মান্ধাতার আমলের দেউলিয়া ঘোষণার পদ্ধতি ঢেলে সাজতে অবশেষে বুধবার খসড়া প্রস্তাব পেশ করল কেন্দ্র। সেখানে আর্থিক সঙ্কটের জেরে সময়ে ধার শোধ করতে সমস্যায় পড়া সংস্থা সম্পর্কে ছ’মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়ার প্রস্তাব যেমন রাখা হয়েছে, তেমনই বলা হয়েছে দেউলিয়া ঘোষণার পদ্ধতি সহজ করার কথা। আপাতত ১৯ নভেম্বর পর্যন্ত এই খসড়া নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের মতামত চেয়েছে কেন্দ্র। অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি জানিয়েছেন, আসন্ন শীতকালীন অধিবেশনেই দেউলিয়া বিল সংসদে আনতে চান তাঁরা।
দেউলিয়া আইন ঢেলে সাজার কথা গত বাজেটেই বলেছিলেন জেটলি। শেষ পর্যন্ত সেটা হলে, এই প্রথম সব ধরনের সংস্থার জন্য একটিই দেউলিয়া আইন চালু হবে দেশে। তাতে ঘুরে দাঁড়ানোর কোনও সুযোগ আর সামনে খোলা না-থাকলে, সংস্থা গোটানো তুলনায় অনেক বেশি সহজ হবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে ধারের টাকা আদায় করা সহজ হবে ঋণদাতার পক্ষে। ফুলে-ফেঁপে উঠবে ঋণপত্রের বাজার।
এখন ভারতে দেউলিয়া ঘোষণার পদ্ধতি এক-এক ধরনের সংস্থার ক্ষেত্রে এক-এক রকম। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তা দীর্ঘ দিন ধরে চলতে থাকে। এমনকী অনেক সময়ে কয়েক দশক আটকে থাকে আইনি জালে। ফলে শেষ পর্যন্ত মেরেকেটে হয়তো ধারের টাকার ২০% ফেরত পান ঋণদাতারা। কিন্তু এ দিন প্রাক্তন আইন সচিব টি কে বিশ্বনাথন যে-খসড়া জেটলির কাছে জমা দিয়েছেন, সেখানে এই সমস্যা মেটানোর রাস্তা খুলে রাখা হয়েছে। বলা হয়েছে এ বিষয়ে সরকারি হস্তক্ষেপ তুলে দিয়ে পেশাদার কমিটি গড়ার কথা।
খসড়া অনুযায়ী, ঋণের ভারে ধুঁকতে থাকা কোনও সংস্থা সময়ে তা শোধ দিতে না-পারলে, পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ১৮০ দিনের মধ্যে ওই কমিটিই জানিয়ে দেবে, কী করণীয়। কিছু ক্ষেত্রে তা জানানো হবে ৯০ দিনের মধ্যে। কমিটি রায় দেবে যে, ওই সংস্থাকে ফের ঘুরিয়ে দাঁড় করানো সম্ভব, নাকি তার সম্পদ বিক্রি করে দ্রুত ধার শোধ করে দেওয়া হবে ঋণদাতাদের।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এতে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ থাকলে, দ্রুত তা সম্ভব হবে। আবার তেমনই সেই আশা না-থাকলে, ধারের টাকা তাড়াতাড়ি ফেরত পাবে ঋণদাতারা। বেগতিক বুঝলে সংস্থার সম্পত্তি ধীরে ধীরে অন্যত্র সরিয়ে ফেলার ঘটনা ঘটবে কম। ফলে সংস্থাগুলিকে ঋণ দেওয়ার ঝুঁকি কমবে। বহরে বাড়বে ঋণপত্রের (কর্পোরেট বন্ড) বাজার। হয়তো কিছুটা সহজ হবে দেশে ব্যবসা করাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy