স্মার্ট ফোন থেকে ট্যাবলেট। সুগন্ধি থেকে রান্নার সরঞ্জাম। সোমবার এই সমস্ত পণ্যে চোখ কপালে তোলার মতো ছাড়ের বিজ্ঞাপন সপ্তাহ দুয়েক আগে থেকেই দিতে শুরু করেছিল ফ্লিপকার্ট। কিন্তু সেই ছাড়ের সুবিধা নিতে এ দিন অনলাইন রিটেল সংস্থাটির ওয়েবসাইটে হুমড়ি খেয়ে পড়া ভিড়ের অনেকেই কিছুটা হতাশ। কারও অভিযোগ, ক্রেতাদের প্রবল ভিড় সামাল দিতে না-পেরে শ্লথ হয়ে গিয়েছে সাইট। একটা সময় কার্যত বসেই গিয়েছিল তা। দেখা দিয়েছে প্রযুক্তিগত ত্রুটি। আবার কারও অভিযোগ, জিনিস কিনতে গিয়ে তাঁরা দেখেছেন যে, দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে সংস্থা। কেউ আবার অভিযোগ তুলেছেন, জিনিস কেনার টাকা দিয়েও তা কেনার নিশ্চয়তা (কনফার্মেশন) না পাওয়ার।
অবশ্য এমন হাজারো অভিযোগে এ দিন ফেসবুক, টুইটার-সহ সোশ্যাল মিডিয়া ছয়লাপ হলেও, ফ্লিপকার্টের দাবি, ক্রেতাদের কাছ থেকে অবিশ্বাস্য সাড়া পেয়েছে তারা। মাত্র ১০ ঘণ্টার মধ্যে বিক্রি হয়েছে ১০ কোটি ডলারের (৬০০ কোটি টাকার বেশি) পণ্যসামগ্রী। এ দিন এক বিবৃতিতে সংস্থার দুই কর্ণধার সচিন ও বিন্নি বনসল জানিয়েছেন, এ দিন ওয়েবসাইটে প্রচণ্ড ভিড় হয়েছে ঠিকই। কিন্তু বিভিন্ন প্রযুক্তিগত সমস্যা আটকে তা সামাল দিতে লাগাতার কাজ করে গিয়েছেন সংস্থার ইঞ্জিনিয়াররা।
ভারতের বিশাল বাজার ধরতে প্রতিযোগিতা ক্রমশ তীব্র হচ্ছে অনলাইন রিটেল সংস্থাগুলির মধ্যে। এ দেশে আরও ২০০ কোটি ডলার (১২ হাজার কোটি টাকারও বেশি) লগ্নি করার কথা বলেছে বিশ্বের বৃহত্তম ই-কমার্স বহুজাতিক অ্যামাজন। সম্প্রতি এ দেশে এসেছিলেন সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা এবং কর্ণধার জেফ বেজোস। পুরোদস্তুর মাঠে নেমেছে আর এক সংস্থা স্ন্যাপডিলও। এমনকী এই উৎসবের মরসুমে ত্রেতা টানতে একই সঙ্গে দামের তীব্র লড়াইয়েও নেমেছে তিন সংস্থা। দীপাবলি উপলক্ষে তিন দিন বিভিন্ন ছাড়ের কথা আগেই ঘোষণা করেছে অ্যামাজন। ফ্লিপকার্টের দাবি, এ দিন তাদের বিক্রি ছাড়িয়েছে ৬০০ কোটি টাকা। আর স্ন্যাপডিলের দাবি অনুযায়ী, এ দিনই প্রতি মিনিটে অন্তত এক কোটি টাকার পণ্য বিকিয়েছে তাদের সাইট থেকে।
অবশ্য ই-কমার্স সংস্থাগুলির এই বিপুল ছাড়ের বহরে আতঙ্কিত সাধারণ ব্যবসায়ীরা। দেশে ব্যবসায়ীদের সংগঠন কনফেডারেশন অব অল ইন্ডিয়া ট্রেডার্স (সিএআইটি) জানিয়েছে, গত তিন দিন ধরে ওই সমস্ত সংস্থা যে ভাবে বিভিন্ন পণ্যে ২০-৭০% ছাড় দিয়ে চলেছে, সে বিষয়ে কেন্দ্রীয় শিল্প ও বাণিজ্য মন্ত্রকের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চায় তারা। চায়, অনলাইন রিটেলের উপর নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ কড়া করুক কেন্দ্র। তাদের দাবি, ই-কমার্স সংস্থার তুলনায় বেশি খরচে জিনিস জোগাড় করতে হয় ব্যবসায়ীদের। ফলে ওই সব জিনিসই তুলনায় বেশি দরে বেচতে বাধ্য হন তাঁরা। তাই কেন্দ্র বিষয়টিতে নজর না-দিলে, ভবিষ্যতে সাধারণ ব্যবসায়ীরা মার খেতে পারেন বলে তাঁদের আশঙ্কা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy