প্রতীকী ছবি।
গত শুক্রবার পড়লেও, সেনসেক্স এখনও বসে ৪০ হাজারের অনেকটা ওপরে। মনে হতে পারে, বুল-রা দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বাজারে। কিন্তু আসল ছবিটা আলাদা। বরং তলায় তলায় দুর্বলতা বেশ প্রকট। অর্থনীতি যে এখনও ঝিমিয়ে, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। মূল্যায়ন সংস্থা মুডি’জ়ও তা স্পষ্ট করেছে, ভারতের অর্থনীতি সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে স্থিতিশীল থেকে নেতিবাচকে নামিয়ে এনে। শুক্রবার সেই রিপোর্ট সামনে আসার পরে সদ্য ১২,০০০ পেরোনো নিফ্টি ১০৪ পয়েন্ট খুইয়ে নামে ১১,৯০৮ অঙ্কে। সেনসেক্সের মেদ ঝরে ৩৩০ পয়েন্ট।
মুডি’জ় দৃষ্টিভঙ্গির ধাপ নামিয়েছে এ দেশের ২১টি সংস্থা সম্পর্কেও। এর মধ্যে আছে টিসিএস, ইনফোসিস, ইন্ডিয়ান অয়েল, ভারত পেট্রোলিয়াম, স্টেট ব্যাঙ্ক, এইচডিএফসি ব্যাঙ্ক, আইআরএফসি, হাডকো, এনটিপিসি, ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি, গ্যাস অথরিটি, পাওয়ার গ্রিডের মতো সংস্থা। মুডি’জ়ের সঙ্গে কেন্দ্র অবশ্য একমত নয়। অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের মতে, অর্থনীতি এখনও যথেষ্ট সুঠাম।
এ দিকে, যথেষ্ট প্রচার ছাড়াই জমায় সুদ কমিয়ে চলেছে ব্যাঙ্ক এবং আর্থিক সংস্থাগুলি। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের মেয়াদি জমায় সর্বোচ্চ সুদ ঘোরাফেরা করছে ৬.৫ শতাংশের আশেপাশে। জমায় সুদ ছাঁটাই করেছে কিছু গৃহঋণ সংস্থাও। এতে বিপাকে পড়েছেন সুদ-নির্ভর বয়স্ক মানুষেরা। তবে সুখের কথা, সরকারি কিছু প্রকল্পে সুদ এখনও তুলনায় অনেকটা ভাল। আর এখানেই ব্যাঙ্কগুলির আপত্তি। এরা কেন্দ্রকে চাপে রাখছে সুদ ছাঁটার জন্য। ফলে কিছু স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে সুদ কমার আশঙ্কা থাকবে ১ জানুয়ারি থেকে। এ ছাড়া ৮% সুদযুক্ত প্রধানমন্ত্রী বয়োবন্দনা প্রকল্পটি বন্ধ হচ্ছে ৩১ মার্চ। অর্থাৎ যাঁদের হাতে লগ্নিযোগ্য তহবিল আছে, তাঁরা সুদ কমার আগেই এই সব প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারেন।
ক’দিনের মধ্যে বাজারে ছাড়া হতে পারে কিছু বন্ড। সরকারি সংস্থা পাওয়ার ফিনান্স কর্পোরেশন ও রুরাল ইলেক্ট্রিসিটি কর্পোরেশন এ জন্য তৈরি হচ্ছে বলে খবর। প্রতি ইস্যুর অঙ্ক হতে পারে ১০,০০০ কোটি টাকা। আশা, করযোগ্য এই বন্ডে খুচরো লগ্নিকারীরা সুদ পেতে পারেন ৭.৭০%।
সূচক কোথায়
• সেনসেক্স দাঁড়িয়ে ৪০,৩২৪ অঙ্কে।
• গত বৃহস্পতিবার সূচকটি প্রথম বার পৌঁছেছিল ৪০,৬৫৪-এ।
• ওই দিন নিফ্টিও পেরিয়ে যায় ১২,০০০ অঙ্ক।
• শুক্রবার ১০৪ পয়েন্ট পড়ে থামে ১১,৯০৮-এ।
তবুও চিন্তা কেন
• ৩০টি শেয়ার সংবলিত সেনসেক্স বৃহস্পতিবার রেকর্ড উচ্চতা ছুঁলেও ছোট-মাঝারি অনেক সংস্থার শেয়ারের দাম তেমন ভাবে বাড়েনি।
• সব শেয়ার ভিত্তিক (ইকুইটি) ফান্ডের ন্যাভই যে বেড়েছে, তা নয়।
• আন্তর্জাতিক মূল্যায়ন সংস্থা মুডি’জ় স্পষ্ট জানিয়েছে, ভারতীয় অর্থনীতির দুর্বলতা বেশ প্রকট। তা নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গি স্থিতিশীল থেকে নেতিবাচক করেছে তারা।
• মুডি’জ়ের রিপোর্টে দেশের আর্থিক ও পরিকাঠামো-সহ ২১টি সংস্থার দৃষ্টিভঙ্গির স্তরও নামানো হয়েছে। আছে বেশ কিছু বড় সংস্থা।
• জাপানি ব্রোকারেজ সংস্থা নোমুরা এই অর্থবর্ষে বৃদ্ধির পূর্বাভাস ৫.৭% থেকে নামিয়েছে ৪.৯ শতাংশে।
ত্রৈমাসিক ফল প্রকাশের মরসুম শেষের দিকে। গত সপ্তাহে দেখা গিয়েছে, ৩৫% লাভ কমেছে গেলের। তা বেড়েছে ব্যাঙ্ক অব বরোদা, কানাড়া ব্যাঙ্কের। আরও বেড়েছে এলাহাবাদ ব্যাঙ্কের লোকসান। তবে লাভে ফিরেছে পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক। ২২% ক্ষতি কমেছে ইউকো ব্যাঙ্কের। এক্সাইড ইন্ডাস্ট্রিজের নিট লাভ বেড়েছে ১৬%, প্রায় একই হারে ইমামিরও। মুনাফা দেখেছে টাটা স্টিল, বিড়লা কর্প।
(মতামত ব্যক্তিগত)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy