অতন্দ্র: ওয়াশিংটনে হোয়াইট হাউসের সামনে ইউএস সিক্রেট সার্ভিসের অফিসাররা। নিরাপত্তা সামলাচ্ছেন প্রশাসনিক শাটডাউনের মধ্যেই। বেতন অবশ্য এখনও অমিল। রয়টার্স
মেক্সিকো সীমান্তে পাঁচিল তোলার জেদে অটল থাকতে গিয়ে কি শেষ পর্যন্ত মার্কিন অর্থনীতির বৃদ্ধির হার শূন্য শতাংশে নামিয়ে আনবেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প? এই আশঙ্কা খোদ হোয়াইট হাউসের আর্থিক উপদেষ্টা কমিটির চেয়ারম্যান কেভিন হ্যাসেটেরই।
মার্কিন সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, পরিস্থিতি দ্রুত না বদলালে এবং পুরো প্রথম ত্রৈমাসিকেই মার্কিন প্রশাসনের কাজকর্মে তালা পড়ে থাকলে (শাটডাউন), ওই তিন মাসে বৃদ্ধি নামবে শূন্য শতাংশ কিংবা তার খুব কাছাকাছি। যদিও সমস্যা মিটলে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকেই তা ফের ৪-৫ শতাংশে পৌঁছতে পারে বলে আশ্বাস তাঁর। হ্যাসেটের আশ্বাস, এই সমস্যা সাময়িক। মার্কিন অর্থনীতির ভিতও মজবুত। ফলে ২০২০ সালের মধ্যে ফের মন্দার মেঘ ঘনানোর সম্ভাবনা প্রায় শূন্য বলেই মনে করেন তিনি।
আইএসআই-কলকাতার অর্থনীতির অধ্যাপক অভিরূপ সরকারেরও অভিমত, মার্কিন অর্থনীতির আয়তন বিপুল। তাই ২.৫-৩ শতাংশ বৃদ্ধিই তার চাকা গড়ানোর পক্ষে যথেষ্ট। ফলে একটি ত্রৈমাসিকে ওই হার শূন্যে নামলেও তা ট্রাম্পের দেশের মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ার মতো হবে না।
তবে একই সঙ্গে অভিরূপবাবু বলেন, আমেরিকা মূলত চাহিদা নির্ভর অথর্নীতির দেশ। তার উপরে আর্থিক অসাম্য প্রবল। এই পরিস্থিতিতে সেখানে সাধারণ মানুষের হাতে ডলারে টান (যেমন, এখনই সেখানে বেতন পাচ্ছেন না ৮ লক্ষ সরকারি কর্মী) পড়ার অর্থ চাহিদায় ভাটার আশঙ্কা। যা দীর্ঘ মেয়াদে টোল ফেলতে পারে অর্থনীতিতে। মার্কিন প্রশাসনের কাজকর্মের বড় অংশে তালা ঝুলে থাকা সে দেশের অর্থনীতির ক্ষতি করছে বলে চিন্তিত ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্ক জে পি মর্গ্যান চেজও।
ভারতে এর প্রভাব প্রসঙ্গে অভিরূপবাবুর দাবি, আমেরিকার বৃদ্ধি ঢিমে হওয়া ভারতের পক্ষেও সুখবর হবে না। কারণ, এ দেশের রফতানির বড় গন্তব্য সেটি। তবে ভারতের রফতানি চোট খাওয়ার মতো পরিস্থিতি মার্কিন অর্থনীতিতে আদৌ তৈরি হচ্ছে কি না, তা আর একটু আঁচিয়ে দেখার পক্ষপাতী তিনি।
মেক্সিকো সীমান্তে দেওয়াল তুলতে ৫৭০ কোটি ডলার বাজেট বরাদ্দ চেয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু ডেমোক্র্যাটরা বেঁকে বসায় এক মাসেরও বেশি বন্ধ আমেরিকার বহু প্রশাসনিক কাজকর্ম। সরকারি কাজকর্ম চালানোর বাড়তি বরাদ্দও পাশ হয়নি। বেতন পাচ্ছেন না প্রায় ৮ লক্ষ সরকারি কর্মী। নিরাপত্তা রক্ষীর অভাবে বন্ধ বহু দর্শনীয় স্থান। এই পরিস্থিতি আরও কিছু দিন বহাল থাকলে, তা মার্কিন অর্থনীতির উপরে থাবা বসাতে শুরু করবে বলে আশঙ্কা হ্যাসেটের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy