জিএসটি-তে করের হার কমানো নিয়ে মোদী সরকারের প্রস্তাবে রাজ্যগুলির রাজস্ব ক্ষতি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সেই সূত্রে ফের মাথা তুলছে ক্ষতিপূরণের যুক্তিও। সূত্রের দাবি, আদায় হওয়া এই কর কেন্দ্র-রাজ্যের মধ্যে সমান ভাগ হয়। কর কমলে জিএসটি সংগ্রহ বাড়বে। কারণ, তাতে পণ্যের দাম কমলে ক্রেতার হাতে বাড়তি টাকা থাকবে। তাঁরা কেনাকাটা বেশি করবেন। অর্থ মন্ত্রকের দাবি, জিএসটি কমানো আসলে বাজারে কেনাকাটা বাড়ানোর ‘স্টিমুলাস’ বা দাওয়াই। সূত্রের বক্তব্য, যেখানে জিএসটি আদায় নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্যের চিন্তার জায়গা এক এবং দু’পক্ষই জিএসটি পরিষদের সদস্য, সেখানে এই কাঠামোর মধ্যে দাঁড়িয়ে রাজ্যগুলির ক্ষতি হলে তা পূরণ করা হবে কি না সেই প্রশ্ন ওঠা উচিত নয়। কর ছাঁটাইয়ের প্রস্তাব খতিয়ে দেখতে তৈরি মন্ত্রিগোষ্ঠীর সঙ্গে ২০ অগস্ট, বুধবারই অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বৈঠকে বসছেন বলে খবর।
ইউবিএস-এর সমীক্ষা বলছে, জিএসটি-র হার কমালে বছরে ১.১ লক্ষ কোটি টাকা রাজস্ব হারাবে কেন্দ্র। যা দেশের জিডিপি-র ০.৩%। চলতি অর্থবর্ষে সেই অঙ্ক হতে পারে ৪৩,০০০ কোটি (জিডিপি-র ০.১২%)। যদিও সেখানে দাবি, বেশি কর আদায় এবং রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের চড়া ডিভিডেন্ডের হাত ধরে সেই ক্ষতি সামলাতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কর কমার প্রভাব বাজেটে আয়করে দেওয়া সুরাহাকেও ছাপিয়ে যাবে।
দেওয়ালির আগে জিএসটি সংস্কারের বার্তা দিয়ে রাজ্যগুলিকে পাশে পাওয়ার তোড়জোড় শুরু করেছে মোদী সরকার। সূত্র জানাচ্ছে, সেই লক্ষ্যেই বুধবার মন্ত্রিগোষ্ঠীর সঙ্গে দিল্লিতে দু’দিনব্যাপী বৈঠকে করবেন নির্মলা। কথা হতে পারে ক্ষতিপূরণ সেস বহাল রাখা এবং জীবন ও স্বাস্থ্য বিমার প্রিমিয়ামে জিএসটি কমানো নিয়েও। উল্লেখ্য, ২০১৭-এ জিএসটি চালুর সময় কেন্দ্র বলেছিল, এতে রাজ্যগুলির ক্ষতি হলে পাঁচ বছর তা পুষিয়ে দেওয়া হবে। করোনার সময়ে সেই মেয়াদ বাড়ে। ক্ষতিপূরণের টাকা উদ্ধারের জন্য সেস বসানোর মেয়াদ আগামী মার্চে শেষ হবে। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশের কটাক্ষ, এত তাড়াতাড়ি সংস্কারে নেমে কেন্দ্র প্রমাণ করল জিএসটি ১.০ ভুলে ভরা ছিল। নোট বাতিল এবং তড়িঘড়ি জিএসটির মতো ‘মোদীর দেওয়া ধাক্কা’ অর্থনীতি কাটিয়ে উঠতে পারেনি।
কেন্দ্রের প্রস্তাব, জিএসটি-তে থাকবে দু’টি করের হার। সূত্রের মতে, তা হবে ৫% এব ১৮%। অত্যাবশ্যক পণ্যগুলি থাকবে ৫ শতাংশের ধাপে। বাকি সমস্ত কিছু ১৮%। ক্ষতিকর পণ্যে কর ৪০%। কেন্দ্রের বক্তব্য, এতে অত্যাবশ্যক পণ্যের দাম কমবে। সে ক্ষেত্রে ১২ এবং ২৮ শতাংশের স্তর আর থাকবে না। জিএসটি খাতে রাজস্বের সিংহভাগই আসবে ১৮% থেকে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)