আর পাঁচটা কয়েদির মতোই তিহাড় জেলে প্রথম রাত্তিরটা কাটল সহারা কর্তা সুব্রত রায়ের।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অমান্য এবং লগ্নিকারীদের টাকা ফেরানোর প্রসঙ্গে কোনও সন্তোষজনক জবাব দিতে না পারায় গত কাল বিচারপতি কে এস রাধাকৃষ্ণন এবং জে এস কেহরার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ সহারা কর্তাকে সাত দিনের জেল হাজতে পাঠায়। রায় ঘোষণার পর রাত আটটা নাগাদ সুব্রত রায়কে নিয়ে আসা হয় তিহাড় জেলে। চার নম্বর ওয়ার্ডের তিন নম্বর কারাগারে রাখা হয় তাঁকে। শাস্তিপ্রাপ্ত অপরাধী হিসেবে এই প্রথম গোটা একটা রাত্তির জেলে কাটল তাঁর। প্রসঙ্গত, তিহাড়ের যে সেলটিতে রাখা হয়েছে সুব্রত রায়কে সেখানেই বন্দি রয়েছেন টু জি স্পেকট্রাম কাণ্ডে জড়িত অন্য অভিযুক্তরাও।
গত কাল রায় ঘোষণার পরে রব উঠেছিল তিহাড় জেলে হয়তো মাটিতেই শুতে হবে সহারা-সাম্রাজ্যের প্রধানকে। তবে সুব্রত রায় সেখানে পৌঁছনোর পর জেল কতৃর্পক্ষ জানতে পারেন তিনি ষাটোর্ধ্ব। আর তাই জেলের নিয়ম মতোই একটি খাটের ব্যবস্থা করা হয় তাঁর জন্য। জেলের চিকিৎসকেরা তাঁর পরীক্ষা করেন। জানানো হয়, শারীরিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছেন সুব্রত রায়। রাতে জেলেরই খাবার খান তিনি। ৪০০ গ্রাম ময়দার চাপাটি, ২৫০ গ্রাম সব্জি এবং ৯০ গ্রাম ডাল। জেলের মুখপাত্র সুনীল গুপ্ত জানিয়েছেন, রাতে নির্বিঘ্নেই ঘুমিয়েছেন সহারা কর্তা।
বুধবার সকালে তিহাড়ে সুব্রত রায়ের সঙ্গে দেখা করতে আসেন তাঁর ছেলে ও ভাই। জেল সূত্রের খবর, বেলা গড়ালে সহারা কর্তা কেমন আছেন তা দেখে যান সংস্থার এক উচ্চপদস্থ মহিলা অফিসারও। বাইরের হাল হকিকত জেনে নিতে জেলে বসেই এ দিন খবরের কাগজ পড়েছেন তিনি। চা, পাউরুটি দিয়ে সেরেছেন প্রাতরাশ। দুপুরে জেলের ভাত-ডাল খেয়েছেন। পরে জেলের ক্যানটিন থেকে খাবার আনিয়েও খেয়েছেন। জেল কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, বাকি বন্দিদের মতোই তিহাড়ে দিন কাটবে সুব্রত রায়ের। কোনও বিশেষ সুযোগ-সুবিধা পাবেন না তিনি। তবে গত ২৪ ঘণ্টায় সুব্রত রায় নিজেও কোনও অন্যায্য দাবি করেননি বলেও জানান তাঁরা।
এ দিকে সুব্রত রায়ের মুখে কালি ছেটানোর ঘটনায় নিজে থেকেই উদ্যেগী হয়ে বুধবার অভিযুক্ত মনোজ শর্মার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার নোটিস জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে মনোজকে কোর্টের নোটিসের জবাব দিতে হবে। এ দিন এই রায় দিয়েছে বিচারপতি আর এম লোধার নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। পাশাপাশি মনোজ শর্মা আদৌ মানসিক ভাবে সুস্থ কি না তা খতিয়ে দেখতে অ্যাটর্নি জেনারেল জি ই বাহনবতীকে নির্দেশও দিয়েছে আদালত। আগামী ২৪ মার্চ মামলার পরবর্তী শুনানি।
বুধবারই দিল্লির ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয় মনোজকে। বিচারককে পুলিশ জানায়, মনোজের বিরুদ্ধে আরও কিছু মামলা চলছে। মানসিক ভাবে সুস্থ নন তিনি। এর আগে ২০০৫-৬ সালে গ্বালিয়রের এসডিএমকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। ২০১০ সালে কংগ্রেস নেতা সুরেশ কলমডীকে লক্ষ্য করে জুতো ছোড়ার অভিযোগও ওঠে মনোজের বিরুদ্ধে। বিচারক তাঁর জামিনের আবেদন মেনে নেন। তবে কোনও জামিনদার না মেলায় আগামী ১১ মার্চ পর্যন্ত মনোজের বিচারবিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy