ছবি সংগৃহীত
দেশের অর্থনীতিতে ঝিমুনি কতটা জাঁকিয়ে বসেছিল, তার প্রমাণ দিল চলতি খাতে বিদেশি মুদ্রার লেনদেনও। মঙ্গলবার রিজার্ভ ব্যাঙ্ক প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেখা গেল, প্রায় ১৩ বছর পরে গত অর্থবর্ষের শেষ তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) বিদেশি মুদ্রার ব্যয়ের থেকে আয় হয়েছে বেশি।
বিদেশি মুদ্রা লেনদেনের ঘাটতি বেড়ে গেলে, অর্থাৎ তার আয়ের থেকে খরচ বেশি হলে সরকারের দুশ্চিন্তা বাড়ে। এখন তার উল্টো ছবি, অর্থাৎ উদ্বৃত্ত আপাত ভাবে স্বস্তির কারণ মনে হলেও, অর্থনীতিবিদেরা বলছেন আদতে এটা অর্থনীতির ঝিমুনিরই লক্ষণ। কারণ তাঁদের মতে, ওই তিন মাসে দেশে পণ্যের চাহিদা কমেছিল বলেই আমদানি কমে যায়। করোনা-সঙ্কটের আগে থেকেই দেশের অর্থনীতিতে ঝিমুনি চলছিল। তার পরে মার্চের শেষের দিকে লকডাউনের ধাক্কায় মানুষের আয় কমেছে। ফলে বিদেশি জিনিসপত্রের কেনাকাটাও কমেছে। এর ফলেই চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চে বিদেশি মুদ্রার লেনদেনে উদ্বৃত্তের হার ০.১ শতাংশে পৌঁছয়। গত বছর একই সময়ে বিদেশি মুদ্রার ঘাটতির হার ০.৭% ছিল।
তথ্য বলছে, ওই তিন মাসে এমনকি বিশ্ব বাজার থেকে অশোধিত তেল কেনাও কমে। তার উপর তখন তার দাম কমতে শুরু করেছে। কারণ, ভারতে সে সময় করোনা এত তীব্র ভাবে পা না-রাখলেও, চিনে নখ-দাঁত বার করতে শুরু করেছে ভাইরাস। যে কারণে জানুয়ারি-মার্চে ওই পড়শি মুলুক থেকে জিনিসপত্র কেনাকাটা কমতে থাকে। সব মিলিয়ে অনেকটা বিদেশি মুদ্রা বেঁচে যায়। যার ফল এই উদ্বৃত্ত। তবে প্রবাসী ভারতীয়দের টাকা পাঠানো এবং সফটওয়্যার থেকে আয় বেড়েছে।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৭-এর জানুয়ারি-মার্চের পরে এই প্রথম আমদানি-রফতানির নিরিখে বিদেশি মুদ্রা উদ্বৃত্ত হল। লকডাউনের আগে থেকেই অর্থনীতিতে ঝিমুনির ফলে যে বিদেশি পণ্যের আমদানি কমছিল, তার প্রমাণ ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে চলতি খাতে ঘাটতি তার আগের বারের ২.১% থেকে কমে ০.৯ শতাংশে নেমেছে।
তবে মার্চে বিদেশি ঋণের পরিমাণ ৫৫,৮৫০ কোটি ডলারে পৌঁছেছে। গত মার্চের তুলনায় ১৫৪০ কোটি ডলার বেশি। এর প্রায় ৪০ শতাংশই বাণিজ্যিক ঋণ। টাকার তুলনায় ডলারের দাম বাড়াও এর কারণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy