কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান অনুযায়ী খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার আরও কমল। গত মাসে তা ২.১ শতাংশে নেমে হল ছ’বছরে সবচেয়ে কম। সোমবার জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের হিসাব বলছে, দেশ জুড়ে ভাল বর্ষার কারণে আনাজ-সহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের দাম কমে যাওয়াই জুনের সার্বিক হারকে টেনে নামিয়েছে। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের অভিযোগ, দাম কমার এই হিসাব শুধু সরকারি খাতায়-কলমে। আনাজ-সহ খাদ্যপণ্যের বাজার বৃষ্টির কারণে এখন কার্যত আগুন। এ দিন প্রকাশিত পাইকারি বাজারের হিসাবেও দেখা গিয়েছে, ১৯ মাস পরে জুনে পণ্যের দাম ০.১৩% কমেছে। সেখানেও জ্বালানির পাশাপাশি খাদ্যপণ্যের মূল্যহ্রাসই এর প্রধান কারণ। খরচ কমেছে কারখানায় তৈরি জিনিসপত্রেরও।
কেন্দ্রের তথ্যে জুনে খুচরো বাজারে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি শূন্যের নীচে নেমে গিয়েছে। অর্থাৎ তার মূল্যহ্রাস হয়েছে ১.০৬%। তার মধ্যে আনাজের দাম কমেছে ১৯% হারে, ডালের ১১.৭৬%। তবে ব্যবসায়ী মহলের দাবি, লঙ্কা, পটল, ঝিঙের মতো একাধিক আনাজের দর কোথাও কোথাও ১০০% বেড়ে গিয়েছে। কিছু ক্ষেত্রে মূল্যবৃদ্ধি ৪০-৫০ শতাংশ।
রাজ্য টাস্ক ফোর্সের সদস্য তথা পশ্চিমবঙ্গ চাষি ভেন্ডার সংগঠনের সভাপতি কমল দে জানান, জুন থেকে জুলাইয়ের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ অবস্থা লঙ্কার। পাইকারি বাজারের একাংশে এর দাম ১০০ শতাংশের বেশি বেড়েছে। যার প্রভাব পড়েছে খুচরোয়। পটল, বেগুন, কাঁকড়োলের মতো আনাজও এক মাসে কয়েক গুণ চড়েছে। তবে আলু ও টোমাট্যোর দাম কমবেশি এক আছে। ক্রেতারা বলছেন, বেশ কিছু দিন ধরেই চড়ে রয়েছে সজনে ডাঁটা, পেঁয়াজ, উচ্ছে, গাজর, বিন্স, টোম্যাটো, আদা। বেশির ভাগ আনাজে হাত ছোঁয়ানো যাচ্ছে না।
অন্য দিকে, পোস্তা বাজার মার্চেন্টস অ্যাসোসিয়েশেনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বনাথ আগরওয়াল জানান, মাস দেড়েক ধরে চাল-ডালের মতো পণ্যগুলির দাম খুব একটা বাড়েনি। চিনি, নুন ও ডালের দামও মোটের ওপর এক রয়েছে। দৈনন্দিন মুদিপণ্যের মধ্যে সরষের তেল এবং গোবিন্দভোগ চাল খানিকটা দামি হয়েছে পাইকারি বাজারে। তবে সয়াবিন কিংবা সূর্যমুখী তেলের দাম কমেছে। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের সতর্কবার্তা, বর্ষার সুযোগ নিয়ে খুচরো দাম বাড়িয়েও বিক্রি করছেন স্থানীয় বিক্রেতারা। সব মিলিয়ে আমজনতার পকেট থেকে বেশি টাকা খসছে। খরচ কমার আশায় জল ঢেলে বেড়ে গিয়েছে সংসার খরচ। ফলে জুনের সরকারি হিসাবে স্বস্তির প্রশ্ন নেই।
গত বছরের জুনে খুচরো মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ৫.০৮%। তবে নভেম্বর থেকে তা কমতে শুরু করে। এ বছরের মে মাসে নামে ২.৮২ শতাংশে। এ বার ২.১%। এর আগে শেষ বার তা এতটা নীচে নেমেছিল ২০১৯-এর জানুয়ারিতে (১.৯৭%)।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)