প্রতীকী ছবি।
চলতি অর্থবর্ষে জীবন বিমা নিগমের শেয়ার প্রথমবার বাজারে ছাড়া (আইপিও) সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সংশয় তৈরি হয়েছে। সূত্রের খবর, আইপিও-র আগে সংস্থার মূল্যায়ন-সহ যে কাজগুলি সারা জরুরি, তার বেশ কিছু এখনও করতে পারেনি কেন্দ্র। এ দিকে ২০২১-২২ সাল শেষ হতে আর তিন মাস বাকি। এই সময়ের মধ্যে সেগুলি কতটা শেষ করা যাবে, তা নিয়েই তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
গত বাজেটে এই অর্থবর্ষে বিলগ্নিকরণ খাতে ১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা তোলার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সেই তালিকায় ছিল এলআইসি-র শেয়ার বিক্রিও। এ ছাড়াও যে সমস্ত সংস্থার বিলগ্নির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তার মধ্যে একাধিক সংস্থাকেই নথিভুক্তির জন্য প্রস্তুত করা যায়নি। ফলে এলআইসি-র আইপিও না-আনতে পারলে সেই লক্ষ্য অধরাই থেকে যাবে বলে সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা।
জীবন বিমা নিগমের শেয়ার নথিভুক্তিতে জুলাইয়ে সায় দিয়েছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার আর্থিক বিষয়ক কমিটি। তার প্রস্তুতির জন্য ১০টি মার্চেন্ট ব্যাঙ্কারকে নিযুক্ত করা হয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, এলআইসি-র মতো এত বড় সংস্থার মূল্যায়নের প্রক্রিয়াটি বেশ জটিল। ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের পূর্বাঞ্চলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অনির্বাণ দত্ত বলেন, “বাজারে প্রথম নথিভুক্তির ক্ষেত্রে সংস্থার ঠিকঠাক মূল্যায়ন অত্যন্ত জরুরি। তাতে ত্রুটি থাকলে শেয়ার ছেড়ে যত টাকা পাওয়া উচিত, তা না-ও আসতে পারে। দেশ জুড়ে এলআইসি-র প্রচুর স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে। নথিতে যার মূল্য খুবই কম। অনেক ক্ষেত্রে মাত্র ১ টাকা। সেই সব সম্পত্তির বর্তমান দাম নির্ধারণ করতে হবে। যা বেশ কঠিন এবং সময়সাপেক্ষ।’’
তার উপরে স্টক এক্সচেঞ্জে নথিভুক্তির পর এলআইসি-র বাজারে ছাড়া শেয়ারের মোট মূল্য বা মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন দাঁড়ানোর কথা ৮-১০ লক্ষ কোটি টাকার মতো। যা হবে বর্তমানে নথিভুক্ত সব থেকে বেশি অঙ্কের মার্কেট ক্যাপিটাল থাকা সংস্থাগুলির অন্যতম। শেয়ার সংক্রান্ত গবেষণা সংস্থা ভ্যালু রিসার্চের এমডি ধীরেন্দ্র কুমারের মতে, “দেশে এত বড় জীবন বিমা সংস্থার নথিভুক্তি এর আগে হয়নি। ফলে পুরো বিষয়টিই নতুন অভিজ্ঞতা। তা ছাড়া ভারতে জীবন বিমার বাজারের ৬০%-৭০% এলআইসি-র দখলে। ফলে আইপিও-র আগে শুধু স্থাবর সম্পত্তিই নয়। পলিসি সংক্রান্ত ঝুঁকির পাশাপাশি প্রিমিয়াম হিসেবে মানুষের যে টাকা লগ্নি করা রয়েছে, তার ঝুঁকির মূল্যায়নও জরুরি।’’ বিশেষত যখন আইপিও-র শেয়ারের নির্দিষ্ট অংশ রাখা থাকবে বিমাকারীদের জন্য। তাই আপাতত সেই সব কাজ কবে শেষ হয়, সে দিকেই তাকিয়ে সকলে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy