Advertisement
E-Paper

শীতে চা তৈরি বন্ধে কড়া পর্ষদ

শীতের মরসুমে চা পাতার মান অনেকটাই পড়ে যায়। তাই সাধারণত তখন উৎপাদন বন্ধ রেখে বাগান এবং কারখানা রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হয়।

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত

শেষ আপডেট: ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:২০
—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

শীতের মরসুমে চা পাতার মান অনেকটাই পড়ে যায়। তাই সাধারণত তখন উৎপাদন বন্ধ রেখে বাগান এবং কারখানা রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করা হয়। চা শিল্পে তেমনটাই দস্তুর। কিন্তু অনেক বাগান তা না করে সেই নিম্নমানের পাতা দিয়ে চা তৈরি করছে বলে অভিযোগ। ফলে চায়ের গুণগত মান কমে। পাশাপাশি, বাজারে বাড়তি জোগানের ফলে চা ব্যবসা মার খাওয়ারও আশঙ্কা থাকে। তাই ডিসেম্বর থেকে শীতের সারা মরসুমে উত্তরবঙ্গ ও অসমের সব বাগান ও কারখানা বাধ্যতামূলক ভাবে বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে টি বোর্ড।

টি বোর্ডের ডেপুটি চেয়ারম্যান অরুণ কুমার রায় জানান, সম্প্রতি বোর্ডের পরিচালন পর্ষদের বৈঠকে সর্বসম্মত ভাবে ওই সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী ৮ ডিসেম্বর থেকে বাগান ও কারখানা বন্ধ থাকবে। এর দু’সপ্তাহের মধ্যে বাগানে মজুত থাকা সমস্ত চা স্বীকৃত গুদামে পাঠিয়ে দিতে হবে। কোনও চা মজুত করা যাবে না। সেই সঙ্গে বোর্ডের কর্তারা জানান, উত্তরবঙ্গ ও অসমে শীতের মরসুম শেষ হলে এক এক অঞ্চলে এক এক সময়ে উৎপাদন শুরু হয়। সেই রেওয়াজ মেনেই বাগানগুলি খুলবে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রের অভিযোগ, চা উৎপাদনের সময়ে যে বর্জ্য তৈরি হয়, নিম্নমানের পাতার সঙ্গে তা-ও মেশানো হয় নতুন চা তৈরিতে। বাড়তি আয়ের টানে অনেক বাগানই সেই পথে হাঁটে। ক্ষুদ্র চা চাষীদের অনেকের কাছ থেকে কম দামে সেই পাতা কিনে চা তৈরি করে বটলিফ কারখানাগুলির একাংশ। উল্লেখ্য, বটলিফ কারখানাগুলির নিজস্ব বাগান থাকে না। চা বাগানগুলি থেকে পাতা কিনে চা উৎপাদন করে তারা।

এ দিন বড় বাগানগুলির সংগঠন ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের (আইটিএ) বার্ষিক সভায় কেন্দ্রীয় বাণিজ্য সচিব অনুপ ওয়াধবনও চায়ের গুণমান বৃদ্ধির বিষয়টিতে গুরুত্ব দেন। তিনি জানান, অন্যান্য পানীয়ের সঙ্গে জুঝতে হলে চায়ের ব্র্যান্ডিংয়ের উপরেও জোর দিতে হবে। আর সে ক্ষেত্রে চায়ের মানের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘‘অনেক সময়ে সস্তার পণ্য বাজারে আনার প্রবণতা থাকে শিল্প মহলের। কিন্তু চায়ের ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য গুণগত মান বজায় রাখা জরুরি।’’

টি বোর্ডের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন আইটিএ-র বিদায়ী চেয়ারম্যান আজম মোনেম ও ছোট বাগানগুলির সংগঠন সিস্টা-র প্রেসিডেন্ট বিজয়গোপাল চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার আজম বলেন, ‘‘চায়ের গুণমান বজায় রাখার ক্ষেত্রে এটি সঠিক সিদ্ধান্ত।’’ আর বিজয়বাবু বলছেন, ‘‘সিদ্ধান্ত ঠিক মতো কার্যকর হচ্ছে কি না, বোর্ডের আধিকারিকদের সে ব্যাপারে নজরদারি করতে হবে।’’

বাজারে বাড়তি চায়ের জোগানও এই শিল্পের মাথাব্যথার কারণ। শিল্পের দাবি, শুধু শীতের মরসুমেই উত্তরবঙ্গ ও অসমে ৩-৪ কোটি কেজি বাড়তি চা তৈরি হয়। পরের বছর নতুন মরসুমের গোড়ায় বাজারে তার জোগান থাকে। ফলে চায়ের দাম খুব একটা ওঠে না। এখন আবার মোট চায়ের প্রায় ৪৭% আসছে ক্ষুদ্র চাষিদের বাগান থেকে। সব মিলিয়ে জোগান আরও বাড়লে চায়ের দাম বাড়বে না বলে আশঙ্কা এই শিল্পের। আর দাম না বাড়লে সঙ্কটে থাকা চা শিল্পের সমস্যা আরও বাড়বে বলে দাবি কর্তাদের।

Tea Estate Economy Tea Garden
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy