ঋণে জর্জরিত আদানি গোষ্ঠীকে পুঁজি জোগাতে মোদী সরকার এলআইসি-কে সেখানে লগ্নি করতে চাপ দিয়েছিল বলে অভিযোগ তুলেছে আমেরিকার সংবাদমাধ্যম। এ নিয়ে দেশে চড়তে থাকা উত্তাপের মধ্যেই এলআইসি দাবি করে, খবর মিথ্যে। কোনও চাপ ছিল না। রবিবার আর এক মহল দাবি করল, ওই গোষ্ঠীতে সম্প্রতি শুধু এলআইসি পুঁজি ঢালেনি। তাদের থেকেও বেশি ঢেলেছে আমেরিকারই একাধিক জীবন বিমা সংস্থা। ফলে সে দেশের সংবাদমাধ্যমের যুক্তি ধোঁপে টেকে না।
সম্প্রতি ওয়াশিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে দাবি, চলতি বছরের মে মাসে আদানিদের সুবিধার জন্য এলআইসি-কে সেখানে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা লগ্নির প্রস্তাব দিয়েছিল অর্থ মন্ত্রক এবং নীতি আয়োগ। আদানি পোর্টস ৫০০০ কোটি টাকার বন্ড ছাড়ে। যা কিনে নেয় এলআইসি। এ দিন সূত্র জানিয়েছে, তার এক মাস পরে আমেরিকার আথেন ইনশিয়োরেন্সের নেতৃত্বে বেশ কিছু বিমা সংস্থার এক গোষ্ঠী আদানি পরিচালিত মুম্বই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ঋণপত্রের মাধ্যমে ঢালে ৬৬৫০ কোটি টাকা। গত ২৩ জুন আথেনের মূল সংস্থা অ্যাপোলো গ্লোবাল ম্যানেজমেন্ট তা জানায়। আগেও ওই বিমানবন্দরে পুঁজি ঢেলেছিল সংস্থাটি। পাশাপাশি ডিবিএস ব্যাঙ্ক, ডিজ়ি ব্যাঙ্ক, রাবোব্যাঙ্ক এবং ব্যাঙ্ক সাইনোপ্যাকের থেকে ২২০০ কোটি টাকা পুঁজি জোগাড় করেছিল আদানি গ্রিন এনার্জি।
এলআইসি সূত্রের বক্তব্য, দেশের প্রথম সারির ৫০০টি সংস্থায় লগ্নি রয়েছে তাদের। সংস্থার আর্থিক ভিত এবং ব্যবসার অবস্থা পর্যালোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ২০১৪-এ লগ্নি ১.৫৬ লক্ষ কোটি টাকা ছিল। ১০ গুণ বেড়ে এখন ১৫.৬ লক্ষ কোটি। সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কর্ণধার গৌতম আদানির ‘বন্ধুত্ব’ নিয়ে চর্চা রয়েছে। এর আগে আমেরিকার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চ আদানিদের বিরুদ্ধে কৃত্রিম ভাবে শেয়ার দর বৃদ্ধির অভিযোগ তোলার পরে কিংবা আমেরিকার আদালতে তাদের বিরুদ্ধে ঘুষ দিয়ে বরাত আদায়ের অভিযোগ ওঠায় রিরোধী শিবিরের তোপের মুখে পড়ে কেন্দ্র। সরকারি মদতে সুবিধা পাওয়ার প্রশ্ন মাথাচাড়া দেয়। এ বার এলআইসি-র টাকা আদানিদের দিতে কেন্দ্রের সুপারিশ সামনে আসার পরে তাই ফের অস্বস্তিতে নয়াদিল্লি।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)