অব্যাহত রয়েছে শেয়ার বাজারের পতন। বৃহস্পতিবারও সেনসেক্স পড়েছে ২৭৬.৩৩ পয়েন্ট। এ নিয়ে গত তিন দিনের লেনদেনে সূচকের পতন হল ৭৩৮ পয়েন্টেরও বেশি। এই দিন সূচক এসে থেমেছে ২৬,৪৬৮.৩৬ অঙ্কে। গত এক মাসে সূচক এত নীচে আগে নামেনি।
এ দিন টাকার দামও পড়েছে অনেকটাই। ডলার লেনদেনের ক্ষেত্রে ওই দাম ৩৮ পয়সা পড়ে যাওয়ার ফলে বাজার বন্ধের সময়ে প্রতি ডলারের দাম দাঁড়িয়েছে ৬১.৩৪ টাকা।
আগের দিনের থেকে উল্টো পথে হেঁটে এ দিন কিন্তু লেনদেনের শুরুতে শেয়ার দর বাড়ছিল। ফলে এক সময়ে সেনসেক্স উঠে গিয়েছিল ২৬,৮১৪.২ অঙ্কে। কিন্তু পরের দিকে হু হু করে নীচে নামতে থাকে সূচকের পারা। সারা দিনের লেনদেনে সেনসেক্স ওঠা-নামা করেছে প্রায় ৪৬৫ পয়েন্ট।
বিশেষ কোনও শিল্প ক্ষেত্রের সংস্থা নয়, এ দিন সার্বিক ভাবেই বিভিন্ন শিল্পের শেয়ার দরে পতন লক্ষ করা গিয়েছে। এমনকী ছোট ও মাঝারি মূলধনের সংস্থার শেয়ার দরেও পতন হয়েছে। হালে যে-সব সংস্থার শেয়ার দর দ্রুত বাড়ছিল, সেই গাড়ি তৈরির সংস্থা, নির্মাণ, যন্ত্রপাতি তৈরি এবং ভোগ্যপণ্য সংস্থার শেয়ার দরও পড়েছে।
তাৎক্ষণিক ভাবে শেয়ার বাজারের এই পতনের মূলে রয়েছে ২১৪টি সংস্থাকে দেওয়া কয়লা ব্লক বাতিল করা সংক্রান্ত সুপ্রিম কোর্টের রায়। তবে বাজার বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনেকেই মনে করছেন, লোকসভা নির্বাচনের আগে থেকে শুরু করে গত কয়েক মাস ধরে টানা বেড়েছে শেয়ার বাজার। এই বৃদ্ধির পিছনে কিন্তু শেয়ার বাজারের মৌলিক বিষয়গুলির কোনও অবদান ছিল না। কারণ, দেশের আর্থিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে যে-সব কারণে শেয়ার বাজার বাড়ে, সেগুলির কোনও পরিবর্তনই হয়নি। বাজার বেড়েছে শুধু নতুন সরকারের কাছে প্রত্যাশার উপর ভিত্তি করেই।
কিন্তু লগ্নিকারীদের ওই সব প্রত্যাশা পূরণের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কিছুই এখনও ঘটেনি। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনেকেরই আশঙ্কা, ভারতের শেয়ার বাজারের এই রমরমা মূলত যাদের দৌলতে, অর্থাৎ বিশেষ করে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলি কিছুটা আশাহত হতে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞদের এই আশঙ্কা যে-অমূলক নয়, তার প্রমাণও ইতিমধ্যে মিলেছে। ওই সব সংস্থা ভারতের বাজারে গত দু’দিনেই প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার শেয়ার বিক্রি করেছে।
কয়েক মাস ধরে ওই সব সংস্থা ছিল বাজারে ক্রেতার ভূমিকায়। গত তিন দিন ধরে তারাই কিন্তু মুনাফার টাকা তুলে নিতে এক নাগাড়ে শেয়ার বিক্রি করে চলেছে। তবে যে-সব লগ্নিকারীর হয়ে ওই সব আর্থিক সংস্থা শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করে, বছরের শেষে তাদের টাকা ফেরত দেওয়ার একটা চাপ থাকে ওই ধরনের সংস্থার উপর। হাতের শেয়ার বিক্রি করে ওই টাকার সংস্থানই তারা সাধারণত করে থাকে। বাজার বিশেষজ্ঞদের ধারণা, হালে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থাগুলির শেয়ার বিক্রির অন্যতম কারণ এটাও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy