টয়োটা কির্লোস্কর মোটরের বেঙ্গালুরু কারখানার দরজা ফের খুলছে আগামী ২৪ মার্চ।
বৃহস্পতিবার সংস্থা এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কর্নাটক সরকার, সংস্থা কর্তৃপক্ষ ও শ্রমিক ইউনিয়নের মধ্যে বৈঠকে অবশেষে অচলাবস্থা কেটেছে। ফলে বিদাদির দু’টি কারখানায় লক-আউট ২৪ মার্চ থেকেই তুলে নিচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।
ডেপুটি শ্রম কমিশনারকে সংস্থা জানিয়ে দিয়েছে, কারখানার বেশির ভাগ কর্মীই আইন মেনে চলেন। তাঁদের স্বার্থের কথা বিবেচনা করেই ১৬ মার্চ থেকে ঘোষণা করা লক-আউট তুলে নেওয়া হচ্ছে। তবে আইন-শৃঙ্খলা বজায় রাখার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুচলেকায় সই করে তবেই কাজে ফিরতে হবে কর্মীদের। কারখানা খোলার ব্যাপারে সাহায্য করার জন্য কর্নাটক সরকারকে ধন্যবদ জানিয়েছেন সংস্থা কর্তৃপক্ষ।
বেতন সংশোধন-সহ শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দীর্ঘ ১০ মাস ধরে আলোচনা চললেও কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। এর পর শ্রমিকদের বিরুদ্ধে ইচ্ছাকৃত ভাবে গাড়ি তৈরিতে বাধা দেওয়া ও অশান্তির পরিবেশ সৃষ্টির অভিযোগে গত রবিবার কারখানায় লক-আউট ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। চূড়ান্ত ‘অভব্য’ আচরণের অভিযোগে কিছু শ্রমিকের বিরুদ্ধে তদন্ত হওয়ার কথা ছিল। তাঁদের এই সপ্তাহের গোড়ায় সাসপেন্ড করা হয়। শ্রমিক ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট প্রসন্ন কুমারের অবশ্য দাবি, সাসপেন্ড হওয়া কোনও শ্রমিকই চিঠি পাননি। টয়োটা কির্লোস্কর ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আর সতীশ জানান, কাজে ফেরার শর্তগুলি তাঁরা শনিবারের বৈঠকে খতিয়ে দেখবেন।
প্রসন্ন কুমার জানিয়েছেন, তাঁরা শ্রম দফতরের ডেপুটি কমিশনার ও অতিরিক্ত কমিশনারের সঙ্গে বৈঠকে লক-আউট ও শ্রমিকদের সাসপেনশন তোলার দাবি জানান। অতিরিক্ত শ্রম কমিশনার জে টি জিঙ্কলাপ্পা এ দিন লক-আউট তোলার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষের সম্মতির কথা জানান। তবে বেতন বৃদ্ধি নিয়ে কোনও রফাসূত্র মিলেছে কি না, তার উত্তরে তিনি বলেন, “লক-আউট তোলাই অগ্রাধিকার ছিল। বাদবাকি সমস্যা পরে মিটিয়ে নেওয়া যাবে।”
এর আগে ২০০৬ সালেও একবার কারখানায় লক-আউট ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। কিছু শ্রমিককে বরখাস্ত ও সাসপেন্ড করা নিয়ে সে বার গোলমালের সূত্রপাত হয়। এ বারও কারখানায় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কায় লক-আউট করে সংস্থা।
বেঙ্গালুরুর অদূরে বিদাদিতে টয়োটা-র কারখানাটি দুটি ভাগে বিভক্ত। উত্পাদন ক্ষমতা বার্ষিক ৩.১০ লক্ষ। সেখানে দৈনিক গড়ে প্রায় ৫৭০টি গাড়ি তৈরি হয়। তবে লক-আউটের কারণে লোকসানের অঙ্ক নিয়ে মুখ খুলতে রাজি হয়নি সংস্থা। কারখানায় মোট কর্মী সংখ্যা সব মিলিয়ে ৬৪০০-রও বেশি।