Advertisement
১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
Retail Price

প্রশ্ন রেখেই লক্ষ্য পূরণ মূল্যবৃদ্ধির

সোমবার কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত মাসের হার ৩.৫৪% হওয়ায় এই প্রথম তাকে ৪ শতাংশে নীচে বাঁধার লক্ষ্য পূরণ হল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ অগস্ট ২০২৪ ০৮:৫৩
Share: Save:

অবশেষে প্রায় পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে নীচে নামল খুচরো মূল্যবৃদ্ধি। সোমবার কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত মাসের হার ৩.৫৪% হওয়ায় এই প্রথম তাকে ৪ শতাংশে নীচে বাঁধার লক্ষ্য পূরণ হল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের। যদিও এই ‘সাফল্য’ পণ্যের বাজারদর কমার কারণে নাকি আগের বছর জুলাইয়ে ৭.৪৪% মূল্যবৃদ্ধির উঁচু ভিতের নিরিখে হিসাব হওয়ায়, সেই প্রশ্নও তুলছে সংশ্লিষ্ট মহল। কারণ, সরকারি পরিসংখ্যানেই দেখা গিয়েছে গত মাসেও ডালের দাম বেড়েছে ১৪.৭৭%, চাল-গমের মতো খাদ্যশস্যের ৮.১৪%। আনাজের প্রায় ৭% (৬.৮৩%), ডিমের ৬.৭৬%, মাছ-মাংসের ৫.৯৭%, চিনি-বিস্কুটের মতো মুদিপণ্যের ৫.২২%, খাদ্য-পানীয়ের ৫.০৬%। বিশেষজ্ঞদের মতে, মূল্যবৃদ্ধি হার নামার স্বস্তি অন্তত বাজারে টের পাওয়া যায়নি। ফলে তা স্রেফ হিসাবের কারিকুরি কি না, সন্দেহ বহাল।

তবে এ দিন সুদ কমানোর দাবি জোরালো হয়েছে। বিশেষত জুনে শিল্পবৃদ্ধির হার প্রত্যাশার অনেক নীচে থমকে গিয়ে ৪.২% হওয়ায়। যা পাঁচ মাসে সর্বনিম্ন। কারখানায় উৎপাদন শ্লথ হয়ে দাঁড়িয়েছে ২.৬%।

এ দিন সরকারি মহলের দাবি, খাদ্যপণ্যের দরে কিছুটা স্বস্তি মিলেছে বলেই জুলাইয়ে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ৫.৪২ শতাংশে নেমেছে। জুনে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ছিল ৯ শতাংশের বেশি। তবে এ ক্ষেত্রেও সেই উঁচু ভিতের প্রসঙ্গ তুলছেন অনেকে। বলছেন, চাল-ডাল-গম থেকে আনাজ-মাছ-মাংস এখনও যথেষ্ট চড়া। ফলে গত বছরের জুলাইয়ে ১১.৫১% খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির নিরিখে এ বার তা যতটা কম দেখতে লাগছে, আদৌ ততটা কম নয় হয়তো। যদি সন্দেহ সত্যি হয়, তা হলে সুদ কমার সুযোগও কম। কারণ, তাতে মূল্যবৃদ্ধি ধারাবাহিক ভাবে মাথা না-ও নামাতে পারে। দাম কমা নিয়ে নিশ্চিত না হয়ে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সিদ্ধান্ত নেবে না।

অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারের বক্তব্য, গত বছরের জুলাইয়ে মূল্যবৃদ্ধি ছিল চড়া। ফলে তার নিরিখে এ বার কম দেখাচ্ছে। দাম বৃদ্ধির হার এতটা কমলে কেনাকাটায় যে স্বস্তি পাওয়ার কথা, সেটা উপলব্ধি করা যাচ্ছে না। ফলে বিষয়টা কতটা স্বচ্ছ ও বাস্তবকে
কতটা তুলে ধরছে, সেই প্রশ্ন থাকে।
অর্থনীতিবিদ অজিতাভ রায়চৌধুরী বলছেন খামখেয়ালি আবহাওয়ার কথা। তাঁর দাবি, খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি নামাতেই সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি কমেছে। কিন্তু বর্ষায় অতিবৃষ্টির প্রভাবেও ফলন মার খেতে পারে। সেটা হলে খাবারের দাম বাড়বে। ফলে সুদে সুরাহার জন্য অপেক্ষা করতে হতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শিল্পোৎপাদন এখন বেশি হওয়ার কথা। কেন্দ্র দাবি করছে চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু বাস্তব তা নয়। অজিতাভবাবুর দাবি, জোগান কম হচ্ছে ভূ-রাজনৈতিক সমস্যায়। যা শিল্প শ্লথ হওয়ার অন্যতম কারণ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE