E-Paper

ট্রাম্পের শপথের আগে শেয়ার বিক্রির হিড়িকে পতন বাজারে! উদ্বেগ বাড়ল টাকার বিপুল পতনেও

বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির আশঙ্কা, ট্রাম্পের নীতি বাণিজ্যে পাঁচিল তুলে রফতানি-সহ ভারতের অর্থনীতির জন্য প্রতিকূলতা তৈরি করতে পারে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৫ ০৭:২১
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

এক দিকে টাকা, অন্য দিকে শেয়ার। সোমবার ধস নামল দু’ক্ষেত্রেই। টাকা নতুন তলানি ছুঁল। একলপ্তে ডলার ৬৬ পয়সা বেড়ে এই প্রথম হল ৮৬.৭০ টাকা। এ বার তা দ্রুত ৮৭ টাকা হবে কি না, সেই প্রশ্ন দুশ্চিন্তা বাড়াল গোটা দেশে। গত দু’বছরে এক দিনে এতটা পড়েনি টাকা। এ দিন হুড়মুড়িয়ে পড়েছে শেয়ার বাজারও। সেনসেক্স ১০৪৯.৯০ পয়েন্ট নেমে ফিরেছে ৭৬ হাজারের ঘরে। থিতু হয়েছে ৭৬,৩৩০.০১ অঙ্কে। টানা চারটি লেনদেনে সূচক মোট ১৮৬৯ পড়েছে। লগ্নিকারীরা হারিয়েছেন ২৪.৬৯ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ।

বিশেষজ্ঞ মহলের দাবি, ২০ জানুয়ারি আমেরিকায় প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির আশঙ্কা, ট্রাম্পের নীতি বাণিজ্যে পাঁচিল তুলে রফতানি-সহ ভারতের অর্থনীতির জন্য প্রতিকূলতা তৈরি করতে পারে। তাই তাদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির হিড়িক পড়েছে। সূচকের পতনের অন্যতম কারণ এটি। তাতে বিদেশি লগ্নিকারীদের মধ্যে ডলারের চাহিদা বাড়ায় নজিরবিহীন তলানি ছুঁয়েছে টাকাও। তার উপর বিশ্ব বাজারে তেলের দাম বাড়ছে। আমদানিকারীদের ডলার লাগছে বেশি। অনেকে অনিশ্চয়তার আবহে লগ্নির জন্য ডলারকে বেছে নিচ্ছেন। এত দিক দিয়ে চাহিদা দাম বাড়াচ্ছে।

অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার বলেন, ‘‘বহু পণ্য তৈরিতে আমদানিকৃত কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়। টাকার দাম কমায় সেগুলি আমদানির খরচ বাড়বে। ফলে বাড়বে তা দিয়ে তৈরি পণ্যের দামও। ভারত বিদেশ থেকে ভোজ্য তেলও কেনে।’’ রফতানি সংগঠন ইইপিসির পূর্বাঞ্চলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান রাকেশ শাহ-র বক্তব্য, ‘‘আরবিআইয়ের পক্ষেও ডলার ছেড়ে টাকার পতন রোখা মুশকিল। কারণ, তাতে বিদেশি মুদ্রার ভান্ডার দুর্বল হয়। আশঙ্কা থাকে মূল্যবৃদ্ধির মাথাচাড়া দেওয়ার।’’

রফতানি সংগঠন ফিয়ো-র ডিরেক্টর জেনারেল অজয় সহায়ের অবশ্য দাবি, ‘‘ডলারের সাপেক্ষে মুদ্রার পতনের হার অনেক দেশে আরও বেশি। ১০ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত টাকার দাম কমেছে ২.৪%। মালয়েশিয়ার রিঙ্গিটের দাম কমেছে ৩.১%, ফিলিপিনসের পেসোর ৩.৮%, সিঙ্গাপুর ডলারের ৪.১% এবং জাপানি ইয়েনের ৮%।’’ সূত্রের দাবি, শীর্ষ ব্যাঙ্ক হস্তক্ষেপ করছিল বলেই অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায় ভারতীয় মুদ্রা পড়ছিল কম। সোমবার থেকে তারা ডলার বিক্রি কমিয়েছে।

বিশেষজ্ঞ আশিস নন্দী বলেন, ‘‘ট্রাম্প-নীতি ভারতের ক্ষতি করতে পারে, এই আশঙ্কাতেই বিদেশি লগ্নি সরছে। তার উপর আমেরিকায় কর্মসংস্থানের ভাল হার অর্থনীতির উন্নতির বার্তা দেওয়ায় সুদ কমার সম্ভাবনা কমছে সেখানে। দেশে শিল্প সংস্থাগুলির আর্থিক ফল নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়েছে। সব মিলিয়ে বাজার দুর্বল।’’ এ দিন ভারতে প্রভাব ফেলেছে বিশ্ব জুড়ে বিভিন্ন দেশের শেয়ার বাজারের পতনও।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Share Market BSE SENSEX

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy