ভারতীয় রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। ফাইল চিত্র।
মূল্যবৃদ্ধির হার যাতে ফের মাথা তুলতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সম্প্রতি আরও ২৫ বেসিস পয়েন্ট রেপো রেট (যে সুদে তারা অন্যান্য ব্যাঙ্ককে ধার দেয়) বাড়িয়েছে। ফলে গত মে মাস থেকে মোট ২৫০ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে তা হয়েছে ৬.৫%। ডিসেম্বরের থেকে এ বার সুদ বৃদ্ধির হার ১০ বেসিস পয়েন্ট কমলেও, বৃদ্ধিতে দাঁড়ি টানার কথা বলেনি আরবিআই। বরং ইঙ্গিত, চড়া সুদের জমানা আপাতত চলবে। আজ জানা যাবে খুচরো বাজারে জানুয়ারির মূল্যবৃদ্ধির হার। আশা, ডিসেম্বরের ৫.৭২% থেকে তা কিছুটা নেমেছে। আরবিআইয়ের অনুমান চলতি অর্থবর্ষের গড় মূল্যবৃদ্ধি দাঁড়াবে ৬.৫%। অর্থাৎ রেপোর সমান।
রেপো বাড়ায় ফের চড়বে বাড়ি-গাড়ি ঋণ শোধের কিস্তি (ইএমআই)। মধ্যবিত্তের পকেটে টান পড়ার ফলে কম দামের বাড়ি এবং গাড়ির চাহিদা তেমন বাড়ছে না। তবে ভাল বিকোচ্ছে দামিগুলি। চলতি সপ্তাহেই বিভিন্ন ব্যাঙ্ক হয়তো ঋণে সুদ বৃদ্ধির ঘোষণা শুরু করবে। সুদ বাড়তে পারে কিছু ব্যাঙ্ক জমায়। জানুয়ারিতে এনএসসি-র সুদ ২০ বেসিস পয়েন্ট বৃদ্ধির ফলে একই হারে সুদ বেড়েছে ভারত সরকারের ফ্লোটিং রেট বন্ডেও। ৭ বছর মেয়াদি এই বন্ডে জানুয়ারি থেকে সুদ মিলবে ৭.৩৫%।
আন্তর্জাতিক দুনিয়া অস্থির হওয়ায় আরবিআই আগামী অর্থবর্ষে আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৬.৮% থেকে কমিয়ে করেছে ৬.৪%। এই পরিস্থিতিতে ডিসেম্বরের শিল্প বৃদ্ধিও কমে হয়েছে ৪.৩%। যা নভেম্বরে ছিল ৭.৩%। কারখানায় উৎপাদন বেড়েছে মাত্র ২.৬%। তবে শেয়ার বাজারে অস্থিরতা সত্ত্বেও ডিসেম্বরের তুলনায় জানুয়ারিতে একুইটি (শেয়ার ভিত্তিক) ফান্ডগুলিতে লগ্নি ৭২% বেড়ে পৌঁছেছে ১২,৫৪৬ কোটি টাকায়। এসআইপি-র পথে এসেছে ১৩,৮৫৬ কোটি টাকা। যদিও ডেট (ঋণপত্র নির্ভর) ফান্ডগুলি থেকে নিট ১০,৩১৬ কোটি টাকা বেরিয়ে গিয়েছে। ফলে সব ফান্ডের মিলিত সম্পদ সামান্য কমে হয়েছে ৩৯.৬২ লক্ষ কোটি টাকা।
অক্টোবর-ডিসেম্বরে এলআইসির নিট মুনাফা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় (২৩৫ কোটি টাকা) ২৭ গুণ বেড়ে পৌঁছেছে ৬৩৩৪ কোটি টাকায়। আপাতদৃষ্টিতে আকর্ষণীয় লাগছে। তবে আগের তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) নিট লাভ হয়েছিল ১৫,৯৫২ কোটি। অর্থাৎ পরের তিন মাসে তা কমেছে ৬০.২৯%।
আদানি কাণ্ডের জেরে শেয়ার বাজারে বাজেটের প্রভাব ঠিক মতো বোঝা যায়নি। ২৪ জানুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির রিপোর্ট সামনে আসার পরে যে অস্থিরতা শুরু হয়েছিল, তা এখনও চলছে। সেনসেক্সের ৩০টি শেয়ারে আদানিদের কোনও শেয়ার না থাকায় নিফ্টির তুলনায় সেটি কিছু কম চঞ্চল। মূলত দুর্বলতা দেখা দিয়েছে ব্যাঙ্কের শেয়ারে। তা আরও প্রকট হচ্ছে সুদের হার বাড়ায়। রেপো বৃদ্ধির ফলে ১০ বছর মেয়াদি বন্ড ইল্ডও বেড়ে পৌঁছেছে ৭.৩৬ শতাংশে।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy