—প্রতীকী চিত্র।
দেশের বাজারে সরবরাহ বাড়িয়ে দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে গত ৮ ডিসেম্বর পেঁয়াজের রফতানির উপরে নিষেধাজ্ঞা জারি করে কেন্দ্র। কিন্তু তাতে চাপে পড়ে গিয়েছে বাংলাদেশ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির মতো দেশ। পেঁয়াজের জন্য যারা বরাবরই ভারতের উপরে নির্ভরশীল। এ বার ওই সমস্ত দেশে আনাজটির দাম চড়ছে।
এ বছর দেশে অনিয়মিত বৃষ্টির জন্য আনাজ-সহ বিভিন্ন খাদ্যপণ্যের উৎপাদন এবং সরবরাহ ধাক্কা খেয়েছে। তার ফলে সেগুলির দামও চড়েছে বিপুল। মূলত খাদ্যপণ্যের আগুন দরই খুচরো বাজারের সার্বিক মূল্যবৃদ্ধিকে ঠেলে তুলছে। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, লোকসভা নির্বাচনের দোরগোড়ায় পৌঁছে তা মোদী সরকারেরও অস্বস্তি বাড়াচ্ছে। যে কারণে আনাজপাতির দামকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে একের পর এক মরিয়া পদক্ষেপ করে চলেছে তারা। সরকারি গুদাম থেকে বাজারে সস্তার চাল-গমের সরবরাহ বাড়ানো, বিভিন্ন শহরে ভর্তুকি দিয়ে টোম্যোটো ও পেঁয়াজ বিক্রি, রফতানি শুল্ক বিপুল ভাবে বাড়িয়ে দেশে জোগান বাড়ানোর চেষ্টা, এমনকি কিছু ক্ষেত্রে রফতানিতে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞাও। মাঝে মাস তিনেকের মধ্যে পেঁয়াজের দাম দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ায় শেষে তার রফতানির উপরে এই নিষেধাজ্ঞার অস্ত্রই প্রয়োগ করেছে সরকার।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, যেহেতু পরের বছরের গোড়ায় সাধারণ নির্বাচন, তাই দ্রুত এই নির্দেশ প্রত্যাহারের সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। লোকসানের অভিযোগে মহারাষ্ট্রের পেঁয়াজ চাষিদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়ানো সত্ত্বেও এই সিদ্ধান্তে অনড় কেন্দ্র। ভারতের এই মনোভাব পেঁয়াজ আমদানিকারী দেশগুলির কাছেও অশনিসঙ্কেত। যা বিশ্ব বাজারের জোগান কেড়ে বিশেষত প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিকে বিপাকে ফেলেছে।
বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মরত পেশাদার মৌসুমি আখতার বলছেন, ‘‘আমাদের প্রায় সব রান্নায় পেঁয়াজ লাগে। হঠাৎ দাম বেড়ে যাওয়ায় চাপে পড়েছি। পেঁয়াজ কেনা কিছুটা কমাতেই হচ্ছে।’’ নেপালের বাণিজ্য মন্ত্রকের আধিকারিক তীর্থরাজ চিলুওয়ালের কথায়, ‘‘ভারতে সিদ্ধান্তের পর থেকে আমরা টানা পেঁয়াজ সরবরাহের অবস্থা তত্ত্বাবধান করে চলেছি। আপাতত খোলা বাজারে আনাজটি দুর্লভ।’’
গত অর্থবর্ষে ভারত ২৫ লক্ষ টন পেঁয়াজ রফতানি করেছিল। যা রেকর্ড। এর মধ্যে ৬,৭১,১২৫ টন গিয়েছিল শুধু বাংলাদেশে। সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, ভারত থেকে ওই সমস্ত দেশে পেঁয়াজ যেতে কম সময় লাগে। ফলে স্বাদও থাকে প্রায় অবিকৃত। সেই কারণে এই বাজারে চিন, পাকিস্তান, ইরান, তুরস্ক এবং মিশরের মতো দেশকে পিছনে ফেলতে পেরেছে ভারত। এখন সুযোগ পেয়ে ওই সমস্ত দেশও রফতানিকৃত পেঁয়াজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy