Advertisement
E-Paper

স্পাইসজেটের পাশে দাঁড়াতে চায় কেন্দ্র

লোকসানে চলা স্পাইসজেটকে বাঁচিয়ে তোলায় সাহায্য করতে চায় কেন্দ্র। সূত্রের খবর, দু’বছর আগে কিংফিশার বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে বহু মানুষের চাকরি চলে গিয়েছিল। অনেক পরিবার এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। লোকসান হয়েছিল সেই সব যাত্রীর, যাঁরা আগে থেকে ওই সংস্থার টিকিট কেটে রেখেছিলেন। মারাত্মক ক্ষতি হয়েছিল এজেন্টদেরও। সে সময়ে কেন্দ্রের ইউপিএ সরকার কিংফিশারের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে আসেনি।

সুনন্দ ঘোষ

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৪ ০১:৫৮

লোকসানে চলা স্পাইসজেটকে বাঁচিয়ে তোলায় সাহায্য করতে চায় কেন্দ্র।

সূত্রের খবর, দু’বছর আগে কিংফিশার বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে বহু মানুষের চাকরি চলে গিয়েছিল। অনেক পরিবার এখনও ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। লোকসান হয়েছিল সেই সব যাত্রীর, যাঁরা আগে থেকে ওই সংস্থার টিকিট কেটে রেখেছিলেন। মারাত্মক ক্ষতি হয়েছিল এজেন্টদেরও। সে সময়ে কেন্দ্রের ইউপিএ সরকার কিংফিশারের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে আসেনি।

কিন্তু, সে পথে হাঁটতে নারাজ মোদী সরকার। বিমান মন্ত্রক সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে স্পাইসজেট বসে গেলে বহু মানুষ আবার পথে বসবেন, যার চাপ নিতে চাইছে না কেন্দ্র। অন্য দিকে, কিংফিশারের কর্মীরা যে-ভাবে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন, আশঙ্কা সে-পথে যেতে পারেন স্পাইসের কর্মীরাও। সেই চাপও শেষে কেন্দ্রের উপরেই পড়বে। ক্ষতি হবে ভাবমূর্তির। যা চাইছেন না স্বয়ং নরেন্দ্র মোদী। বিমান মন্ত্রকের সূত্র জানাচ্ছে, প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগত ভাবে চাইছেন এক বা একাধিক ব্যবসায়ী এগিয়ে আসুন স্পাইসকে বাঁচাতে।

যে-ট্রাভেল এজেন্টরা গত ক’দিন ধরে স্পাইসের টিকিট বিক্রি বন্ধ করেছিলেন, শুক্রবার তাঁরা ফের তা বেচতে শুরু করেছেন। ট্রাভেল এজেন্ট ফেডারেশন অব ইন্ডিয়ার পূর্বাঞ্চলের চেয়ারম্যান অনিল পঞ্জাবি এ দিন রাতে বলেন, “মনে হচ্ছে, ঘুরে দাঁড়ানোর মরিয়া চেষ্টা করছে স্পাইস। এ অবস্থায় আমাদেরও এগিয়ে আসা উচিত। সংস্থাকে শুধু বলা হয়েছে, যাত্রীদের অসুবিধা যাতে না-হয়, তা দেখতে। যাত্রী চাইলেই টিকিট বাতিল করে টাকা ফেরাতে হবে।”

সংশ্লিষ্ট সূত্রে খবর, অজয় সিংহ তিন বছর আগে স্পাইসের মালিক ছিলেন, যাঁর থেকে ওই সংস্থা কিনে নিয়েছিলেন দক্ষিণ ভারতের শিল্পোদ্যোগী কলানিধি মারান। এই পরিস্থিতিতে সিংহ নিজে এগিয়ে এসেছেন তাঁর পুরনো সংস্থাকে বাঁচাতে। শোনা যাচ্ছে, অম্বানী ও আদানি, এই দুই ব্যবসায়ী গোষ্ঠীকেও অনুরোধ করা হয়েছে টাকা ঢালতে। অজয় সিংহের ঘনিষ্ঠ মহল জানিয়েছে, লোকসানে চলা ওই সংস্থাকে বাঁচাতে কমপক্ষে ১২০০ কোটি টাকা লগ্নি জরুরি। অজয় সিংহের তরফে সেই পরিকল্পনাই নেওয়া হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে ওই লগ্নির ওপরে ভিত্তি করে সোমবার স্পাইসের পক্ষ থেকে নতুন আর্থিক পরিকল্পনাও ঘোষিত হতে পারে। মন্ত্রক সূত্রের খবর, ২০১০-এ স্পাইস ছেড়ে যাওয়া অজয় সিংহ গত এক সপ্তাহে বিষয়টি নিয়ে বিমান মন্ত্রকের একাধিক কর্তাব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেছেন। একই সঙ্গে অবশ্য প্রশ্ন উঠেছে, বাজারে ২ হাজার কোটি টাকা ধার থাকা স্পাইসজেট ১২০০ কোটি টাকা নিয়ে কী করবে?

স্পাইসের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা পরিকল্পনাহীন ভাবে ১৫টি বোম্বার্ডিয়ার বিমান কিনেই সমস্যায় পড়েছে। আচমকা এক লপ্তে সস্তায় কয়েক হাজার টিকিট বিক্রি করেও আখেরে লোকসানই গুনেছে। পাশাপাশি, বিশেষজ্ঞদের মতে, গত ৩ বছরে একের পর এক শীর্ষ কর্তা বদলেছে স্পাইস। কখনও সিইও, কখনও সিওও, কখনও বা সিএফও এনেছে নতুন নতুন মুখ। ফলে এক জনের সঙ্গে অন্য জনের সমন্বয়ের অভাব হয়েছে। এক জনের সিদ্ধান্তের উপরে অন্য জন সিদ্ধান্ত চাপিয়েছেন। ফলে ভুগতে হচ্ছে বিমান সংস্থাকেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, টাকা পেলেও একজন নির্দিষ্ট নেতা বাছতে হবে। এবং তাঁর হাতে ক্ষমতা দিতে হবে। নজর দিতে হবে খরচ কমানোর দিকেও।

সংস্থা সূত্রে খবর, শুক্রবার থেকেই উড়ানে খাবার দেওয়া বন্ধ হয়েছে। এ দিন কলকাতা থেকে সংস্থা কোনও খাবার তোলেনি। এমনিতেই এই উড়ানে বিনা পয়সায় খাবার দেওয়া হয় না। ইন্ডিগোর মতোই কিনে খেতে হয়। কিন্তু, বহু ক্ষেত্রে তোলা খাবারের পুরোটা বিক্রি হয় না, ফেলে দিতে হয়। লোকসান হয় সেখানেই।

শুক্রবার সংস্থা জানিয়েছে, সারা দিনে যে ২৩০টি উড়ান চালানোর কথা ছিল, তা তো চলেছেই, অতিরিক্ত উড়ান চালানোও শুরু হয়েছে। আপাতত গোয়া ও পোর্টব্লেয়ারে আটকে পড়া যাত্রীদের সুবিধার্থে অতিরিক্ত উড়ান চালানো হচ্ছে।

spicejet sunanda ghosh
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy