ভোডাফোন আইডিয়া (ভি) দাবি করেছিল, সরকার পাশে না দাঁড়ালে ঝাঁপ বন্ধ করে তাদের দেউলিয়া আদালতে যেতে হবে। ফলে সত্যিই সেটা হলে তাদের ২০ কোটি গ্রাহক কোথায় যাবেন, প্রশ্ন ওঠে। এই পরিস্থিতিতে সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্ট সরকারকে ভি-র বকেয়ার মকুব করা নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে বলে। এই রায়ের পরে সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি ছিল, কী মকুবের কথা বলা হয়েছে বোঝা যাচ্ছে না। সোমবার তা স্পষ্ট করল শীর্ষ আদালত। জানাল, কেন্দ্র অর্থাৎ টেলিকম বিভাগ (ডট) চাইলে ভি-র পুরো বকেয়াটাই মকুব করার কথা চিন্তা করে দেখতে পারে। বকেয়া, তার উপর জরিমানা এবং জরিমানার উপর সুদ— সংস্থার না মেটানো সব কিছু নিয়েই বিষয়টি ভেবে দেখা যায়। ভি ৯৪৫০ কোটি টাকা বকেয়া মকুবের যে আবেদন করেছিল, তারই শুনানি প্রসঙ্গে এই বক্তব্য সুপ্রিম কোর্টের বিচারের ভারপ্রাপ্ত বেঞ্চ-এর।
গত মার্চ পর্যন্ত ভি-র মোট বকেয়া ছিল প্রায় ২.৪ লক্ষ কোটি টাকা। এর মধ্যে স্পেকট্রাম ব্যবহারের খরচ-সহ এজিআর বকেয়া, জরিমানা এবং তার উপর সুদ মিলিয়ে কেন্দ্র পায় ১.৯৯ লক্ষ কোটি। সংস্থার আবেদন অনুযায়ী, কেন্দ্র এর আগে ভি-র কিছুটা বকেয়া মকুব করে ৪৯% অংশীদারি হাতেও নিয়েছে। তবে এর বেশি দায়িত্ব নিতে নারাজ তারা। তার পরেই সংস্থা আরও প্রায় ৯৪৫০ কোটি টাকা বকেয়া মকুবের আবেদন জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে যায়। সেই সংক্রান্ত নির্দেশে, সংস্থার গ্রাহকের কথা মাথায় রেখে কেন্দ্রকে ভি-র মূল বকেয়া পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দেয় আদালত।
সূত্রের খবর, এই অঙ্ক ছিল মূলত বকেয়ার উপর জরিমানা ও তার উপর ধার্য হওয়া সুদের। শুধু স্পেকট্রাম বাবদ বকেয়াই রয়েছে ৮৩ হাজার কোটি টাকার বেশি। আর সব রকম বকেয়া মিলে সরকার সংস্থার কাছ থেকে প্রায় ২ লক্ষ কোটি টাকা পায়। সুপ্রিম কোর্টের এ দিনের এই সংশোধনীর পরে স্পষ্ট, সরকার চাইলে এই সমগ্র অঙ্কই মকুব করতে পারে। তবে এই মকুবের পরামর্শ শুধু ভি-র জন্যই প্রযোজ্য। ইতিমধ্যেই আবেদন করা এয়ারটেল কিংবা টাটা টেলিসার্ভিসেসের জন্য নয়, জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সংশ্লিষ্ট বেঞ্চের যুক্তি, বিষয়টি সম্পূর্ণ কেন্দ্রের আওতাধীন। এর সঙ্গে নীতিগত একটি বিষয় জড়িয়ে। ফলে সরকার সম্পূর্ণ অঙ্কও মকুবের বিষয়টি ভাবতে পারে। সবটাই তাদের ইচ্ছাধীন। সরকারি সূত্রের খবর, বিষয়টি নিয়ে কোনও পদক্ষেপ করার আগে আইনি পরামর্শ নিচ্ছে টেলিকম বিভাগ। যথাসময়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)