শুক্রবার ২৮৪.৫৬ পয়েন্ট পড়ার পরে সোমবার ফের উঠল শেয়ার বাজার। এ দিন সেনসেক্স বাড়ল ২১৬.৬৮ পয়েন্ট। দাঁড়াল ২৫,৭৩৫.৯০ অঙ্কে। গত ছ’দিনের লেনদেনে এই নিয়ে পাঁচ দিনই উঠল সূচক। যদিও এই বৃদ্ধি বাজারে স্থিতিশীলতা এনেছে বলে মানতে পারছেন না উদ্বিগ্ন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের মতে, বাজার এখনও চূড়ান্ত অনিশ্চিত। বাজেটের আগে স্থিতিশীলতা আসার সম্ভাবনা কম ।
এ দিন ডলারের সাপেক্ষে টাকার দামও বেড়েছে ৫ পয়সা। এক ডলার হয়েছে ৬৬.৩৫ টাকা।
মূলত পড়তি বাজারে শেয়ার কেনার হিড়িকেই সূচক বেড়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর এস কে কৌশিক বলেন, ‘‘বাজারের হাল খারাপ দেখে লগ্নিকারীরা টানা শেয়ার বেচেছেন। ফলে সূচকের পতনের পাশাপাশি বেশ কিছু ভাল সংস্থার শেয়ার অনেক কম দামে মিলছে। পড়তি বাজারে লগ্নিকারীরা এই সুযোগ নিচ্ছেন।’’
এ দিন অবশ্য সূচকের ওঠায় দেউলিয়া বিল সংসদে পেশ হওয়াটাও ইন্ধন জুগিয়েছে বলে বাজার সূত্রে খবর। লগ্নিকারীদের ধারণা, বিলটি আইনে পরিণত হলে তা শেয়ার বাজারে লগ্নিকে উৎসাহ দেবে। অন্য দিকে, আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় বিভিন্ন শেয়ার সূচকের মুখই এ দিন ছিল ঊর্ধ্বমুখী। তার জেরও পড়েছে দেশে।
সূচক উঠলেও বাজারের অনিশ্চয়তা কাটা নিয়ে অবশ্য ইতিবাচক উত্তর দিতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা। প্রবীণ বাজার বিশেষজ্ঞ অজিত দে বলেন, ‘‘বাজেটের আগে স্থিতিশীলতা আসার সম্ভাবনা কম। ২৪ ডিসেম্বর সংসদের চলতি অধিবেশন শেষ। তার প্রায় দু’মাস পরে শুরু বাজেট অধিবেশন। এই দু’মাস বেশি অনিশ্চিত থাকবে বাজার। তবে এর মধ্যে দেশে বা বিদেশে বড় কোনও অঘটন না-ঘটলে, খুব বড় উত্থান-পতনের সম্ভাবনা কম।’’ অজিতবাবুর বক্তব্য, ‘‘বিভিন্ন শিল্পেই একটি ‘সাইক্ল’ থাকে। অর্থাৎ একটি বড় সময় ধরে শিল্পের হাল খারাপ যাওয়ার পরে ফের ভাল সময় ফিরে আসে। ধাতু শিল্পে বেশ কিছু দিন মন্দা চলছিল। এখন সুদিন ফিরছে। তাই ওই সব শিল্পের শেয়ারের দামও বাড়ছে। এই ধরনের ওঠা-পড়ার প্রভাব খুব স্বাভাবিক কারণেই পড়তে শুরু করেছে সূচকের উপর।’’
তবে কৌশিক মনে করেন, ‘‘অনিশ্চিত বাজারে দামের সংশোধন’ এখন চলবে। বাজারে স্থিতিশীলতা না-থাকায় শেয়ারের দাম কমে সূচকের পতন যেমন ডেকে আনবে, তেমনই অনেক সময়ে দাম বেশি নীচে চলে গেলে কারেকশন ঊর্ধ্বমুখীও হতে পারে। তখন চড়বে সূচক। মনে হয় সেনসেক্স আরও ৫০০ পয়েন্ট বাড়বে। তার পর ফের পড়ার সম্ভাবনা। তবে বাজেট পেশের সময় এলে বাজারে শুরু হবে নানা জল্পনা। তার জেরে ওঠা-নামা বাড়বে।’’ অজিতবাবুর মতো কৌশিকেরও ধারণা, বাজেটে শেয়ার বাজারের জন্য ভাল রসদের ব্যবস্থা করা হলে আসতে পারে স্থিতিশীলতা। তবে বিদেশি লগ্নিকারীরা এখনও ভারতে নতুন করে লগ্নির দিকে তেমন ভাবে না-হাঁটলেও তাদের শেয়ার বিক্রির বহর অনেকটাই কমেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy