Advertisement
১১ মে ২০২৪
Income Tax Exemption

ঋণপত্র নির্ভর ফান্ডে কর ছাড়ের সুবিধা তুলল কেন্দ্র

ঋণপত্র নির্ভর ফান্ড প্রকল্পে লগ্নি থেকে মুনাফায় এত দিন দু’রকম কর ব্যবস্থা ছিল। লগ্নির পরে ৩ বছরের মধ্যে তা তুলে মুনাফা করলে, তা লগ্নিকারীর মোট আয়ে যুক্ত হত।

A Photograph representing tax

নাফা থেকে মূল্যবৃদ্ধি সূচকের হিসাব বাদ দিয়ে যে টাকা থাকত, তাকে ধরা হত প্রকৃত মুনাফা হিসাবে। তাতে কর বসত ২০%। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ মার্চ ২০২৩ ০৯:০৮
Share: Save:

শেয়ারে লগ্নি করতে নারাজ যাঁরা, তাঁদের অনেকেই ঋণপত্র ভিত্তিক (ডেট) মিউচুয়াল ফান্ড কেনেন। কারণ, তাতে ঝুঁকি কম। অথচ অনেক ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক আমানতের থেকে লাভ হয় কিছুটা বেশি। সর্বোপরি দীর্ঘ মেয়াদে লগ্নি ধরে রাখলে করে কিছু সুবিধা মেলে। লগ্নিকারীকে পুরো মুনাফায় কর দিতে হয় না। মূল্যবৃদ্ধির খাতে একটা অংশ বাদ দিয়ে তার উপরে বসে। শুক্রবার সংসদে পাশ হওয়া অর্থবিলে দীর্ঘমেয়াদি লাভ করে এই সুবিধাই তুলে নিল মোদী সরকার। সূত্রের দাবি, ঋণপত্র নির্ভর ফান্ডে লগ্নিকারী আয় করেন সুদ থেকে। তাই ব্যাঙ্ক আমানতের মতো সুদ নির্ভর আয়গুলির সঙ্গে তাকে এক সারিতে বসাতেই এই পদক্ষেপ।

ফান্ড বিশেষজ্ঞ নীলাঞ্জন দে-র দাবি, ‘‘ডেট ফান্ডের কর আর পাঁচটা সাধারণ ভাবে জনপ্রিয় ব্যাঙ্ক আমানতের মতোই হয়ে যাবে। মানে, আপনি এই ফান্ডে লগ্নি করে লাভ করলে তা আপনার আয়ের সঙ্গে যোগ হবে। তার পরে তাতে প্রযোজ্য হবে নির্দিষ্ট করের হার। আগে এই ধরনের ফান্ড ৩ বছরের বেশি ধরে রাখলে দীর্ঘ মেয়াদি গণ্য হত এবং তার লাভ থেকে মূল্যবৃদ্ধির খাতে খরচ হিসাবে একটা অংশ বাদ দিয়ে কর হিসাবের সুবিধা মিলত। তা এখন আর পাবেন না।’’

প্রসঙ্গত, ঋণপত্র নির্ভর ফান্ড প্রকল্পে লগ্নি থেকে মুনাফায় এত দিন দু’রকম কর ব্যবস্থা ছিল। লগ্নির পরে ৩ বছরের মধ্যে তা তুলে মুনাফা করলে (স্বল্পমেয়াদি লাভ), তা লগ্নিকারীর মোট আয়ে যুক্ত হত এবং তার উপর স্বাভাবিক হারে আয়কর মেটাতে হত। ৩ বছরের বেশি ধরে রেখে মুনাফা হলে দিতে হত দীর্ঘমেয়াদি মূলধনী লাভ কর। তবে এ ক্ষেত্রে কিছু ছাড়ের সুবিধা মিলত। কারণ, মুনাফা থেকে মূল্যবৃদ্ধি সূচকের হিসাব বাদ দিয়ে (ইনডেক্সেশন) যে টাকা থাকত, তাকে ধরা হত প্রকৃত মুনাফা হিসাবে। তাতে কর বসত ২০%। ইনডেক্সেশনের সুবিধা না নিলে হার ১০%। বিশেষজ্ঞদের দাবি, যত বছর লগ্নি, তত বছর ধরেই ইনডেক্সেশনের সুবিধা পাওয়া যেত। ৩ বছরের জন্য তা পেলে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই করের হার দাঁড়াত ১০%।

তাঁদের একাংশের অভিযোগ, এই সুবিধা মূল্যবৃদ্ধি সামলাতে সাহায্য করত সুদ নির্ভর আয়ে বিশ্বাসীদের। কিন্তু তা কেড়ে নেওয়া হল এবং শেয়ার বাজারের দিকে ঠেলেও দেওয়া হল অনেককে। কারণ অর্থবিলে বলা হয়েছে, যে ফান্ডের শেয়ারে (ভারতীয় সংস্থার) লগ্নি পরিমাণ ৩৫% ছাড়ায় না, সেগুলি ঋণপত্র ভিত্তিক গণ্য হবে এবং তাতে করের সুবিধা থাকবে না। শেয়ারে লগ্নি ৩৫% ছাড়ালে দীর্ঘমেয়াদি মূলধনী লাভ করের সুবিধা আগের মতোই বজায় থাকবে। তাঁদের মতে, ব্যাঙ্কে আমানত সংগ্রহের রাস্তা সুগম করাই এই সিদ্ধান্তের লক্ষ্য।

ফান্ড বিশেষজ্ঞ এসকেপি সিকিউরিটিজ়ের এমডি নরেশ পাচিসিয়া বলেন, ‘‘এখন লগ্নিকারীরা ব্যাঙ্কের স্থায়ী আমানতের সুদের সঙ্গে ডেট ফান্ডের লাভ তুলনা করে এগোবেন। ভবিষ্যতে ব্যাঙ্কে সুদের হার কমলে ঋণপত্র ভিত্তিক ফান্ড আকর্ষণীয় হয়ে উঠবে। এ ছাড়া ৩৫ শতাংশের বেশি শেয়ারে লগ্নি করা ফান্ড বাজারে আসবে বেশি।’’ এসবিআই মিউচুয়াল ফান্ডের এগ্‌জ়িকিউটিভ ডিরেক্টর ডি পি সিংহের দাবি, ‘‘নতুন ব্যবস্থাটি সমস্যা তৈরি করবে। ঋণপত্রের বাজারও কিছুটা ভুগতে পারে। যার মোকাবিলায় সংস্থাগুলিকে কৌশল বদলাতে হবে। অনেক ডেট ফান্ডই গ্রাহক হারাবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Income Tax exemption Central Government
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE