Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Indian Economy

অর্থনীতির হাল বুঝতে দেখতে হবে বাকি সূচকও

অর্থনীতিবিদদের একাংশের অবশ্য মত, শুধু বৃদ্ধির হারকেই হাতিয়ার করে আত্মতুষ্টিতে ভোগা ঠিক নয়।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

দেবপ্রিয় সেনগুপ্ত
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ এপ্রিল ২০২১ ০৪:৪১
Share: Save:

গত অর্থবর্ষে করোনায় অর্থনীতির বেহাল দশার পরে চলতি অর্থবর্ষে (২০২১-২২) ভারত উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধির মুখ দেখবে বলে জানাচ্ছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক, আন্তর্জাতিক অর্থভান্ডার থেকে শুরু করে বিভিন্ন উপদেষ্টা সংস্থা। সম্প্রতি অনেকে তা আরও বাড়িয়ে প্রায় ১২% করেছে। অর্থনীতিবিদদের একাংশের অবশ্য মত, শুধু বৃদ্ধির হারকেই হাতিয়ার করে আত্মতুষ্টিতে ভোগা ঠিক নয়। কারণ, এ বছর বৃদ্ধি হলেও তা প্রকৃতপক্ষে হবে গত বছরের সঙ্কোচনের ভিতের উপরে দাঁড়িয়ে। ফলে অর্থনীতির সার্বিক পরিস্থিতি বুঝতে হলে বেকারত্ব, শিক্ষা, স্বাস্থ্যের মতো সূচকের কতটা উন্নতি হল, তা দেখা জরুরি। তা ছাড়া বৃদ্ধির পূর্বাভাস কতটা মিলবে, তা নির্ভর করবে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ অর্থনীতিতে কী প্রভাব ফেলে বা প্রতিষেধক কতটা কার্যকর হয়, তার উপরেও।

ভারতের অর্থনীতি অবশ্য ঝিমোচ্ছিল করোনার আগে থেকেই। অতিমারির ধাক্কায় ২০২০-২১ সালের প্রথম ও দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে জিডিপি তলিয়ে যায় যথাক্রমে ২৩.৯% এবং ৭.৫%। আর্থিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা গতি আসায় তৃতীয় ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ০.৪%। সরকারি ভাবে ওই অর্থবর্ষে ৭.৭% সঙ্কোচন হবে বলে আশঙ্কা। তবে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে ২০২১-২২ সালে ভারত উঁচু বৃদ্ধির (প্রায় ১২%) মুখ দেখবে বলে পূর্বাভাস বিভিন্ন মহলের।

আইআইএম-কলকাতার অর্থনীতির অধ্যাপক পার্থ রায় ও প্রাক্তন অধ্যাপক অনুপ সিংহের মতে, নতুন করে কোনও বাধা না-এলে বৃদ্ধিতে গতি ফিরবে ঠিকই। কিন্তু সেই হিসেব মাপা হবে ২০২০-২১ সালের সঙ্কোচনের উপর দাঁড়িয়ে! অর্থাৎ, তা নিয়ে আদৌ উচ্ছ্বসিত হওয়া যায় কি না, সেই প্রশ্ন থাকছে। তেমনই অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বলার জন্য ধারাবাহিক বৃদ্ধিও জরুরি।

অনুপবাবুর মতে, করোনার আগেই দেশে বেকারত্বের হার ২০১৭-১৮ সালে পৌঁছেছিল ৪৫ বছরে সর্বোচ্চ হারে। তাই শুধু জিডিপি নয়, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল কত নতুন কাজ তৈরি হচ্ছে বা বেকারত্ব কী রকম দাঁড়াচ্ছে, সেটাও। আর প্রযুক্তিগত ভাবে দক্ষ উচ্চশিক্ষিত কর্মীদের সঙ্গেই অদক্ষ বা কম দক্ষ কর্মপ্রার্থীদের নিয়েই তার বিচার করতে হবে। সেই সঙ্গে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশের মতো মানব উন্নয়নের অন্যান্য সূচকও (যার কয়েকটিতে সম্প্রতি বিশ্বে পিছিয়েছে ভারত) গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা করতে হবে।

তা ছাড়া, ফের যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে, তাতে আবার আর্থিক কর্মকাণ্ড তথা অর্থনীতি ধাক্কা খেতে পারে। যে কারণে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ, সকলের কাছে ঠিকমতো প্রতিষেধক পৌঁছনো এবং তা কতটা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলছে, এই তিন বিষয়েই উপরেই বৃদ্ধির পূর্বাভাসের বাস্তবায়িত হওয়া নির্ভর করবে বলে জানান পার্থবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE