নির্বাচনী প্রচারে আমেরিকাকে ‘সোনালি ভবিষ্যতের’ স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশ্বজুড়ে যুদ্ধ বন্ধ হবে, আমেরিকায় লগ্নি করবে সারা বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা, কাজ পাবেন সাধারণ মানুষ, মূল্যবৃদ্ধির হার কমবে, আমেরিকা আবার শ্রেষ্ঠ হবে। কিন্তু তিনি ক্ষমতায় আসার ছ’মাসের মধ্যে সরকারি পরিসংখ্যান উল্টো সুরে গাইতে শুরু করেছে। ট্রাম্প অবশ্য তাতে দমার পাত্র নন। তাঁর দাবি, ভূতপূর্ব প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নিয়োগ করা সরকারি আধিকারিকেরা তাঁর বিরুদ্ধে রাজনৈতিক চক্রান্ত করে চলেছেন। কিন্তু রিপাবলিকান শিবিরের ভিতরের গুঞ্জন, ট্রাম্পের অভিযোগ থাকতেই পারে। কিন্তু মানুষকে তো তা বোঝাতে হবে! চড়া আমদানি শুল্কের বিরূপ প্রভাব এখনই পুরোপুরি পড়বে না। জিনিসপত্রের দাম বেড়ে তার চাপ সাধারণ মানুষের উপরে পড়তে পড়তে ২০২৬। দুঃসংবাদ হল, সেটা নির্বাচনের বছর।
সম্প্রতি আমেরিকার আর্থিক কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত বিভিন্ন পরিসংখ্যান প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, এপ্রিলে ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর থেকে উৎপাদন ক্ষেত্রে ৩৭,০০০ কাজ কমেছে। মে থেকে শুরু করে তিন মাসে দেশে নিয়োগ হয়েছে ১৯ হাজার, ১৪ হাজার এবং ৭৩ হাজার। প্রাথমিক অনুমানের চেয়ে প্রায় ২.৫ লক্ষ কম। এই তথ্য প্রকাশ হওয়ার পরে ট্রাম্প সমাধান হিসেবে প্রথম যে কাজটি করেছেন, তা হল সংশ্লিষ্ট পরিসংখ্যানবিদকে সরানো। তাতে অবশ্য তথ্যের ভিড় হালকা হচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে, জুনে আমেরিকায় মূল্যবৃদ্ধির হার ছিল ২.৬%। লক্ষ্যমাত্রার (২%) চেয়ে অনেকটাই বেশি। বছরের প্রথম ছ’মাসে জিডিপি বৃদ্ধির হার ১.৩%। গত বছর একই সময়ে যা ২.৮% ছিল। ট্রাম্পের অবশ্য দাবি, অর্থনীতি দিব্যি চলছে।
আমেরিকার আর্থিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, ট্রাম্পের চড়া শুল্ক নীতি, কর্মী কমিয়ে খরচ কমানো ছাঁটাই এবং কর বিধি পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলি যদি মধ্যবিত্তের উন্নতি না ঘটাতে পারে, তা হলে তা রাজনৈতিক ঝুঁকির সৃষ্টি করবে। এটা এক ধরনের রাজনৈতিক জুয়া। অবশ্য শুল্ক সংক্রান্ত পদক্ষেপগুলির ফল জানা যাবে আরও কয়েক মাস পরে। রিপাবলিকান পার্টির এক কৌশলবিদ অ্যালেক্স কনান্ট বলেন, ‘‘মূল্যবৃদ্ধির উপরে ট্রাম্পের শুল্ক নীতির প্রভাব ২০২৬ সালের আগে বোঝা যাবে না। রিপাবলিকান পার্টির দুর্ভাগ্য, সেটি নির্বাচনের বছর।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)