Advertisement
E-Paper

কেন্দ্রের চাপ সত্ত্বেও সুদ কমাতে সাবধানী রাজন

বৃদ্ধির চাকায় গতি বাড়াতে সুদ ছাঁটাইয়ের জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উপর ক্রমাগত চাপ বাড়াচ্ছে কেন্দ্র। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে যে তিনি কোনও তাড়াহুড়োয় রাজি নন, সে কথা ফের স্পষ্ট করে দিলেন রঘুরাম রাজন। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নরের দাবি, দেশে বর্ষার গতিবিধি খুঁটিয়ে খেয়াল রাখছেন তাঁরা। নজর রাখছেন বিশ্ব অর্থনীতিতে। সেই আতসকাচের নীচে মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভের সুদ বাড়ানো নিয়ে সিদ্ধান্ত যেমন রয়েছে, তেমনই আছে চিনা মুদ্রা ইউয়ানের দাম ক্রমাগত পড়তে থাকা।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৫ ০২:২৭
রঘুরাম রাজন ও অরুণ জেটলি।— ফাইল চিত্র

রঘুরাম রাজন ও অরুণ জেটলি।— ফাইল চিত্র

বৃদ্ধির চাকায় গতি বাড়াতে সুদ ছাঁটাইয়ের জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উপর ক্রমাগত চাপ বাড়াচ্ছে কেন্দ্র। কিন্তু তা সত্ত্বেও ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে যে তিনি কোনও তাড়াহুড়োয় রাজি নন, সে কথা ফের স্পষ্ট করে দিলেন রঘুরাম রাজন।
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক গভর্নরের দাবি, দেশে বর্ষার গতিবিধি খুঁটিয়ে খেয়াল রাখছেন তাঁরা। নজর রাখছেন বিশ্ব অর্থনীতিতে। সেই আতসকাচের নীচে মার্কিন শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভের সুদ বাড়ানো নিয়ে সিদ্ধান্ত যেমন রয়েছে, তেমনই আছে চিনা মুদ্রা ইউয়ানের দাম ক্রমাগত পড়তে থাকা। ইঙ্গিত স্পষ্ট। মূল্যবৃদ্ধির হারের উপর এই সবের প্রভাব খতিয়ে দেখে তবেই সুদ কমানোর পথে হাঁটবে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক।
এ সপ্তাহেই স্টেট ব্যাঙ্কের এক অনুষ্ঠানে এসে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি বলেন, শীর্ষ ব্যাঙ্ক নিশ্চয় খেয়াল করেছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। অর্থাৎ, ঘুরিয়ে ফের সেই সুদ কমানোর পক্ষেই সওয়াল করেন তিনি। বৃহস্পতিবার অর্থ মন্ত্রকের এক কর্তারও দাবি, ‘‘মূল্যবৃদ্ধির হার যেখানে দাঁড়িয়ে এবং বিশ্ব অর্থনীতির যা পরিস্থিতি, তাতে ডিসেম্বরের মধ্যে অন্তত ২০০ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমানো উচিত।’’ অথচ এ বছর এখনও পর্যন্ত তা কমেছে ৭৫ বেসিস পয়েন্ট। কর্তাটির অভিযোগ, ‘‘তা একেবারেই কম।’’ এ নিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উপর চাপ বাড়াতে সংবাদমাধ্যম এবং অর্থনীতিবিদদের মাধ্যমে জনমতও গড়ে তুলতে চাইছে জেটলির দফতর।
কিন্তু এই প্রবল চাপের মুখেও এ দিন মুম্বইয়ে এসবিআই ব্যাঙ্কিং অ্যান্ড ইকনমিকস কনক্লেভে রাজন জানান, বর্ষা-সহ সব দিক খতিয়ে দেখে, তবেই সুদ কমানোর পথে হাঁটবেন তাঁরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, সুদ কমানো নিয়ে এই মুহূর্তে দু’পক্ষের মতের মিল হওয়া শক্ত। কারণ, কাগজে-কলমে চিনের বৃদ্ধির হারকে ছাপিয়ে গেলেও দেশের অর্থনীতির ছবি তেমন ভাল নয়। সরকারি লগ্নি স্তিমিত। টাকা ঢালতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না বেসরকারি লগ্নিকারীরা। তার উপর রাজনৈতিক আকচা-আকচি আর তুলকালাম সংসদে থমকে গিয়েছে সংস্কারের রথের চাকা। জমি বিল বিশ বাঁও জলে। পাশ করানো যায়নি পণ্য-পরিষেবা করের (জিএসটি) বিল। ফলে কল-কারখানায় উৎপাদন বাড়ানোর শেষ অস্ত্র হিসেবে সুদ কমাতেই চাপ বাড়াচ্ছেন জেটলি। যাতে অর্থনীতিতে চাহিদা বাড়ে। খরচ কমে মূলধন জোগাড়ের। বিশেষত খুচরো ও পাইকারি, দুই বাজারেই মূল্যবৃদ্ধির হার যখন তলানিতে, তখন সুদ না-কমানোর কারণ নেই বলে মনে করছে নর্থ ব্লক।

কিন্তু শেষমেশ বর্ষা কেমন হয় এবং মূল্যবৃদ্ধিতে তার প্রভাব কেমন পড়ে, আগে তা দেখে নিতে চাইছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। বিশেষত পেঁয়াজ-সহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের দর যেখানে এখনও বেশ চড়া। তার উপর শীঘ্রই সুদ বাড়াতে পারে ফেড রিজার্ভ। রফতানি বাজারে কব্জা পোক্ত করতে নিজেদের মুদ্রা ইউয়ানের দর কমাচ্ছে বেজিং-ও। এতে টাকার সাপেক্ষে বাড়ছে ডলারের দর। যা ফের উস্‌কে দিতে পারে মূল্যস্ফীতিকে। তাই এ সব কিছু না-দেখে তড়িঘড়ি সুদ ছাঁটাই করতে চান না রাজন। তবে তাঁর আশ্বাস, দেশের অর্থনীতির হাল ফিরতে শুরু করেছে। দেখা যাচ্ছে আশার আলো। এখনই ইউয়ান নিয়ে ভয়ের কারণ নেই। যদিও চিনের পথে হেঁটে অন্যান্য দেশও নিজেদের মুদ্রার দাম কমানোর লড়াইয়ে নামলে, তা সমস্যার হতে পারে বলে সাবধান করেছেন রাজন।

RBI Governor Raghuram Rajan bank central bank money
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy