জিএসটি কমানোর পুরো সুবিধা ক্রেতার কাছে পৌঁছে দিতেই হবে, সোমবার শিল্পমহলকে বললেন কেন্দ্রীয় শিল্পমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। আর অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের দাবি, শিল্প দাম কমিয়ে সেই পথে হাঁটল কি না, তাতে নিজে নজরদারি করবেন। যদিও অর্থনীতিবিদদের একাংশের মতে, কর কম দেওয়ার পুরো সুবিধা পণ্যের দামে দেওয়া হবে বলে যে প্রত্যাশা তৈরি করা হচ্ছে, তা আদতে কতটা বাস্তবায়িত হওয়ার মতো সন্দেহ আছে। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের প্রশ্ন, সরকার নজরদারির কথা বললেও সেই ব্যবস্থা কই? মুনাফাখোরদের নিয়ন্ত্রণের পথ তো তারাই জিএসটি আইন থেকে তুলে দিয়েছে।
অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকারের দাবি, অর্থনীতির তত্ত্বই বলছে বিক্রয়কর কমলে তার সুবিধা উৎপাদনকারী এবং ক্রেতার মধ্যে ভাগ হয়। অত্যাবশ্যক পণ্যের ক্ষেত্রে চাহিদার বৃদ্ধি বা হ্রাস করের হার কমানো বা বাড়ানোর উপরে নির্ভর করে না। তাঁর বক্তব্য, কোন ক্ষেত্রে কতটা কর কমানোর সুবিধা উৎপাদনকারী ক্রেতার হাতে তুলে দেবে, তা নির্ভর করবে বাজারের উপরে। এমনকি যেগুলির দাম বেশি থাকলেও সাধারণ মানুষকে কিনতে হয়, সেই ধরনের অত্যাবশ্যক পণ্যে কর কমার সুবিধা আদৌ ক্রেতারা পাবেন কি না, সংশয় আছে। এই বিষয়টি অনুরোধ-উপরোধের উপরে নির্ভর করে না। আবার আইন করে বাস্তবায়িত করতে গেলেও সমস্যা হতে পারে। ফলে সরকার যতই বার্তা দিক শিল্পকে, তার ফল কতটা ইতিবাচক হবে তা নিয়ে সন্দেহ থাকছেই।
এ দিন নির্মলার দাবি, জিএসটি কমায় দেশের প্রতিটি পরিবার সুবিধা পাবে। চাহিদা বাড়বে। এগোবে অর্থনীতি। পীযূষের মন্তব্য, ছোট-বড় সব সংস্থার সামনে সুযোগ তৈরি হবে, কর্মসংস্থানের পথ খুলবে, আয় বাড়বে, যা আরও বেশি খরচ করার রাস্তা চওড়া করবে।’’ তাঁর বার্তা, কর ছাঁটাই অর্থনীতির ভিতকে পোক্ত করবে। বিশ্বের কোনও শক্তি আন্তর্জাতিক মহাশক্তি হিসেবে ভারতের উত্থান ঠেকাতে পারবে না।
অর্থনীতিবিদ অজিতাভ রায়চৌধুরীর বক্তব্য, সরকার আর্জি জানালেও সব জিনিসের দাম কমা মুশকিল। উৎপাদনকারী কাঁচামালের দর চড়া বলে দাবি করতে পারেন। তবে সংস্থাগুলি যদি বুঝতে পারে দাম কমালে চাহিদা বাড়বে এবং সে ক্ষেত্রে বেশি বিক্রি করে তারা মুনাফা বাড়াতে পারবে, তা হলে তারা অবশ্যই সেই পথে হাঁটবে। অর্থাৎ বাজারই শেষ কথা বলবে। আর কেউ নয়।
এক ঝলকে
২২ সেপ্টেম্বর জিএসটির নতুন কাঠামো চালু হচ্ছে।
৩৭৫ ধরনের পণ্য ও পরিষেবার কর কমবে।
সরকারের নির্দেশ, এই কর হ্রাসের পূর্ণ সুবিধা ক্রেতাদের দিতে হবে।
যদিও এই সংক্রান্ত নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের অস্তিত্ব এখন আর নেই।
কেন্দ্রের দাবি, তারাই পরিস্থিতি নজরে রাখবে।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)