
পর্যটনের প্রচারে প্রথমেই বাংলাকে বেছে নেওয়ার প্রসঙ্গে ওমরের দাবি, ২০২৪-এ সেখানে বেড়াতে যাওয়া মানুষের অর্ধেকই ছিল এ রাজ্যের। তার পরে রয়েছে গুজরাত। তবে জঙ্গি হামলার ধাক্কা কাটিয়ে জম্মু-কাশ্মীর কিছুটা ছন্দে ফিরতে শুরু করলেও বঙ্গের পর্যটক বাড়েনি। তাঁর আক্ষেপ, প্রশাসন যখন পর্যটনকে আরও আকর্ষণীয় করার ভাবনা শুরু করে, ঠিক তখনই ঘটে পহেলগাম। যা শুধু পর্যটনে নয়, সে রাজ্যের গোটা অর্থনীতির উপরে আঘাত হানে। তবে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, খালি হোটেল এবং ডাল লেকে ভিড়ভাট্টার চেনা ছবি ফিরছে ধীরে ধীরে।
পর্যটকদের ভরসা ফেরানোর লড়াইয়ে কলকাতাকে প্রথম গন্তব্য করার কারণ হিসেবে বাংলার সঙ্গে জম্মু-কাশ্মীরের গভীর ও মজবুত সম্পর্কের কথাও তুলে ধরেন তিনি। এর পরে আমদাবাদ, মুম্বইয়ের মতো শহরে যাবেন। তাঁর দাবি, পর্যটনের হাল কী ভাবে ফিরছে, প্রশাসন কী করছে— এ সব তিনি নিজে মুখে বললে সকলে আশ্বস্ত হবেন। যদিও অত বড় ঘটনার পরেও জঙ্গিদের কেন গ্রেফতার করা যায়নি সেই প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে তাঁর জবাব, ‘‘এটা রাজনীতির সময় নয়। পর্যটন ব্যবসাকে ঘুরিয়ে দাঁড় করানোর লড়াইয়ের সঙ্গে আমি রাজনীতিকে যুক্ত করতে চাই না।’’
পর্যটন মেলায় অন্যতম বৃহৎ প্রতিনিধিদল এনেছে জম্মু-কাশ্মীর পর্যটন বিভাগ। এ দিন রাতে কলকাতা তথা পূর্ব-ভারতের পর্যটন ক্ষেত্রের উচ্চপদস্থ আধিকারিক, এজেন্টদের সঙ্গেও বৈঠকে বসেন ওমর।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)