রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যেই ইজ়রায়েল-হামাস সংঘাতে পশ্চিম এশিয়া তেতে ওঠার পরে বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। তার উপর দামকে ঠেলে তুলতে তেলের জোগান ছাঁটে সৌদি আরব। ব্রেন্ট ক্রুডের ব্যারেল ৯৬-৯৭ ডলার (এই দফায় সর্বোচ্চ) ছোঁয়। সেখান থেকে তা ফের নেমেছে। শুক্রবার এক সময় ঠেকেছে ৭৭ ডলারে। তার পরেই দেশ জুড়ে ফের উঠেছে প্রশ্ন, এ বার অন্তত আমদানি খরচ কমার সুবিধা পেট্রল-ডিজ়েলের দাম কমিয়ে ভারতের সাধারণ মানুষের দরজায় পৌঁছে দেবে তো আইওসি, এইচপিসি, বিপিসি-র মতো সংস্থাগুলি? বিরোধী শিবির-সহ একাংশের অবশ্য দাবি, লোকসভা ভোটের মুখে নাম কেনার এমন সুযোগ ছাড়বে না মোদী সরকার। রান্নার গ্যাসের দাম বিপুল বাড়ানোর পরে সামান্য কমিয়ে যখন ভোট বাক্সে ফায়দা তুলতে চেয়েছে, তখন তেলেও সেই পথ নেবে। তবে তা কতটুকু এবং তাতে আমজনতার আদৌ উপকার হবে কি না, সন্দেহ থাকছেই।
সূত্রের খবর, আমেরিকার নজিরবিহীন তেল উৎপাদন এবং মজুত বিশ্ব বাজারে চাহিদা কমার আশঙ্কা তৈরি করেছে। অশোধিত তেলের দর কমার প্রধান কারণ সেটাই। তবে ভারতে অভিযোগ, বিশ্ব বাজারে জ্বালানি চড়লে দেশে তার প্রভাব যত দ্রুত পড়ে, উল্টোটা ঘটলে হয় না।
সম্প্রতি গৃহস্থের রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার ২০০ টাকা কমিয়েছে কেন্দ্র। কলকাতায় তা ১১২৯ টাকা থেকে নেমেছে ৯২৯ টাকায়। তবে একাংশের দাবি, এই দামও সাধারণ রোজগেরেদের পক্ষে অনেক বেশি। তেলেও তার পুনরাবৃত্তি হবে কি না, চর্চা দেশে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিবহণ জ্বালানির বর্ধিত খরচ মূল্যবৃদ্ধির অন্যতম কারণ। কলকাতায় আইওসি-র পাম্পে পেট্রলের লিটার ১০৬.০৩ টাকা। ডিজ়েল ৯২.৭৬ টাকা। বিশ্ব বাজারে তেল এক সময় ৭০-৭৫ ডলারে নামলেও, দেশে তেল দীর্ঘ দিন হল অপরিবর্তিত। অথচ তেল সংস্থাগুলি মুনাফায় ফিরেছে। চড়া শুল্ক থেকে রাজকোষ ভরছে কেন্দ্র। বিরোধীদের দাবি, জ্বালানির দামে ক্ষুব্ধ মধ্যবিত্ত ভোটব্যাঙ্কের মন জিততে মোদীরা গ্যাসের দাম কমিয়েছেন। তেলেও সেই ফায়দা লোটা হবে। বিশ্ব বাজারের দাম সেই সুযোগই আরও চওড়া করল।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)