Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

সূচক টানা বাড়লেও সংশয় কাটেনি বাজারের স্থিতি নিয়ে

টানা বাড়ছে সূচক। মঙ্গলবারও সেনসেক্স বেড়েছে ১৪৭.৩৩ পয়েন্ট। বাজার বন্ধের সময়ে সূচক থিতু হয় ২৬,৯৩২.৮৮ অঙ্কে। একই ভাবে বেড়েছে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নিফ্‌টিও। এ দিন বাজার বন্ধের সময়ে আগের দিনের থেকে ৩৩.৬০ পয়েন্ট বেড় নিফ্‌টি দাঁড়ায় ৮১৫২.৯০ অঙ্কে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৫ ০২:০৩
Share: Save:

টানা বাড়ছে সূচক। মঙ্গলবারও সেনসেক্স বেড়েছে ১৪৭.৩৩ পয়েন্ট। বাজার বন্ধের সময়ে সূচক থিতু হয় ২৬,৯৩২.৮৮ অঙ্কে। একই ভাবে বেড়েছে ন্যাশনাল স্টক এক্সচেঞ্জের সূচক নিফ্‌টিও। এ দিন বাজার বন্ধের সময়ে আগের দিনের থেকে ৩৩.৬০ পয়েন্ট বেড় নিফ্‌টি দাঁড়ায় ৮১৫২.৯০ অঙ্কে।

এ দিকে টানা পাঁচ দিন ওঠার পরে এ দিন টাকার দাম পড়েছে। ডলারের সাপেক্ষে টাকার দাম পড়েছে ১২ পয়সা। ফলে বিদেশি মুদ্রার বাজার বন্ধের সময়ে প্রতি ডলারের দাম এসে ছিল ৬৫.৪১ টাকা।

এই নিয়ে গত পাঁচ দিন ধরে টানা বাড়ছে শেয়ার বাজার। আর ওই পাঁচ দিনেই সেনসেক্সের উত্থান ১৩০০ পয়েন্টের বেশি। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সুদের হার কমানোর পর থেকেই শেয়ার বাজারকে ঘিরে লগ্নিকারীদের মনোভাব বা সেন্টিমেন্ট তুঙ্গে উঠেছে। শীর্ষ ব্যাঙ্কের নির্দেশে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলিও সুদের হার কমাতে শুরু করেছে। লগ্নিকারীদের আশা, শিল্প ক্ষেত্রে এর ইতিবাচক প্রভাব ক্রমশ পরিলক্ষিত হবে।

বিশেষ করে সুখের খবর যে, আমেরিকা আপাতত সুদ বাড়ানোর পথে হাঁটছে না বলে ধারণা জোরদার হয়েছে। এর ফলে ভারতের বাজারে ফের বিনিয়োগের বহর বাড়াতে শুরু করেছে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি। সংবাদ সংস্থা পিটিআইযের খবর, ওই সব সংস্থা গত সোমবারই ভারতের বাজারে ৬৫০ কোটি টাকার শেয়ার কিনেছে।

সূচক দ্রুত বাড়লেও বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে বলে জোরের সঙ্গে দাবি করতে পারছেন না বিশেষজ্ঞরা। কারণ, তাঁদের মতে, যে-কোনও দিনই শেয়ারের দামে বড় মাপের সংশোধন বা ‘কারেকশন’ আসতে পারে।

বিশেষজ্ঞদের এই ধারণার কারণ হল, শেয়ারের দাম বেড়ে যে-সীমা ছুঁয়েছে, তাতে হাতের শেয়ার বিক্রি করে মুনাফার টাকা তুলে নেওয়ার ভাল সুযোগ লগ্নিকারীদের সামনে ইতিমধ্যেই এসে গিয়েছে। তারা যে-কোনও সময়েই সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারেন বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

যেমন, ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন ডিরেক্টর এস কে কৌশিক মনে করেন, ‘‘বাজার আরও কয়েক দিন উঠবে বলেই আমার ধারণা। কিন্তু তার পরেই বড় মাপের সংশোধন আসার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমান অনিশ্চিত বাজারে মুনাফার টাকা তুলে নেওয়ার ভাল সুযোগ চট করে লগ্নিকারীরা হাতছাড়া করবেন বলে আমার মনে হয় না।’’

তবে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনেকেরই ধারণা, ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাস থেকে বাজারে স্থিতিশীলতা আসতে শুরু করবে। কেন এমনটা ভাবছেন? এর উত্তরে বিশেষজ্ঞরা একাধিক কারণ দেখিয়েছেন। যেমন, ডিসেম্বর মাসের পরে বিভিন্ন শিল্প ও বাণিজ্যিক সংস্থার তৃতীয় ত্রৈমাসিকের আর্থিক ফলাফল প্রকাশিত হবে। আশা করা হচ্ছে, তা আগের দুই ত্রৈমাসিকের থেকে ভাল হবে।

তা ছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম ইতিমধ্যেই অনেকটা কমে গিয়েছে। এর ফলে ভারতের বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি কমার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজন এ বার ঋণনীতির পর্যালোচনা করার সময়ে দেশের আর্থিক বৃদ্ধি এবং মূল্যবৃদ্ধির হারের ব্যাপারে আশার বাণীই শুনিয়েছেন।

কৌশিকের মতো বাজার বিশেষজ্ঞরা টাকার দাম নিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন। তাঁদের ধারণা, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশ এখন আর্থিক সমস্যায় ভুগছে। এর ফলে মার্কিন ডলারের উপর নির্ভরশীলতা বাড়তে শুরু করেছে বিশ্ব জুড়ে। তাই ডলারের দাম বাড়ার যথেষ্ট সম্ভাবনা রয়েছে। ডলারের দাম বাড়লে আমদানি খাতে ভারতের খরচ বাড়বে। যার বিরূপ প্রভাব দেশের বাণিজ্য ঘাটতির উপর পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE