Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মূল্যবৃদ্ধি আবার মাথা তোলায় শঙ্কিত শিল্পমহল

মাঝে তিন মাস কিছুটা ক্ষান্ত দেওয়ার পর ফের মাথা তুলল মূল্যবৃদ্ধি। মঙ্গলবার কেন্দ্রের প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত মার্চে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৫.৭%। পূর্বাভাসের (৫.৩%) তুলনায় বেশি তো বটেই, তিন মাসের মধ্যেও তা সর্বোচ্চ। তার উপর এ বার একা এতে রক্ষে নেই, সঙ্গে দোসর খুচরো মূল্যস্ফীতিও। কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য অনুযায়ী, মার্চে খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধিও পৌঁছে গিয়েছে ৮.৩১ শতাংশে।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৬ এপ্রিল ২০১৪ ০৩:৪৬
Share: Save:

মাঝে তিন মাস কিছুটা ক্ষান্ত দেওয়ার পর ফের মাথা তুলল মূল্যবৃদ্ধি। মঙ্গলবার কেন্দ্রের প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত মার্চে সার্বিক মূল্যবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৫.৭%। পূর্বাভাসের (৫.৩%) তুলনায় বেশি তো বটেই, তিন মাসের মধ্যেও তা সর্বোচ্চ।

তার উপর এ বার একা এতে রক্ষে নেই, সঙ্গে দোসর খুচরো মূল্যস্ফীতিও। কেন্দ্রীয় সরকারের তথ্য অনুযায়ী, মার্চে খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধিও পৌঁছে গিয়েছে ৮.৩১ শতাংশে। আগের মাসের (ফেব্রুয়ারিতে ৮.০৩%) তুলনায় যা খানিকটা বেশি। এবং এই দুই ক্ষেত্রেই মূল্যবৃদ্ধির সূচককে ঠেলে তুলেছে খাদ্যপণ্যের দাম বাড়া। বিশেষত ফল, সব্জির দর অনেকখানি বেড়ে যাওয়াই ইন্ধন জুগিয়েছে এই উত্থানে।

মূল্যবৃদ্ধির সাপ ফের ফণা তোলায় স্বাভাবিক ভাবেই এ দিন আশঙ্কা প্রকাশ করেছে শিল্পমহল। গত শুক্রবার কেন্দ্রের প্রকাশিত পরিসংখ্যানে দেশে শিল্পোৎপাদন সরাসরি কমে যাওয়ায় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সুদ কমানোর পথ অবিলম্বে প্রশস্ত করা উচিত বলে জোরালো সওয়াল করছিল তারা। সেই পরিস্থিতিতে মূল্যবৃদ্ধির ফের মাথা তোলা তাদের কাছে বড়সড় ধাক্কা। কারণ, বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের (বিশেষত খাদ্যপণ্য) দাম আকাশছোঁয়া হলে, পরের ঋ

ণনীতিতে (৩ জুন) শীর্ষ ব্যাঙ্কের সুদ হ্রাসের সম্ভাবনা নিতান্তই ক্ষীণ। বরং সম্ভাবনা চড়া সুদের জমানাই বজায় থাকার। আর সেই আশঙ্কা যে শিল্পমহল করছে, তা এ দিন স্পষ্ট বণিকসভাগুলির বিবৃতি থেকেই।

ফিকি প্রেসিডেন্ট সিদ্ধার্থ বিড়লার মতে, খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম টানা সম্ভব না-হলে, দেশের আর্থিক বৃদ্ধির উপরে তার দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব পড়তে বাধ্য। তাই পরের বার ঋ

ণনীতি ঘোষণার সময় মূল্যবৃদ্ধির চড়া হারের পাশাপাশি বৃদ্ধির কথাও মাথায় রাখা উচিত শীর্ষ ব্যাঙ্কের। বিশেষত যখন দ্রুত পায়ের তলা থেকে মাটি সরে যাচ্ছে শিল্পের। সমস্যা হচ্ছে যথেষ্ট সংখ্যায় কাজের সুযোগ তৈরিতেও।

সিআইআইয়ের ডিরেক্টর জেনারেল চন্দ্রজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, খাদ্যপণ্যের এই নাছোড় মূল্যবৃদ্ধির মূল কারণ তার জোগানে ঘাটতি। তাই সবচেয়ে আগে সেই সমস্যা সমাধান করা জরুরি। প্রয়োজন তার জন্য সংশ্লিষ্ট নীতির সংস্কার। কিন্তু সে সবের পরিবর্তে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক যদি মূল্যস্ফীতির অসুর দমনে ফের শুধু সেই সুদ বাড়ানোর দাওয়াই প্রয়োগ করে, তবে তা দুর্ভাগ্যজনক হবে বলে মনে করেন তিনি।

একই মতের শরিক অ্যাসোচ্যামের সেক্রেটারি জেনারেল ডি এস রাওয়াত এবং পিএইচডি চেম্বারের প্রেসিডেন্ট শরদ জয়পুরিয়ারও। তাঁরাও মূল্যবৃদ্ধিতে রাশ টানতে চড়া সুদের জমানা চালিয়ে যাওয়ার বিরোধী। এমনকী দেশের অর্থনীতির হাল ফেরাতে এ দিন কেন্দ্রের পরবর্তী সরকারের কাছে একগুচ্ছ নীতি প্রণয়নের আর্জিও জানিয়ে রেখেছে অ্যাসোচ্যাম। যার মধ্যে রয়েছে, রাজ্যগুলির মধ্যে কৃষিপণ্যের অবাধ বেচা-কেনা, উৎপাদন শিল্পে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বহু ব্র্যান্ডের পণ্যের খুচরো ব্যবসায় বিদেশি পুঁজিতে সায়, কর্মসংস্থান কর্মসূচিকে স্থায়ী সম্পদ তৈরির কাজে ব্যবহার ইত্যাদি। ভারতে পাইকারি মূল্য সূচকের ভিত্তিতে মাপা হয় সার্বিক মূল্যবৃদ্ধি। আর খুচরো বাজারের দামের ভিত্তিতে দেখা হয় খুচরো বা রিটেল মূল্যবৃদ্ধি। এ দিন প্রকাশিত মার্চের পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে দুই ক্ষেত্রেই মূল্যস্ফীতি ফের মাথাচাড়া দেওয়ার মূল কারণ ফল, সব্জির মতো খাদ্যপণ্যের দাম বাড়া। দর বেড়েছে আলু, পেঁয়াজ, মাছ, মাংস, ডিমেরও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

inflation industry
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE