পেট্রল-ডিজেলে সেস বসছে। ধনীদের আয়করে বসছে সারচার্জ। আর সেই আয়ের পুরোটাই ঘরে তুলছে মোদী সরকার। কারণ এক টাকা আয় হলে রাজ্যগুলির সঙ্গে ৪২ পয়সা ভাগ করে নেওয়ার নিয়ম সেস-সারচার্জে খাটে না।
উল্টো দিকে, কেন্দ্রের থেকে রাজ্যগুলিকে দেওয়া অর্থ অঙ্কের হিসেবে কিছুটা করে বাড়ছে ঠিকই। কিন্তু আগে যে হারে বাড়ত, মোদী জমানার পাঁচ বছর পেরোনোর পরে আর সেই হারে বাড়তে দেখা যাচ্ছে না তাকে। ফলে সংসদে বিরোধীদের তোপের মুখে পড়ছে কেন্দ্র।
অর্থ কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, কেন্দ্রের আয় করা ১০০ টাকার মধ্যে ৪২ টাকা রাজ্যগুলিকে ভাগ করে দিতে হয়। এর বাইরেও কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যগুলিকে অর্থ দেয় তারা। কিন্তু অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের বাজেট বলছে, প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী চলতি অর্থবর্ষে সব মিলিয়ে ১৩.২৯ লক্ষ কোটি টাকা রাজ্যগুলিকে দেওয়া হবে। গত অর্থবর্ষের তুলনায় যা ৬.৬% বেশি। অথচ আগের অর্থবর্ষে তাদের প্রাপ্য বেড়েছিল প্রায় ১৫% হারে।
সংসদে বিরোধীরা অভিযোগ তুলেছেন, কেন্দ্রীয় প্রকল্প রূপায়ণে রাজ্যকে দেওয়া অর্থে কাটছাঁট করা হচ্ছে। জবাবে আজ নির্মলা বলেন, ইউপিএ সরকারের শেষ বছরে যেখানে কেন্দ্রীয় ও অন্যান্য প্রকল্পে সাহায্য বাবদ রাজ্যগুলিকে ২.৫৫ লক্ষ কোটি দেওয়া হয়েছিল, সেখানে এই বাজেটে বরাদ্দ ৩.৮৯ লক্ষ কোটি। কংগ্রেস নেতাদের অবশ্য কটাক্ষ, এ ভাবে কোনও খয়রাতি করছেন না অর্থমন্ত্রী।
তবে নির্মলা যা-ই বলুন, অর্থ মন্ত্রকের পরিসংখ্যানই বলছে, মোদী সরকারের প্রথম বছরে রাজ্যের বরাদ্দ প্রায় ২৮% বেড়েছিল। তা ধাপে ধাপে গত অর্থবর্ষে নামে ১৫ শতাংশে। আর এ বার ১০ শতাংশেরও কম।
বিরোধীদের অভিযোগ, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো লঙ্ঘন করেই সেস-সারচার্জ বসাচ্ছে কেন্দ্র। গত বছরের বাজেটে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি পেট্রল-ডিজেলে ২ টাকা উৎপাদন শুল্ক কমিয়ে, আবার ২ টাকা সেস বসান। এ বার নির্মলা অতিরিক্ত বিশেষ উৎপাদন শুল্ক ও সেস বসিয়েছেন। ধনীদের আয়করে চাপিয়েছেন সারচার্জ। কোনওটাই রাজ্যের সঙ্গে ভাগ করতে হবে না। এ ভাবে পুরো আয় নিজের ঝোলায় পোরা নিয়ে উঠে আসা প্রশ্নের কোনও জবাব অবশ্য দেননি অর্থমন্ত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy