যে রকম আশা করা হয়েছিল, ঠিক তেমনটা ঘটল না। ফেব্রুয়ারিতে ৫.৩৭% বাড়ল খুচরো বাজারে মুল্যবৃদ্ধির হার। এর আগের দু’মাসেও তা বেড়েছিল। ফলে আগামী দিনে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের আরও সুদ ছাঁটাইয়ের আশা বেশ খানিকটা কমে গেল বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। বিশেষত যেখানে এ দিনই কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান জানিয়েছে যে, গত জানুয়ারিতে শিল্প বৃদ্ধির হার হয়েছে ২.৬%। সুতরাং শিল্প বৃদ্ধি তেমন পিছলে না-পড়ায় মূল্যবৃদ্ধিকে ফের মাথা তুলতে না-দেওয়াই শীর্ষ ব্যাঙ্কের অগ্রাধিকার হবে বলে আশঙ্কা করছে শিল্পমহল। তাই এ দিন দুই পরিসংখ্যান প্রকাশের পর তাদের আর্জি, মূল্যবৃদ্ধির এই সামান্য উত্থান যেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে প্রভাবিত না করে। অর্থনীতি চাঙ্গা করার স্বার্থে যেন জারি থাকে সুদ কমানোর রাস্তায় হাঁটা।
প্রসঙ্গত, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে আসায় আরবিআই গভর্নর রঘুরাম রাজন এর আগে দু’দফায় মোট ৫০ বেসিস পয়েন্ট সুদ কমিয়েছেন। সকলের আশা ছিল, আগামী ৭ এপ্রিল ঋণনীতি পর্যালোচনায় বসে ফের সুদ কমাতে পারে তারা। এমনকী এ দিনও অনেকে আশা প্রকাশ করেন যে, জুনের মধ্যে অন্তত আর এক বার সুদ কমানোর রাস্তায় হাঁটবেন রাজন। যদিও টানা তিন মাস মূল্যবৃদ্ধি চড়ার পর সেই সম্ভাবনা কতটা বাস্তবায়িত হবে তা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন অনেকে।
শিল্প বৃদ্ধির হার অবশ্য এ দিন তেমন নিরাশ করেনি। ডিসেম্বরের (সংশোধিত হার ৩.২৩%) তুলনায় তা নীচে ঠিকই। তবে গত বছরের একই সময় থাকা ১.১ শতাংশের পরিপ্রেক্ষিতে ভাল। যা দেখে উৎসাহী শিল্পমহলের অভিমত, বৃদ্ধির হার বাড়ানোর ক্ষেত্র প্রস্তুত করে লগ্নি-পরিবেশ যে ক্রমে চাঙ্গা হচ্ছে, এটি তারই ইঙ্গিত। মূলত কল-কারখানায় পণ্য তৈরি (৩.৩%) ও মূলধনী পণ্য উৎপাদন (১২.৮%) বাড়ার হাত ধরেই শিল্প বৃদ্ধির হার উঠেছে। যাকে সরকার ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উদ্যোগ ও বদলে যাওয়া পরিবেশের ফল বলে অভিহিত করেছে সিআইআই।
তবে অর্থনীতিকে পুরো ঘুরিয়ে দাঁড় করাতে চাহিদা আরও বাড়ানোর পক্ষে সওয়াল করেছেন অনেকে। তার জন্য পরিকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি সুদ কমাও জরুরি। আর শিল্প এখানেই সিঁদুরে মেঘ দেখছে।
আলোচ্য মাসে মূল্যবৃদ্ধির হার উপরে ওঠার জন্য মূলত দায়ী খাদ্যপণ্যের দাম বাড়া (৬.৭৯%)। জানুয়ারিতে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি বেড়েছিল ৫.১৯% (সংশোধিত)। শিল্পমহলের মতে, এ বার তা খুব সামান্যই উঠেছে। ফলে শুধু এতে উদ্বিগ্ন না-হয়ে অর্থনীতির স্বাস্থ্য ফেরাতে এখন অটল থাকা উচিত। উল্লেখ্য, খুচরো মূল্যবৃদ্ধি এখন হিসাব করা হচ্ছে ২০১২-কে ভিত্তিবর্ষ ধরে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy