দেশে আর্থিক বৃদ্ধির চাকায় গতি আনতে কাজের জগতে মহিলাদের আরও বেশি অংশগ্রহণে জোর দিচ্ছেন অর্থনীতিবিদেরা। তবে সমীক্ষা বলছে, কল-কারখানায় উৎপাদনের মতো যে সমস্ত কাজে কায়িক পরিশ্রম লাগে, সেখানে এখনও প্রতি পাঁচ জন কর্মীর মধ্যে মাত্র এক জন মহিলা। পুরুষদের সঙ্গে বেতনের ফারাক এবং শৌচালয়ের মতো অত্যাবশ্যক পরিষেবার অভাবই এর জন্য দায়ী।
দেশের প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির শহরে ১৪টি শিল্পের ৪০০০টিরও বেশি সংস্থাকে নিয়ে সমীক্ষাটি করেছে মানবসম্পদ সংস্থা ইনডিড। সেই রিপোর্ট বলছে, ২০২৪-এ কারখানায় মহিলা কর্মী নিয়েছে ৭৩% সংস্থা। কিন্তু সারা দেশে তাঁদের সংখ্যা মোট কর্মীর মাত্র ২০%। খুচরো বিক্রি, স্বাস্থ্য পরিষেবা, ওষুধ, নির্মাণ-আবাসন, পর্যটন এবং আতিথেয়তা ক্ষেত্রে গড়ে ৩০%। টেলি-যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি ও পরিষেবায় ১০ শতাংশেরও কম।
সমীক্ষায় অংশ নেওয়া সিংহভাগের দাবি, কারখানার মতো কায়িক পরিশ্রম লাগে এমন পরিবেশে শিফ্ট-ভিত্তিক কাজ হয়। যা মহিলাদের জন্য বড় বাধা। কারণ, তাতে কাজ ও ব্যক্তিগত জীবনে ভারসাম্য রক্ষা কঠিন হয়। কর্মক্ষেত্রে বাড়তি কিছু সুবিধাও লাগে। তার উপর ৪২% মহিলা কর্মী মনে করেন একই কাজ করা পুরুষ সহকর্মীদের সঙ্গে বেতনে বৈষম্য রয়েছে। কর্মজীবনে উন্নতির জায়গা না থাকা সেই বৈষম্যকে বাড়ায়। প্রশিক্ষণ নেওয়ার ইচ্ছা থাকলেও, সুযোগের অভাবও টেনে ধরছে পিছন দিকে।
ইনডিড ইন্ডিয়ার কর্তা শশী কুমারের বক্তব্য, ‘‘কর্মক্ষেত্রে বৈচিত্র আনতে মহিলাদের অংশগ্রহণ জরুরি নয়। দেশের আর্থিক অগ্রগতির জন্য তা দরকার।’’ যদিও সমীক্ষা বলছে, ৭৮% নিয়োগকারী চলতি বছরে আরও বেশি মহিলা কর্মী নিতে আগ্রহী হলেও দক্ষ কর্মীর অভাব, তাঁদের কাজ ছাড়ার প্রবণতা এবং চিকিৎসার খরচ বড় সমস্যা বলে দাবি করেছে। এই পরিস্থিতিতে আরও বেশি মহিলাকে কাজের দুনিয়ায় টেনে আনতে তাঁদের জন্য আলাদা পরিকল্পনার সওয়াল করেছে ইনডিড। পরামর্শ দিয়েছে, সে জন্য নীতি তৈরি করুক সংস্থাগুলি। সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি কাজে উন্নতির দিশা দেখাক।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)