এক সপ্তাহ আগে আরএসএসের সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত কানপুরে গিয়ে ‘স্বদেশি পণ্য’-এর পক্ষে সওয়াল করে বলেছিলেন, দেশের টাকা দেশের সীমান্তের মধ্যেই থাকতে হবে। দেশের উন্নতির কাজে তা ব্যবহার করতে হবে।
এই নীতি মেনেই এ বার সঙ্ঘ পরিবারের দুই সংগঠন স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ এবং ভারতীয় কিসান সঙ্ঘ মোদী সরকারের উপরে প্রবল চাপ তৈরি করল। তাদের দাবি, আমেরিকার ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তিতে কোনও ভাবেই দেশের কৃষি ও দুগ্ধজাত পণ্য ক্ষেত্র আমেরিকার জন্য খুলে দেওয়া যাবে না। দুই সংগঠনের এই দাবিতে মোদী সরকার বিপাকে পড়েছে।
এক দিকে কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রক ৯ জুলাইয়ের আগে আমেরিকার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তির অন্তত প্রথম পর্ব চূড়ান্ত করে ফেলতে চাইছে। কারণ, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দিল্লির আমদানি শুল্কের জবাবে ভারতীয় পণ্যের উপরে পাল্টা চড়া শুল্ক ঘোষণা করেও তা ৯ জুলাই পর্যন্ত স্থগিত রেখেছে। তার আগে বাণিজ্য চুক্তিতে দর কষাকষির সময়ে আমেরিকা চাইছে, তাদের দেশের কৃষি, দুগ্ধজাত পণ্য থেকে চিংড়ির জন্য ভারতের বাজার খুলে দেওয়া হোক। কিন্তু মোদী সরকারের কাছে সঙ্ঘ পরিবারের স্বদেশি জাগরণ মঞ্চের সওয়াল, দেশের জনসংখ্যার প্রায় ৭০ কোটি মানুষ কৃষি, দুগ্ধ ক্ষেত্রের উপরে নির্ভরশীল। জিডিপি-র প্রায় ১৬% আসে এই ক্ষেত্র থেকে। চুক্তির সময়ে তা মাথায় রাখতে হবে।
কেন্দ্রীয় বাণিজ্য মন্ত্রকের এক শীর্ষকর্তা বলেন, ‘‘বাণিজ্য চুক্তিতে দুই পক্ষকেই কিছু না কিছু ছাড় দিতে হয়। আমরা যেমন চাইছি, আমাদের যে সব ক্ষেত্রে বেশি শ্রমিক নিয়োগ হয়, সেই সব শ্রমনিবিড় ক্ষেত্রের জন্য আমেরিকা বেশি করে তাদের বাজার খুলে দিক।’’
সঙ্ঘ পরিবারের কৃষক সংগঠন ভারতীয় কিসান সঙ্ঘের অভিযোগ, নীতি আয়োগ ওয়াশিংটনের চাপের সামনে মাথা নত করছে। আমেরিকার চা, কফি, গোলমরিচ থেকে সয়াবিন তেল, আপেল, পেস্তা, বাদামের জন্য ভারতের বাজার খুলে দেওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছে নীতি আয়োগ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)