—প্রতীকী চিত্র।
ভারতের অর্থনীতি নিয়ে যে দিন আশার কথা শোনাল মূল্যায়ন সংস্থা এসঅ্যান্ডপি, সেই দিনই কার্যত আর্থিক বৃদ্ধিকে নিয়ে ‘রাজনীতি’ করার অভিযোগ তুললেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজন। দেশবাসীকে সতর্ক করে তাঁর বার্তা, জিডিপি বৃদ্ধির হার উঁচু বলে যে ভাবে ‘ফুলিয়ে-ফাঁপিয়ে’ দেখানো হচ্ছে, তাতে বিশ্বাস করে বিরাট ভুল করছে ভারত। চাঁছাছোলা ভাষায় রাজন বলেছেন, রাজনীতিকেরা চান, মানুষ এই সব বিশ্বাস করুন। যাতে সকলের মনে হয় লক্ষ্যে পৌঁছেছে দেশ। কিন্তু তা সত্যি নয় বলেই তাতে ভরসা করলে বিপদ। সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, ভোটের মুখে অর্থনীতির উন্নতি তুলে ধরে প্রচারে নেমেছে মোদী সরকার। সেই দাবিকেই কার্যত বিঁধলেন শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের বুথ স্কুল অব বিজ়নেসে অর্থনীতির অধ্যাপক। যেখানে একে একে আর্থিক বৃদ্ধি, দেশের কাঠামোগত সমস্যা, বেকারত্ব, দক্ষতার অভাব-সহ নানা বিষয়ের দিকেই আঙুল তুলেছেন তিনি।
মঙ্গলবার এসঅ্যান্ডপি-র পূর্বাভাস, পরের অর্থবর্ষে ভারতের আর্থিক বৃদ্ধি হবে ৬.৮%। এর আগে তাদের অনুমান ছিল ৬.৪%। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যানে গত অক্টোবর-ডিসেম্বরের বৃদ্ধি ৮.৪% ছোঁয়ার পরেই একের পর এক আর্থিক ও মূল্যায়ন সংস্থা চলতি এবং পরের অর্থবর্ষের জন্য বৃদ্ধির অনুমান বাড়াচ্ছে। কিন্তু সংবাদমাধ্যমের খবর, একটি সাক্ষাৎকারে কেন্দ্রের চড়িয়ে দেখানো বৃদ্ধিতে বিশ্বাস করার এই প্রবণতা নিয়েই সাবধান করেছেন রাজন। এমনকি স্বাধীনতার শতবর্ষ ২০৪৭-এর মধ্যে ভারতের উন্নত দেশ হওয়ার যে স্বপ্ন ফেরি করছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, তাকেও উড়িয়ে দিয়েছেন। রাজন বলেছেন, একেবারে ‘বাজে কথা’। যদি সেটাই হত, তা হলে এখনও এত বেশি সংখ্যক শিশু উচ্চশিক্ষা থেকে বঞ্চিত হত না। এমনকি স্কুলছুটের সংখ্যাও বিপুল হারে বাড়ত না।
রাজনের মন্তব্য, ‘বাড়িয়ে’ বলা কথাগুলিকে সত্যি করতে হলে আরও অনেক বছর কঠোর পরিশ্রম জরুরি। দেশে কিছু কাঠামোগত সমস্যা রয়েছে। ক্ষমতার পরিপূর্ণ সদ্ব্যবহার করা যাবে না সেগুলি না মেটালে। দক্ষতার অভাবের কথাও তুলে ধরেন তিনি। প্রাক্তন গভর্নরের বার্তা, নির্বাচনে জিতে আসা সরকারের সামনে সব থেকে বড় চ্যালেঞ্জ শিক্ষায় উন্নতি এবং কাজ করতে চাওয়া যুব সম্প্রদায়ের দক্ষতা বৃদ্ধি। তিনি বলেছেন, তাঁদের কাজে লাগানোর একটাই উপায়, ভাল চাকরির ব্যবস্থা। কিন্তু সেটা হচ্ছে না। মানুষকে কাজে দক্ষ করে তুলতে না পারলে তার ফল দীর্ঘদিন ধরে ভুগতে হবে ভারতকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy