Advertisement
০৫ মে ২০২৪
Share Market

Share Market: আশার খবরেও ভরসা পাচ্ছে না শেয়ার বাজার

ছোট এবং মাঝারি মেয়াদে শেয়ার বাজারকে প্রভাবিত করার মতো কিছু খবর হাতে এসেছে সম্প্রতি। এগুলির কয়েকটি সূচককে চিন্তামুক্ত করার ক্ষমতাও রাখে।

প্রতীকী ছবি

অমিতাভ গুহ সরকার
শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০২২ ০৮:২৭
Share: Save:

ছোট এবং মাঝারি মেয়াদে শেয়ার বাজারকে প্রভাবিত করার মতো কিছু খবর হাতে এসেছে সম্প্রতি। এগুলির কয়েকটি সূচককে চিন্তামুক্ত করার ক্ষমতাও রাখে। তবু উদ্বেগের মেঘ বহাল। ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, রেকর্ড দামের জ্বালানি, বাড়তে থাকা জিনিসপত্রের দাম— সবই আছে সেই তালিকায়। আর আছে সুদের হার বৃদ্ধি নিয়ে চিন্তা। মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানতে হলে সুদ বাড়িয়ে চাহিদা কমাতে হবে। অথচ চাহিদা না বাড়লে অর্থনীতি চাঙ্গা হবে না। ফলে আশার খবরগুলি সূচকের অস্থির ওঠানামা আটকাতে পারছে না। সুদের হার আরও বাড়লে আশঙ্কা থাকছে ধস নামারও।

আবহাওয়া দফতর এ বছর বর্ষা স্বাভাবিক বা তার থেকে বেশি হওয়ার পূর্বাভাস দেওয়ায় খুশি লগ্নিকারীরা। তারা এটাও বলেছে, বৃষ্টি হতে পারে দেশ জুড়ে, দীর্ঘ সময়ের গড়ের তুলনায় ১০৩%। অর্থনীতির জন্য যা ভাল খবর। কারণ, কৃষিজাত পণ্যের উৎপাদন বেশি হলে বাজারে সেগুলির দাম কমতে পারে। স্বস্তি দিয়েছে অশোধিত তেল রফতানিকারী দেশগুলির সংগঠন ওপেক-এর জুলাই ও অগস্টে দৈনিক ৬.৪৮ লক্ষ ব্যারেল উৎপাদন বাড়ানোর সিদ্ধান্তও। আশা, জোগান বাড়লে বিশ্ব বাজারে কিছুটা দাম কমবে তেলের। এতে মূল্যবৃদ্ধিরও মাথা নামানোর সম্ভাবনা তৈরি হবে।

কর আদায় বাড়ার অর্থ, ব্যবসা চাঙ্গা হচ্ছে। তবে মে মাসের সরকারের ১.৪১ লক্ষ কোটি টাকা জিএসটি আদায়ে আশা ও নিরাশা, দু’টিই আছে। মূল্যবৃদ্ধির আবহে এত কর সংগ্রহ ভাল লক্ষণ। কিন্তু তা এপ্রিলের তুলনায় প্রায় ১৬% কম। প্রশ্ন উঠছে, এটা অর্থনীতির অবস্থা খারাপ হওয়ার ইঙ্গিত নয় তো? যদিও দেশে গাড়ি বিক্রি বেড়েছে অনেকটা। সেমিকনডাক্টর চিপের সঙ্কটের মধ্যেও যা স্বস্তি।

সরকারি পরিসংখ্যানেও কিছুটা নিশ্চিন্তির জায়গা তৈরি হয়েছে। যেমন, গত অর্থবর্ষে (২০২১-২২) জিডিপি বৃদ্ধির হার ৮.৭%, যা বিশ্ব জোড়া সঙ্কটের নিরিখে মন্দ নয়। এপ্রিলে পরিকাঠামো শিল্পে উৎপাদন বেড়েছে ৮.৪%। মার্চের ৪.৯ শতাংশের চেয়ে বেশি। গত অর্থবর্ষে রাজকোষ ঘাটতি জিডিপি-র ৬.৯% পূর্বাভাসের থেকে কম হয়েছে, ৬.৭%। প্রত্যাশা ছাপানো কর সংগ্রহই যার প্রধান কারণ।

তবে উদ্বেগ বহাল জানুয়ারি-মার্চে আর্থিক বৃদ্ধি ৪.১% হওয়ায়। এর জন্য দায়ী মূলত পণ্যের চড়া দাম এবং তার জেরে উৎপাদন ও চাহিদায় কোপ। চিন্তা বাড়ছে, ওই কোপ বৃদ্ধিকে আরও টেনে নামাবে কি না, তা নিয়ে। কারণ, জ্বালানি আরও দামি হয়েছে, আরও চড়েছে মূল্যবৃদ্ধির হার। এপ্রিলের থেকে সামান্য হলেও কমে ৫৪.৬ হয়েছে শিল্পের উৎপাদন সূচক পিএমআই। এই সূচক ৫০-এর বেশি মানে বৃদ্ধি। পিএমআইয়ের পরিষেবা শিল্প সূচক অবশ্য ৫৮.৯ ছুঁয়েছে, এই বৃদ্ধি ১১ বছরে সব থেকে বেশি।

দু’তিনটি বিষয়ে হোঁচট খেয়েছেন মানুষ। জানুয়ারি-মার্চে এলআইসি-র নিট লাভ ১৮% কমে হয়েছে ২৩৭২ কোটি টাকা। ২০২১-২২ অর্থবর্ষের জন্য শেয়ারে ১.৫০ টাকা ডিভিডেন্ড দেবে তারা। এতে হতাশ ৪০ লক্ষেরও বেশি নতুন লগ্নিকারী। ঋণে ফের সুদ বাড়িয়েছে আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক এইচডিএফসি এবং পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক। এদের কেউই জমায় তেমন সুদ বাড়ায়নি। উল্টে পিএফে সুদ কমানো হয়েছে ৮.১ শতাংশে, যা ৪৪ বছরে সর্বনিম্ন। এই সিদ্ধান্ত মানা কষ্টকর।

(মতামত ব্যক্তিগত)

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

অন্য বিষয়গুলি:

Share Market Stock Market
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE