আদানি গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি), রাজস্ব গোয়েন্দা দফতর এবং শুল্ক দফতরের তদন্তের দাবি জানিয়ে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনকে চিঠি দিলেন তৃণমূলের রাজ্যসভা সাংসদ জহর সরকার। সম্প্রতি লন্ডনের ফিনান্সিয়াল টাইমসে প্রকাশিত তদন্তমূলক প্রতিবেদন বলেছে, আদানিরা বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ৫০০ কোটি ডলারের কয়লা আমদানি করেছিল। কাগজে-কলমে তার দাম দেখিয়েছিল বাজার দরের দ্বিগুণ। সেই দরের ভিত্তিতেই মানুষ ও শিল্পের থেকে চড়া হারে বিদ্যুৎ মাসুল আদায় করা হয়। ফলে খরচের তুলনায় ৫২% মুনাফা করে আদানি গোষ্ঠী।
সোমবারই আদানিরা বিবৃতিতে বলেছে, তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র ও শিল্পপতি দর্শন হীরানন্দানি ষড়যন্ত্র করে গৌতম আদানি ও আদানি গোষ্ঠীকে নিশানা করছিলেন। তাই সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ জমা পড়েছে। মহুয়ার অবশ্য দাবি, আদানির সংস্থাগুলির অনিয়ম নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বলেই তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু হয়েছে। কিন্তু তিনি পিছু হটবেন না। ঠিক সেই সময়েই সরাসরি মোদী সরকারের অর্থমন্ত্রীকে তদন্ত চেয়ে চিঠি লিখেছেন তৃণমূলের আর এক সাংসদ।
জহর চিঠিতে বলেছেন, ‘‘আপনার কোর্টেই এখন বল। প্রতিবেদনে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে, তা অনুযায়ী কয়লা আমদানির জাতীয় ও বিশ্ব বাজারের মূল্য খতিয়ে দেখতে কেন্দ্র শুল্ক দফতর ও রাজস্ব গোয়েন্দা দফতরকে নির্দেশ দিলেই সেটা যথাযথ হবে। আপনি ইডি-কেও অবশেষে বিদেশি মুদ্রার লোকসান ও অন্যান্য আর্থিক নয়ছয়ের দিকে নজর দেওয়ার নির্দেশ দিতে পারেন।’’ জহর জানান, কাগজে-কলমে চড়া দাম দেখিয়ে কয়লা আমদানি করা নিয়ে আদানিদের বিরুদ্ধে দু’বছর ধরে কয়লা ও বিদ্যুৎ মন্ত্রকের কাছে প্রশ্ন তুলছেন। কিন্তু তা এড়াতে দুই মন্ত্রক ‘পিংপং’ খেলছে।
উল্টো দিকে আদানিদের দাবি, ফিনান্সিয়াল টাইমসে গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে পুরনো ভিত্তিহীন অভিযোগ নতুন করে প্রকাশিত হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টে আদানির মামলার শুনানির আগে নিয়ম করে সংবাদমাধ্যমে এ ধরনের খবর প্রকাশ করা হচ্ছে। এর আগে আদানিরা আমেরিকার শেয়ার গবেষণা সংস্থা হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের তোলা কারচুপি করে সংস্থার শেয়ার দর বৃদ্ধির অভিযোগও বিদেশি সংস্থার দুর্নাম করে স্বার্থসিদ্ধির চেষ্টা বলে উড়িয়েছে ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)