Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

পাঁচ পেরোলে তখন কী, চিন্তায় রাজ্য 

গত বছর মার্চে জিএসটি আদায় বেড়েছিল প্রায় ১৭%। নবান্নে চিঠি পাঠিয়ে তার জন্য বাহবা দিয়েছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় রাজস্ব সচিব। কিন্তু এ বার  সেখানে জিএসটি আদায় বেড়েছে গড়ে ৯%। জিএসটি চালুর সময়ে কেন্দ্র জানিয়েছিল, ফি বছর ১৪% রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি ধরে যা কমতি হবে, সেই টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে পুষিয়ে দেবে কেন্দ্র।

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৬:০১
Share: Save:

সাধারণ মানুষকে সুরাহা দিতে হালে বহু পণ্য-পরিষেবাতেই করের হার কমিয়েছে জিএসটি পরিষদ। তার মধ্যে বেশ কিছু পণ্য, পরিষেবায় জিএসটি কমানোর দাবি তুলেছিল রাজ্যই। কিন্তু এখন অত পণ্যে কর কমে যাওয়ার পরে ভাঁড়ার ভরা নিয়ে চিন্তায় পড়েছে তারা। কারণ, এ রাজ্যের খুচরো বাজারে যে সব পণ্য থেকে সবচেয়ে বেশি কর আদায় হত, তার অনেকগুলিতেই কর কমে যাওয়ার দরুন ধাক্কা খেয়েছে রাজস্ব আদায়। অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা বলছেন, জিএসটি চালুর পরে প্রথম পাঁচ বছর রাজস্ব আদায় ধাক্কা খেলেও না হয় ক্ষতিপূরণ গুনে তা পুষিয়ে দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ কেন্দ্র। কিন্তু তার পরে যখন সেই সুবিধা আর থাকবে না, তখন এই ‘ক্ষতি’ সামাল দেওয়া যাবে কী ভাবে, তা নিয়ে চিন্তায় তাঁরা।

গত বছর মার্চে জিএসটি আদায় বেড়েছিল প্রায় ১৭%। নবান্নে চিঠি পাঠিয়ে তার জন্য বাহবা দিয়েছিলেন তৎকালীন কেন্দ্রীয় রাজস্ব সচিব। কিন্তু এ বার সেখানে জিএসটি আদায় বেড়েছে গড়ে ৯%। জিএসটি চালুর সময়ে কেন্দ্র জানিয়েছিল, ফি বছর ১৪% রাজস্ব আদায় বৃদ্ধি ধরে যা কমতি হবে, সেই টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে পুষিয়ে দেবে কেন্দ্র। রাজ্য বাজেটে দাবি, ২০১৮-১৯ সালে জিএসটি বাবদ ২৭,১৭৩ কোটি টাকা আদায় হবে। কিন্তু সিএজির হিসেব অনুযায়ী, ডিসেম্বর পর্যন্ত তার অঙ্ক ১৭,৮৬১ কোটি। অর্থ মন্ত্রকের কর্তারাই বলছেন, অর্থবর্ষের শেষ চার মাসে বাড়তি ১০ হাজার কোটির হিসেব বাজেটে দেওয়া হয়েছে কেন্দ্র থেকে প্রাপ্য ক্ষতিপূরণের টাকা ধরে।

নবান্নের দাবি, জিএসটি চালুর সময়ে ২২৯টি পণ্যে ২৮% কর বসত। এখন তা আছে মাত্র ৩১টি পণ্যে। করের হার কমেছে অন্য অনেক পণ্যেও। ফলে সব মিলিয়ে কমে গিয়েছে কর আদায়ের পরিমাণ।

এক কর্তা বলছেন, ‘‘জিএসটি জমানা শুরুর আগে রঙিন টিভিতে ৩২% কর আদায় হত। প্রথমে জিএসটিও ছিল ২৮%। কিন্তু এখন তা কমিয়ে ১৮% করা হয়েছে। ফলে শুধু টিভি থেকেই কর আদায় প্রায় অর্ধেক হয়ে গিয়েছে।’’ টিভি থেকে যেমন কর অন্তত ২০০ কোটি টাকা কম আদায় হচ্ছে, তেমনই অন্যান্য ভোগ্যপণ্যেও একই রকম লোকসানের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে তাঁর দাবি।

জিএসটি আধিকারিকরা জানাচ্ছেন, রাজ্যে উৎপাদন শিল্প তেমন নেই। অনেক ছোট শিল্পকে নতুন নিয়মে আর বাধ্যতামূলক ভাবে জিএসটিতে নথিভুক্ত হতে হবে না। ফলে টিভি-ফ্রিজের মতো ভোগ্যপণ্যের উপরে কর আদায় আরও বেশি করে নির্ভর করবে। কারণ, ক্রেতা এ ধরনের পণ্য সাধারণত রসিদ নিয়েই কিনতে চান। কিন্তু এখন ওই সব পণ্যে কর কমায় ধাক্কা খেয়েছে জিএসটি আদায়।

সেখানেই চিন্তা রাজ্যের। এখন না হয় আদায় কম হলে তা পুষিয়ে দিচ্ছে কেন্দ্র। পাঁচ বছর পেরোলে কী হবে, সেটাই চিন্তা তাদের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

GST Revenue
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE