Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

এডিবি-র ঋণ হাতছাড়া রাজ্যের

ঋণ দিতে রাজি ছিল এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্ক (এডিবি)। নিতেও আপত্তি ছিল না নবান্নের। কিন্তু ছাড়পত্র দেয়নি কেন্দ্র। কারণ, বিদেশি ঋণ পাওয়ার জন্য তারা যে সব ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার তালিকায় রেখেছে, সেগুলি রাজ্যের থেকে আলাদা।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৭ ০২:৪০
Share: Save:

ঋণ দিতে রাজি ছিল এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্ক (এডিবি)। নিতেও আপত্তি ছিল না নবান্নের। কিন্তু ছাড়পত্র দেয়নি কেন্দ্র। কারণ, বিদেশি ঋণ পাওয়ার জন্য তারা যে সব ক্ষেত্রকে অগ্রাধিকার তালিকায় রেখেছে, সেগুলি রাজ্যের থেকে আলাদা। ফলে ২,৩০০ কোটি টাকার ঋণ পাওয়া হল না পশ্চিমবঙ্গের। আর আড়াই বছরেও অনুমতি আদায় করতে না-পারায় এডিবি-র ওই বরাদ্দ এ বার অন্য দেশে চলে যেতে পারে বলে অভিযোগ নবান্ন সূত্রের।

বিভিন্ন দফতর বা অধিগৃহীত সংস্থায় উদ্বৃত্ত কর্মীদের স্বেচ্ছাবসর, বিভিন্ন বিভাগের পরিকাঠামোয় বদল এবং সরকারি ব্যবস্থায় আর্থিক শৃঙ্খলা আনার মতো সংস্কার কর্মসূচির জন্য এডিবি রাজ্যকে ২,৩০০ কোটি টাকা ঋণ দিতে রাজি হয়। অর্থ দফতর সূত্রে খবর, এটি ছিল তাদের দ্বিতীয় দফার ঋণ। প্রথম দফার ২,৮০০ কোটি এসেছিল বাম জমানায়।

অভিযোগ


পাওয়া যায়নি কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের ছাড়পত্র


কাজ হয়নি প্রধানমন্ত্রীকে মমতার আর্জিতেও

কারণ


বাজেটে নির্দিষ্ট বিদেশি ঋণের বহর বাড়ানোয় কেন্দ্রের আপত্তি


ঋণের টাকা ব্যবহারে কেন্দ্রের অগ্রাধিকারের সঙ্গে রাজ্যের কর্মসূচি না-মেলা

প্রস্তাবিত ঋণ


২,৩০০ কোটি টাকা

এ দেশে কোনও রাজ্যকে বিদেশি সংস্থার ঋণ বা অনুদান পেতে হলে কেন্দ্রীয় অর্থনীতি বিষয়ক দফতরের ছাড়পত্র পেতে হয়। নবান্নের এক কর্তা বলেন, ‘‘বার বার দিল্লির সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছি। এই টাকা পেলে সুবিধা হত। কিন্তু এডিবি চাইলেও অর্থ মন্ত্রক এই ঋণে ছাড়পত্র দিতে রাজি হয়নি।’’

প্রশাসনিক সূত্র জানিয়েছে, এর কারণ মূলত দু’টি। এক, বছরে কত টাকা বিদেশি সংস্থার কাছ থেকে ঋণ নেওয়া হবে, তা নির্দিষ্ট করা থাকে কেন্দ্রীয় বাজেটে। তাই পশ্চিমবঙ্গকে সেই অনুমতি দিয়ে দিল্লি বিদেশি ঋণের বহর বাড়াতে চায়নি। আর দুই, এ ধরনের ঋণের ক্ষেত্রে পরিকাঠামো তৈরির মতো যে-সমস্ত ক্ষেত্রকে কেন্দ্র অগ্রধিকার দিচ্ছে, সেগুলির সঙ্গে রাজ্যের কর্মসূচি সঙ্গতিপূর্ণ নয়।

অথচ রাজ্য এই ঋণ পেতে এতই আগ্রহী ছিল যে, প্রধানমন্ত্রীর কলকাতা সফরে রাজভবনে দেখা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ নিয়ে অনুরোধ করে তাঁর হাতে একটি চিঠি তুলে দিয়েছিলেন। এডিবি তিন কিস্তিতে টাকা দেওয়ার কথা বলে। রাজ্যের তাতেও আপত্তি ছিল না। রাজ্যের এক কর্তার কথায়, ‘‘ঋণের টাকায় কয়েক হাজার কর্মীকে স্বেচ্ছাবসর দিতে পারলে বেতনের চাপ কমত। কিন্তু তা আর হচ্ছে না।’’ অর্থ দফতর কার্যত হাল ছেড়ে দিয়েছে। কর্তাদের আক্ষেপ, দিল্লির ছাড়পত্র আড়াই বছরে মেলেনি। আর সে আশা নেই। ফলে ঋণও মিলবে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ADB
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE