ফাইল চিত্র।
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ অর্থনীতিতে তেমন ধাক্কা দিতে পারবে না বলে কিছু দিন আগে আশ্বাস দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। তবে বুধবার অনিশ্চয়তা এবং ঝুঁকি বৃদ্ধির বার্তা দিয়েই ফের মাঠে নামল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। যে দিন মূল্যায়ন সংস্থা এসঅ্যান্ডপি চলতি অর্থবর্ষে ভারতের বৃদ্ধির পূর্বাভাস ১১% থেকে ৯.৮ শতাংশে নামিয়ে পরিস্থিতি ঘোরালো হলে তা আরও কমার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। সঙ্কটে নাভিশ্বাস ওঠা ব্যবসার পাশে সারা বছর থাকবেন ও পরিস্থিতিতে নজর রাখবেন, এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে এ দিন দেশের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের প্রয়োজন মেটাতে নগদ জোগানোর কথা ঘোষণা করেছেন শীর্ষ ব্যাঙ্ক গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। ধার শোধের জন্য আরও সময় এবং সুরাহার বন্দোবস্ত করেছেন ক্ষুদ্র-ছোট-মাঝারি শিল্প ও সাধারণ ঋণগ্রহীতাদের জন্য। সরকারি বন্ড কিনে তাঁরা যে কেন্দ্রকে তহবিল জোগাতে দেরি করবেন না, দিয়েছেন সেই বার্তাও।
করোনার প্রথম দফার ঝাপটা মোকাবিলার জন্য গত বছর ব্যাঙ্ক, ব্যাঙ্ক নয় এমন আর্থিক সংস্থা (এনবিএফসি) ও সাধারণ ঋণগ্রহীতাদের পাশে দাঁড়াতে একাধিক পদক্ষেপ করেছিল রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক। কোভিডের দ্বিতীয় কামড় যুঝতেও তড়িঘড়ি ব্যাঙ্কগুলিকে ৫০,০০০ কোটি টাকা তহবিল জোগানোর কথা জানাল শীর্ষ ব্যাঙ্ক। যাতে প্রতিষেধক, অক্সিজেন উৎপাদক, আমদানিকারী ও সরবরাহকারী, প্যাথোলজি ল্যাব বা হাসপাতালগুলির সংক্রমণ পরিস্থিতি সামলাতে টাকার দরকার পড়লে, তারা কম সুদে ধার দিতে পারে। ব্যক্তিগত ও ছোট সংস্থার জন্য ফের ঋণ পুনর্গঠনের সুবিধাও আনা হয়েছে।। ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলি যাতে কম সুদে ধার পায়, তার জন্য ব্যবস্থা হয়েছে বিশেষ তহবিলের।
শীর্ষ ব্যাঙ্কের পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে ব্যাঙ্কিং শিল্প ও বণিকসভা-সহ বিভিন্ন মহল। তাদের মতে, বাড়তে থাকা সংক্রমণ এবং মৃত্যু আটকাতে বিভিন্ন রাজ্য লকডাউন করতে বাধ্য হচ্ছে। তার উপর অক্সিজেন, প্রতিষেধক, বিভিন্ন হাসপাতালের শয্যার অভাব, করোনা পরীক্ষায় ধীর গতি প্রকট করেছে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর ভেঙে পড়া চেহারাটা। জীবন এবং রুজি-রুটি, দু’টি রক্ষার ক্ষেত্রেই সঙ্কট পুরোপুরি হাতের বাইরে বেরোনোর আগে এই পদক্ষেপ কার্যকর হবে।
স্টেট ব্যাঙ্কের বেঙ্গল সার্কেলের শীর্ষ কর্তা রঞ্জন কুমার মিশ্রের বক্তব্য, ‘‘যাঁরা আগের বার ঋণ পুনর্গঠনের সুযোগ নেননি, তাঁরা সেই সুযোগ পাবেন। ধার শোধের সময় বাড়লে বহু ঋণ অনুৎপাদক সম্পদ হওয়া থেকে বাঁচবে। ব্যাঙ্কগুলিকেও আর্থিক সংস্থান খাতে বাড়তি অর্থ তুলে রেখে ক্ষতি গুনতে হবে না।’’ রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক জীবন ও জীবিকা, দু’টোই রক্ষায় জোর দিয়েছে মত বণিকসভা সিআইআই-এর সভাপতি উদয় কোটাক।
আর্থিক সঙ্কট সামলাতে ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলিকে তিন বছরের মেয়াদে রেপো রেটে ঋণ দিতে ১০,০০০ কোটি টাকার ব্যবস্থা করেছে আরবিআই। এতে স্মল ফিনান্স ব্যাঙ্কগুলির মাধ্যমে ৫০০ কোটি টাকা পর্যন্ত তহবিল রয়েছে এমন ক্ষুদ্রঋণ সংস্থা ১০ লক্ষ পর্যন্ত ঋণ পাবে। অগ্রাধিকার ক্ষেত্রে ঋণের স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে তাকে। ফলে তা দ্রুত মঞ্জুর হবে। পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলি। ভিলেজ ফিনান্সিয়াল সার্ভিসেসের এমডি কুলদীপ মাইতি বলেন, ‘‘পূর্ব এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির ৩৩% ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাই ৫০০ কোটি টাকা সম্পদের সংস্থা। সারা দেশে ১০৩টি সংস্থা উপকৃত হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy